১১:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউক্রেন থেকে সরানো হয়েছে প্রায় ২০০০ ভারতীয়

রাশিয়া-ইউক্রেন সঙ্কট শুরু হওয়ার পর এখনও অবধি প্রায় দু হাজার ভারতীয় নাগরিককে নিরাপদ অবস্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শ্রী হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। গোটা কার্যক্রমটি ভারত সরকারের সরাসরি তত্ত্বাবধানে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এর নাম দেয়া হয়েছে ‘অপারেশন গঙ্গা’। প্রাথমিক পর্বে, রোমানিয়া, হাঙ্গেরি সহ ইউক্রেনের প্রতিবেশী দেশগুলোতে স্থলপথে স্থানান্তর করা হচ্ছে ভারতীয় নাগরিকদের।

অপারেশন গঙ্গা সম্পর্কে একটি বিশেষ ব্রিফিংয়ে ভাষণ দেওয়ার সময় পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, “অপারেশন গঙ্গার অধীনে এখনও অবধি প্রায় ১০০০ নাগরিককে রোমানিয়া ও হাঙ্গেরিতে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এছাড়াও, আরও ১০০০ জন নাগরিক অন্যান্য নিরাপদ অবস্থানে সরে গিয়েছেন বা সরিয়ে নেয়া হয়েছে, যেখান থেকে সরাসরি ভারতের উদ্দেশ্যে উড়াল দিতে পারবেন তারা।”

হাঙ্গেরি এবং রোমানিয়ার সীমান্ত ক্রসিংগুলো কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “পোল্যান্ডের প্রস্থান পয়েন্টটি প্রায় লক্ষাধিক ইউক্রেনীয় এবং অন্য দেশীয় নাগরিকদের সেখান থেকে দেশ ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করার কারণে আটকে আছে। তাই প্রচুর ভারতীয়, যারা ওই রাস্তা অবলম্বন করে দেশ ছাড়তে চেয়েছিলেন, তারা আটকে পড়েছেন।”

রবিবার ইউক্রেনে ভারতীয় দূতাবাসের জারি করা পরামর্শের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্র সচিব শ্রিংলা বলেন, “ভারতীয় নাগরিকদের সক্রিয় সংঘাতের অঞ্চলগুলো থেকে সরে যেতে এবং পশ্চিমাঞ্চলের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য কাছাকাছি রেলওয়ে স্টেশনগুলো ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”

শ্রিংলা বলেন, “আমরা নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছি, ভারতীয় শিক্ষার্থীদের পক্ষে যতটা সম্ভব সীমান্তের (রোমানিয়া, হাঙ্গেরি) কাছাকাছি আসার চেষ্টা করতে থাকা উচিত। বিভিন্ন স্টেজিং পয়েন্ট আছে যেখানে তাদের আশ্রয় নেওয়া উচিত। তারপরে তারা কোথায় ক্রসওভার করতে পারেন, সেটি আমরা দেখছি।”

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রুশ বাহিনী। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের দাবি, ইউক্রেনের মোট আটশো জায়গায় হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। দেশের মোট ১৪টি বিমানঘাঁটি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, ১৯ কামান্ড পোস্ট, ২৪ এস-৩০০ বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ও ৪৮ রেডার স্টেশন দখলে নিয়েছে রাশিয়া।

এছাড়া, ইউক্রেনে খাবারের আকাল তীব্র হচ্ছে। বহু জায়গায় জল, বিদ্যুৎ নেই। ন্যাটো ইউক্রেনের পাশে থাকলেও তারা এখনও পর্যন্ত বড় কোনও পদক্ষেপ নিতে পারেনি।

এদিকে, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর দাবি, ইতিমধ্যেই তারা ৩ হাজার ৫০০ রুশ সেনাকে হত্যা করেছে। বন্দি করেছে ২০০ সেনাকে। পাশাপাশি ১৪টি রুশ যুদ্ধবিমান, ৮ কপ্টার, ১০২টি ট্যাঙ্ক ধ্বংস করেছে।

অন্যদিকে, ইউক্রেন অভিযান মাত্র ২ সপ্তাহেই শেষ করে ফেলতে চান পুতিন। ক্রেমলিন সূত্রে এমনটাই দাবি করেছে এক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম। শনিবার ইউক্রেনের রকাজধানী কিয়েভে ঢুকেছে রুশ সেনা। স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে জেলেনস্কি সরকার।

এমতাবস্থায়, সেখানে আটকে পড়া প্রায় ১৬ হাজার ভারতীয় পড়ুয়া ও প্রবাসী নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে ভারত সরকার। এজন্য ২৪ ঘন্টা সেবা দিচ্ছে সেখানে নিযুক্ত ভারতীয় দূতাবাস। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম ও হেল্পলাইন। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক

ট্যাগ:

ইউক্রেন থেকে সরানো হয়েছে প্রায় ২০০০ ভারতীয়

প্রকাশ: ০৭:৪১:৩৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ মার্চ ২০২২

রাশিয়া-ইউক্রেন সঙ্কট শুরু হওয়ার পর এখনও অবধি প্রায় দু হাজার ভারতীয় নাগরিককে নিরাপদ অবস্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শ্রী হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। গোটা কার্যক্রমটি ভারত সরকারের সরাসরি তত্ত্বাবধানে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এর নাম দেয়া হয়েছে ‘অপারেশন গঙ্গা’। প্রাথমিক পর্বে, রোমানিয়া, হাঙ্গেরি সহ ইউক্রেনের প্রতিবেশী দেশগুলোতে স্থলপথে স্থানান্তর করা হচ্ছে ভারতীয় নাগরিকদের।

অপারেশন গঙ্গা সম্পর্কে একটি বিশেষ ব্রিফিংয়ে ভাষণ দেওয়ার সময় পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, “অপারেশন গঙ্গার অধীনে এখনও অবধি প্রায় ১০০০ নাগরিককে রোমানিয়া ও হাঙ্গেরিতে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এছাড়াও, আরও ১০০০ জন নাগরিক অন্যান্য নিরাপদ অবস্থানে সরে গিয়েছেন বা সরিয়ে নেয়া হয়েছে, যেখান থেকে সরাসরি ভারতের উদ্দেশ্যে উড়াল দিতে পারবেন তারা।”

হাঙ্গেরি এবং রোমানিয়ার সীমান্ত ক্রসিংগুলো কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “পোল্যান্ডের প্রস্থান পয়েন্টটি প্রায় লক্ষাধিক ইউক্রেনীয় এবং অন্য দেশীয় নাগরিকদের সেখান থেকে দেশ ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করার কারণে আটকে আছে। তাই প্রচুর ভারতীয়, যারা ওই রাস্তা অবলম্বন করে দেশ ছাড়তে চেয়েছিলেন, তারা আটকে পড়েছেন।”

রবিবার ইউক্রেনে ভারতীয় দূতাবাসের জারি করা পরামর্শের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্র সচিব শ্রিংলা বলেন, “ভারতীয় নাগরিকদের সক্রিয় সংঘাতের অঞ্চলগুলো থেকে সরে যেতে এবং পশ্চিমাঞ্চলের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য কাছাকাছি রেলওয়ে স্টেশনগুলো ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”

শ্রিংলা বলেন, “আমরা নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছি, ভারতীয় শিক্ষার্থীদের পক্ষে যতটা সম্ভব সীমান্তের (রোমানিয়া, হাঙ্গেরি) কাছাকাছি আসার চেষ্টা করতে থাকা উচিত। বিভিন্ন স্টেজিং পয়েন্ট আছে যেখানে তাদের আশ্রয় নেওয়া উচিত। তারপরে তারা কোথায় ক্রসওভার করতে পারেন, সেটি আমরা দেখছি।”

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রুশ বাহিনী। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের দাবি, ইউক্রেনের মোট আটশো জায়গায় হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। দেশের মোট ১৪টি বিমানঘাঁটি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, ১৯ কামান্ড পোস্ট, ২৪ এস-৩০০ বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ও ৪৮ রেডার স্টেশন দখলে নিয়েছে রাশিয়া।

এছাড়া, ইউক্রেনে খাবারের আকাল তীব্র হচ্ছে। বহু জায়গায় জল, বিদ্যুৎ নেই। ন্যাটো ইউক্রেনের পাশে থাকলেও তারা এখনও পর্যন্ত বড় কোনও পদক্ষেপ নিতে পারেনি।

এদিকে, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর দাবি, ইতিমধ্যেই তারা ৩ হাজার ৫০০ রুশ সেনাকে হত্যা করেছে। বন্দি করেছে ২০০ সেনাকে। পাশাপাশি ১৪টি রুশ যুদ্ধবিমান, ৮ কপ্টার, ১০২টি ট্যাঙ্ক ধ্বংস করেছে।

অন্যদিকে, ইউক্রেন অভিযান মাত্র ২ সপ্তাহেই শেষ করে ফেলতে চান পুতিন। ক্রেমলিন সূত্রে এমনটাই দাবি করেছে এক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম। শনিবার ইউক্রেনের রকাজধানী কিয়েভে ঢুকেছে রুশ সেনা। স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে জেলেনস্কি সরকার।

এমতাবস্থায়, সেখানে আটকে পড়া প্রায় ১৬ হাজার ভারতীয় পড়ুয়া ও প্রবাসী নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে ভারত সরকার। এজন্য ২৪ ঘন্টা সেবা দিচ্ছে সেখানে নিযুক্ত ভারতীয় দূতাবাস। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম ও হেল্পলাইন। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক