রবিউল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ঃ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু চার শিক্ষার্থীর চুরি হওয়া মোবাইল উদ্ধার করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ হোসেন হলের ছাত্রলীগ। হলে মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটে পরে হলের ছাত্রলীগ কর্মীরা উদ্ধারকার্য চালিয়ে সকালে শিক্ষার্থীদেরকে ফোন ফেরত দেয়।
এ প্রসঙ্গে মীর মোশাররফ হোসেন হলের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী সুজন জানান,গতকাল রাতে হল মসজিদে এশার নামাজ আদায় করে এক চোর নিজেকে পরীক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে একজন আবাসিক ছাত্রের রুমে থাকার ব্যবস্হা করে। তারপর রাত ১০ টায় ঐ রুম থেকে বের হয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত ভর্তি পরীক্ষার্থীদের সাথে কমনরুমে অবস্থান করে রাত ৩ টা নাগাত ৪ টি মোবাইল চুরি করে কৌশলে কমন রুম থেকে পালিয়ে যায়। ঘটনার খবর জানতে পেরে এম এইচ হল ছাত্রলীগের কর্মীরা দ্রুত হলের মূল ফটক আটকিয়ে খোজ-খবর নিয়ে চোরকে ফোনগুলোসহ ঐ রুম থেকে আটক করে। এম এইচ হল ছাত্রলীগের ভর্তি সহায়তার জন্য গঠিত মনিটরিং সেলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে মোবাইলগুলো মালিকদের হাতে বুঝিয়ে দেয়া হয় এবং চোর কে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হাতে সোপর্দ করা হয়। চোর মূলত ঢাকার একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনার্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী।
আটককৃত ব্যক্তির নাম আরিফ হোসেন (২৩)।তিনি পাবনার ঈশ্বরদীর বাসিন্দা, ঢাকায় একটি কলেজে স্নাতকে অধ্যয়ন করছেন। আটকের পর তাকে পুলিশে সোদর্প করা হয়।
মোবাইল ফিরে পেয়ে মহিউদ্দিন ইসলাম আবির ছাত্রলীগকে কৃজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আমার মোবাইলে ভর্তি পরীক্ষার প্রযোজনীয় কাগজপত্র ছিল। বিকাশে টাকাও ছিল। গতকাল রাতে মোবাইল চুরি হওয়ার বিষয়টি ভাইদের জানালে তারা আজ সকালে আমার হাতে মোবাইটি তুলে দেয়। আমি ভাইদের প্রতি সারা জীবন কৃতজ্ঞ থাকবো।
খুলনা থেকে পরীক্ষা দিতে আসা রুবাইয়াত হাসান রুপন বলেন, আমার শখের মোবাইল ফোনটি চুরি হলে আমি খুব ভয় পেয়ে যাই। আমি ভাবতে পারিনি মোবাইল ফোনটি ফিরে পাবো। মোবাইল ফিরে পেয়েই বাবা মার সাথে কথা বলি । আমি খুব খুশি।
এবিষয়ে লোক প্রশাসন বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আমিরুল ইসলাম সুজন বলেন, ঘটনার খবর জানতে পেরে হল ছাত্রলীগের কর্মীরা দ্রুত হলের মূল ফটক আটকিয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে চোরকে ফোনসহ আটক করে। ছাত্রলীগের ভর্তি সহায়তার জন্য গঠিত মনিটরিং সেলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে মোবাইলগুলো মালিকদের হাতে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
রসায়ন বিভাগের ৪৫ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী গৌতম কুমার দাস বলেন, একটি গ্রুপ ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে সক্রিয় রয়েছে। আমরা একজনকে হাতেনাতে ধরেছি। আরিফ ছাড়াও চক্রের অন্যান্য সদস্যদের ধরার জন্য ছাত্রলীগ তৎপর রয়েছে।
একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ৪৫ তম ব্যাচের মওদুদ আহমেদ মিরাজ বলেন, ভর্তি পরিক্ষার্থীরা মোবাইল চুরির অভিযোগ করলে ছাত্রলীগের কর্মীদের প্রচেষ্টায় চারটি মোবাইল উদ্ধার করি। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আমাদের ভরসায় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা হলে থাকে, তাদের বিপদে আপদে হল ছাত্রলীগ সবসময় পাশে থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্টার (নিরাপত্তা) সুদীপ্ত শাহিন বলেন, দোষীকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা হয়েছে।
মোবাইল উদ্ধারের আরোও যারা তৎপরতা দেখিয়েছেন তারা হলেন, ইংরেজি বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের সোহেল শাহ, গনিত বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের রাজউত্তম দাস,পরিসংখ্যান বিভাগের ৪৬ তম ব্যাচের আবু সাইদ, দর্শন বিভাগের ৪৭ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের ৪৭ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আহমেদ গালিব, আইন ও বিচার বিভাগের ৪৭ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইমরুল হাসান, রসায়ন বিভাগের ৪৭ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী খালিদ হাসান ধ্রুব।