১১:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিরাপত্তা ও সবুজ শক্তি খাতে সম্পর্ক বাড়াবে ভারত-যুক্তরাজ্য

বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা এবং সবুজ শক্তি খাতে সহযোগিতা জোরদারে সম্মত হয়েছে ভারত ও যুক্তরাজ্য। গত ৩১ মার্চ, বৃহস্পতিবার, নয়াদিল্লীতে এক বৈঠকে মিলিত হোন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস। এসময়, গতবছর মে মাসে দু দেশের মধ্যে গৃহীত রোডম্যাপ-২০৩০ এর অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন তারা।

পরবর্তীতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানা গিয়েছে, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা, অভিবাসন ও গতিশীলতা, শিক্ষা, এসএন্ডটি, জলবায়ু সহযোগিতা এবং সবুজ শক্তির অগ্রাধিকার খাতের অগ্রগতি পর্যালোচনা পূর্বক সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন দুই নেতা।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্য ও ভারতের সম্ভাব্য মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি আলোচনার অগ্রগতি নিয়েও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী। উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে এক্ষেত্রে উভয় দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে দুটো রাউন্ড টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অভিবাসন ও গতিশীলতা, ৫জি, এআই, কোয়ান্টামের মতো নতুন প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা, সাইবার, মহাকাশ এবং সামুদ্রিক ডোমেনে ক্রমবর্ধমান হুমকি মোকাবেলায় সক্ষমতা বাড়ানো সহ সম্ভাব্য প্রায় সকল ইস্যুতে নিজেদের মতবিনিময় করেছেন জয়শঙ্কর ও লিজ ট্রাস। একই সঙ্গে, উল্লিখিত প্রতিটি খাতে সম্পর্ক জোরদারে সম্মত হয়েছেন তারা।

এসময়, ভারতের মেক ইন ইন্ডিয়া ও স্বনির্ভর ভারত অভিযানে যুক্তরাজ্যের অংশ নেয়ার আগ্রহকে স্বাগত জানিয়েছেন জয়শঙ্কর। এ বিষয়ে পরবর্তীতে আরও গভীর পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করতে সম্মত হয়েছে উভয় পক্ষ।

তাছাড়া, ইন্দো-প্যাসিফিকের উপর কৌশলগত ফোকাস বজায় রাখা এবং আইপিওআই মেরিটাইম সিকিউরিটি পিলারের অধীনে কার্যক্রম এগিয়ে নেয়ার পক্ষে সওয়াল করেন দুজনে। মূলত, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং সমুদ্র নিরাপত্তা সমুন্নত রাখতে ইন্দো-প্যাসিফিক ওশান ইনিশিয়েটিভ (আইপিওআই) -ঘোষণা করে ভারত।

পাশাপাশি, ইউক্রেন, আফগানিস্তান, ইরান, জেসিপিওএ এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সর্বশেষ পরিস্থিতি সহ বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নানা ইস্যুতে মতবিনিময় করেছেন দুই নেতা। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফরকে কেন্দ্র করে ভারতে নিযুক্ত ব্রিটিশ দূতাবাস পূর্বেই জানিয়েছিলো, “ইউক্রেনে অবৈধ রুশ হামলার পর বিশ্বব্যাপী জনমত তৈরীতে এবং ব্যাপক কূটনৈতিক চাপ বাঁড়াতে ভারত সফরে আসছেন লিজ ট্রাস। ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছেও একই অনুরোধ রাখবেন তিনি।”

উল্লেখ্য, একই সময়ে ভারত সফর করছেন রাশিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস। এদিকে, গতবছরের ০৪ মে উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রীর যৌথ বৈঠকে রোডম্যাপ-২০৩০ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিলো। উক্ত সামিটের পর দ্বিতীয়বারের মতো ভারতে আসছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

লিজ ট্রাসের এবারের ভারত সফরটি দু দেশের মধ্যকার বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবন, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা, জলবায়ু সহযোগিতা, শিক্ষা এবং ডিজিটাল যোগাযোগের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে অংশীদারিত্বকে আরও গভীর করতে সহায়তা করবে বলে আশাবাদী ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়া এক ভার্চুয়াল সম্মেলনে ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রভূত উন্নতি ঘটানোর লক্ষ্য স্বরূপ “রোডম্যাপ-২০৩০” ঘোষণা করা হয়। এই রোডম্যাপের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য, দু দেশের মধ্যকার বিদ্যমান বাণিজ্য সম্পর্ক দ্বিগুণ করা এবং আর্থিক ভিত্তি মজবুত করা। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক

ট্যাগ:

নিরাপত্তা ও সবুজ শক্তি খাতে সম্পর্ক বাড়াবে ভারত-যুক্তরাজ্য

প্রকাশ: ০২:৪১:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ এপ্রিল ২০২২

বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা এবং সবুজ শক্তি খাতে সহযোগিতা জোরদারে সম্মত হয়েছে ভারত ও যুক্তরাজ্য। গত ৩১ মার্চ, বৃহস্পতিবার, নয়াদিল্লীতে এক বৈঠকে মিলিত হোন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস। এসময়, গতবছর মে মাসে দু দেশের মধ্যে গৃহীত রোডম্যাপ-২০৩০ এর অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন তারা।

পরবর্তীতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানা গিয়েছে, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা, অভিবাসন ও গতিশীলতা, শিক্ষা, এসএন্ডটি, জলবায়ু সহযোগিতা এবং সবুজ শক্তির অগ্রাধিকার খাতের অগ্রগতি পর্যালোচনা পূর্বক সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন দুই নেতা।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্য ও ভারতের সম্ভাব্য মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি আলোচনার অগ্রগতি নিয়েও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী। উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে এক্ষেত্রে উভয় দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে দুটো রাউন্ড টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অভিবাসন ও গতিশীলতা, ৫জি, এআই, কোয়ান্টামের মতো নতুন প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা, সাইবার, মহাকাশ এবং সামুদ্রিক ডোমেনে ক্রমবর্ধমান হুমকি মোকাবেলায় সক্ষমতা বাড়ানো সহ সম্ভাব্য প্রায় সকল ইস্যুতে নিজেদের মতবিনিময় করেছেন জয়শঙ্কর ও লিজ ট্রাস। একই সঙ্গে, উল্লিখিত প্রতিটি খাতে সম্পর্ক জোরদারে সম্মত হয়েছেন তারা।

এসময়, ভারতের মেক ইন ইন্ডিয়া ও স্বনির্ভর ভারত অভিযানে যুক্তরাজ্যের অংশ নেয়ার আগ্রহকে স্বাগত জানিয়েছেন জয়শঙ্কর। এ বিষয়ে পরবর্তীতে আরও গভীর পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করতে সম্মত হয়েছে উভয় পক্ষ।

তাছাড়া, ইন্দো-প্যাসিফিকের উপর কৌশলগত ফোকাস বজায় রাখা এবং আইপিওআই মেরিটাইম সিকিউরিটি পিলারের অধীনে কার্যক্রম এগিয়ে নেয়ার পক্ষে সওয়াল করেন দুজনে। মূলত, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং সমুদ্র নিরাপত্তা সমুন্নত রাখতে ইন্দো-প্যাসিফিক ওশান ইনিশিয়েটিভ (আইপিওআই) -ঘোষণা করে ভারত।

পাশাপাশি, ইউক্রেন, আফগানিস্তান, ইরান, জেসিপিওএ এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সর্বশেষ পরিস্থিতি সহ বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নানা ইস্যুতে মতবিনিময় করেছেন দুই নেতা। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফরকে কেন্দ্র করে ভারতে নিযুক্ত ব্রিটিশ দূতাবাস পূর্বেই জানিয়েছিলো, “ইউক্রেনে অবৈধ রুশ হামলার পর বিশ্বব্যাপী জনমত তৈরীতে এবং ব্যাপক কূটনৈতিক চাপ বাঁড়াতে ভারত সফরে আসছেন লিজ ট্রাস। ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছেও একই অনুরোধ রাখবেন তিনি।”

উল্লেখ্য, একই সময়ে ভারত সফর করছেন রাশিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস। এদিকে, গতবছরের ০৪ মে উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রীর যৌথ বৈঠকে রোডম্যাপ-২০৩০ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিলো। উক্ত সামিটের পর দ্বিতীয়বারের মতো ভারতে আসছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

লিজ ট্রাসের এবারের ভারত সফরটি দু দেশের মধ্যকার বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবন, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা, জলবায়ু সহযোগিতা, শিক্ষা এবং ডিজিটাল যোগাযোগের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে অংশীদারিত্বকে আরও গভীর করতে সহায়তা করবে বলে আশাবাদী ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়া এক ভার্চুয়াল সম্মেলনে ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রভূত উন্নতি ঘটানোর লক্ষ্য স্বরূপ “রোডম্যাপ-২০৩০” ঘোষণা করা হয়। এই রোডম্যাপের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য, দু দেশের মধ্যকার বিদ্যমান বাণিজ্য সম্পর্ক দ্বিগুণ করা এবং আর্থিক ভিত্তি মজবুত করা। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক