০২:১৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিমসটেকের অধীনে সম্পর্ক বিস্তৃত ও গভীর করতে হবে: জয়শঙ্কর

বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং পর্যায়ে রয়েছে উল্লেখ করে বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন (বিমসটেক) এর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যকার আন্তঃসহযোগিতা আরও বৃদ্ধি করতে পরামর্শ দিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ২৯ মার্চ, মঙ্গলবার, কলম্বোয় অনুষ্ঠিত ১৮ তম বিমসটেক মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিয়ে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

মোদী মন্ত্রীসভার গুরুত্বপূর্ণ এই সদস্য বলেন, “প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈটিক সহযোগিতার জন্য বিমসটেকের মধ্যকার সহযোগিতা আরও বিস্তৃত এবং গভীর করার প্রয়োজন রয়েছে। আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা খুব চ্যালেঞ্জিং এক পর্যায়ে যাচ্ছে। সম্ভবত সাম্প্রতিক স্মৃতিতে সবচেয়ে কঠিন এক অবস্থায় আমরা রয়েছি। কোভিড-১৯ মহামারীর চ্যালেঞ্জ এখনো পুরোপুরি কমেনি। কিন্তু ইউক্রেন সহ সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো আন্তর্জাতিক অস্থিরতা বাড়িয়ে দিয়েছে।”

জয়শঙ্কর বলেন, “আমরা সকলেই জোর দিয়েছি যে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা, এমনকি স্থিতিশীলতাকে আর অবজ্ঞা করা যাবে না। আমাদের অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে আমরা মাথাব্যথার মুখোমুখি উভয় দিক থেকে। যথাঃ বিশ্ব অর্থনীতি থেকে এবং কিছু ক্ষেত্রে আমাদের নিজস্ব অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির মধ্যে থেকে।”

অভিজ্ঞ এই কূটনীতিক বলেন, “এই পরিস্থিতিতে আমাদের অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা বাড়াতে গিয়ে বিমসটেকের অধীনে আমাদের সহযোগিতাকে আরও বিস্তৃত এবং গভীর করতে হবে। আমাদের আরও অনেক ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমাদের আরও কার্যকর এবং দ্রুত গতির সহযোগিতা প্রয়োজন। আমরা গত ২৫ বছরে যা অর্জন করেছি, তার উপর আমাদের আরও জোরদার এবং দৃঢ় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।”

বুধবারের শীর্ষ সম্মেলনে বিমসটেক নেতারা সংগঠনের সনদ গ্রহণ করতে চলেছেন জানিয়ে জয়শঙ্কর বলেন, “এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের এবং আমাদের বিকাশের প্রচেষ্টায় এক ল্যান্ডমার্ক হতে চলেছে। কিন্তু, এতে সন্তুষ্ট হয়ে বসে থাকলে চলবেনা। সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে পরবর্তী ভূমিকা নিতে হবে।”

এসময়, বিমসটেকের মধ্যকার আন্তঃবাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাড়ানোর বিষয়ে কথা বলেন জয়শঙ্কর। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার আহবানও জানান ভারতীয় মন্ত্রী। শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, নেপাল সহ প্রতিবেশী দেশগুলোকে একজোট হয়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই ডাক দেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এই বৈঠক থেকে বিশ্বের বাকি সদস্য দেশগুলোকেও সন্ত্রাস ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াই করার বার্তা দেন তিনি। বিশেষ করে, সাইবার নিরাপত্তার বিষয়ে জোর দেওয়ার কথা বলেছেন জয়শঙ্কর।

এর আগে গত সোমবারই এই বৈঠকের যোগ দিতে শ্রীলঙ্কায় যান জয়শঙ্কর। আর মঙ্গলবার বৈঠকে বসেন তিনি। শত্রুপক্ষের বিরুদ্ধে একজোট থাকার বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি জয়শঙ্কর আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন, জলপথে যোগাযোগ সংক্রান্ত বিষয়ে সহযোগিতা করবে নয়াদিল্লি।

আগামী ৩০ মার্চ শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ৫ম বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন (বিমসটেক) শীর্ষ সম্মেলন। উক্ত সম্মেলনে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সরকার প্রধানদের।

উল্লেখ্য, বিমসটেক একটি মাল্টি-সেক্টরাল গ্রুপ হিসেবে দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার মধ্যে একটি সংযোগ হিসেবে কাজ করে। বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড এর সদস্য হিসেবে স্বীকৃত।

সম্প্রতি শ্রীলঙ্কাকে আর্থিক টানাপোড়ন থেকে বাঁচাতে অর্থ সাহায্য করেছে ভারত। আর তারপর এই প্রথমবার শ্রীলঙ্কা সফরে গেলেন ভারতের মন্ত্রী। সেখানে গিয়ে বিমসটেক বৈঠকের আগেই শ্রীলঙ্কার নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।

এ দিন বৈঠকে জয়শঙ্কর বাকি সদস্য দেশগুলোর উদ্দেশে বলেন, “সহযোগিতার সম্পর্ক আরও গভীর হওয়া প্রয়োজন। এখন আর আন্তর্জাতিক সুরক্ষার বিষয়টি লঘু করে দেখলে চলবে না।” বন্দর, ফেরি পরিষেবার মতো বিষয়ে সহযোগিতা আরও বাড়ানোর কথাও বলেন জয়শঙ্কর। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক

 

ট্যাগ:
জনপ্রিয়

বিমসটেকের অধীনে সম্পর্ক বিস্তৃত ও গভীর করতে হবে: জয়শঙ্কর

প্রকাশ: ০৭:০২:২৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ মার্চ ২০২২

বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং পর্যায়ে রয়েছে উল্লেখ করে বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন (বিমসটেক) এর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যকার আন্তঃসহযোগিতা আরও বৃদ্ধি করতে পরামর্শ দিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ২৯ মার্চ, মঙ্গলবার, কলম্বোয় অনুষ্ঠিত ১৮ তম বিমসটেক মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিয়ে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

মোদী মন্ত্রীসভার গুরুত্বপূর্ণ এই সদস্য বলেন, “প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈটিক সহযোগিতার জন্য বিমসটেকের মধ্যকার সহযোগিতা আরও বিস্তৃত এবং গভীর করার প্রয়োজন রয়েছে। আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা খুব চ্যালেঞ্জিং এক পর্যায়ে যাচ্ছে। সম্ভবত সাম্প্রতিক স্মৃতিতে সবচেয়ে কঠিন এক অবস্থায় আমরা রয়েছি। কোভিড-১৯ মহামারীর চ্যালেঞ্জ এখনো পুরোপুরি কমেনি। কিন্তু ইউক্রেন সহ সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো আন্তর্জাতিক অস্থিরতা বাড়িয়ে দিয়েছে।”

জয়শঙ্কর বলেন, “আমরা সকলেই জোর দিয়েছি যে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা, এমনকি স্থিতিশীলতাকে আর অবজ্ঞা করা যাবে না। আমাদের অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে আমরা মাথাব্যথার মুখোমুখি উভয় দিক থেকে। যথাঃ বিশ্ব অর্থনীতি থেকে এবং কিছু ক্ষেত্রে আমাদের নিজস্ব অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির মধ্যে থেকে।”

অভিজ্ঞ এই কূটনীতিক বলেন, “এই পরিস্থিতিতে আমাদের অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা বাড়াতে গিয়ে বিমসটেকের অধীনে আমাদের সহযোগিতাকে আরও বিস্তৃত এবং গভীর করতে হবে। আমাদের আরও অনেক ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমাদের আরও কার্যকর এবং দ্রুত গতির সহযোগিতা প্রয়োজন। আমরা গত ২৫ বছরে যা অর্জন করেছি, তার উপর আমাদের আরও জোরদার এবং দৃঢ় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।”

বুধবারের শীর্ষ সম্মেলনে বিমসটেক নেতারা সংগঠনের সনদ গ্রহণ করতে চলেছেন জানিয়ে জয়শঙ্কর বলেন, “এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের এবং আমাদের বিকাশের প্রচেষ্টায় এক ল্যান্ডমার্ক হতে চলেছে। কিন্তু, এতে সন্তুষ্ট হয়ে বসে থাকলে চলবেনা। সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে পরবর্তী ভূমিকা নিতে হবে।”

এসময়, বিমসটেকের মধ্যকার আন্তঃবাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাড়ানোর বিষয়ে কথা বলেন জয়শঙ্কর। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার আহবানও জানান ভারতীয় মন্ত্রী। শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, নেপাল সহ প্রতিবেশী দেশগুলোকে একজোট হয়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই ডাক দেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এই বৈঠক থেকে বিশ্বের বাকি সদস্য দেশগুলোকেও সন্ত্রাস ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াই করার বার্তা দেন তিনি। বিশেষ করে, সাইবার নিরাপত্তার বিষয়ে জোর দেওয়ার কথা বলেছেন জয়শঙ্কর।

এর আগে গত সোমবারই এই বৈঠকের যোগ দিতে শ্রীলঙ্কায় যান জয়শঙ্কর। আর মঙ্গলবার বৈঠকে বসেন তিনি। শত্রুপক্ষের বিরুদ্ধে একজোট থাকার বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি জয়শঙ্কর আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন, জলপথে যোগাযোগ সংক্রান্ত বিষয়ে সহযোগিতা করবে নয়াদিল্লি।

আগামী ৩০ মার্চ শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ৫ম বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন (বিমসটেক) শীর্ষ সম্মেলন। উক্ত সম্মেলনে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সরকার প্রধানদের।

উল্লেখ্য, বিমসটেক একটি মাল্টি-সেক্টরাল গ্রুপ হিসেবে দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার মধ্যে একটি সংযোগ হিসেবে কাজ করে। বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড এর সদস্য হিসেবে স্বীকৃত।

সম্প্রতি শ্রীলঙ্কাকে আর্থিক টানাপোড়ন থেকে বাঁচাতে অর্থ সাহায্য করেছে ভারত। আর তারপর এই প্রথমবার শ্রীলঙ্কা সফরে গেলেন ভারতের মন্ত্রী। সেখানে গিয়ে বিমসটেক বৈঠকের আগেই শ্রীলঙ্কার নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।

এ দিন বৈঠকে জয়শঙ্কর বাকি সদস্য দেশগুলোর উদ্দেশে বলেন, “সহযোগিতার সম্পর্ক আরও গভীর হওয়া প্রয়োজন। এখন আর আন্তর্জাতিক সুরক্ষার বিষয়টি লঘু করে দেখলে চলবে না।” বন্দর, ফেরি পরিষেবার মতো বিষয়ে সহযোগিতা আরও বাড়ানোর কথাও বলেন জয়শঙ্কর। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক