ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের ফলে বিশ্ববাজারে বেড়ে গিয়েছে অপরিশোধিত তেল এবং গ্যাসের দাম। আর এই মূল্যবৃদ্ধি বিশ্ব অর্থনীতিতে স্বভাবতই বড় ধরণের ধাক্কার কারণ হিসেবে প্রতীয়মান হয়েছে। ধ্বস নেমেছে পুঁজিবাজারে। এমতাবস্থায়, সাশ্রয়ী শক্তির সর্বোত্তম বিকল্পের দিকে মনোনিবেশ করছে ভারত।
উল্লেখ্য, ভারতের ব্যবহার্য অপরিশোধিত তেলের প্রায় ৮৫ শতাংশ (প্রতিদিন ০৫ মিলিয়ন ব্যারল) বহির্বিশ্ব হতে আমদানি করতে হয়। তাই, হঠাৎ করেই তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিকল্প হিসেবে সমস্ত প্রযোজকদের কাছ থেকেই ভিন্ন পথে তেল ক্রয়ের চেষ্টা করছে ভারত।
একটি অফিশিয়াল বিবৃতিতে জানা গিয়েছিলো, মস্কো নয়াদিল্লিকে অশোধিত তেল এবং অন্যান্য পণ্য ক্রয়ের উপর ছাড়ের প্রস্তাব দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতেই জানা গেলো, ভারতও বিকল্প পথেই তেল সহ সাশ্রয়ী পণ্য ক্রয়ে আগ্রহী।
প্রসঙ্গত, ইউক্রেনে রুশ হামলার প্রেক্ষিতে রাশিয়ার উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্ররা। এমতাবস্থায়, তেল বিক্রিতে বিপাকে পড়ে রাশিয়াও। তাই ভারতকে ছাড় দিয়ে তেল বিক্রির প্রস্তাব করে মস্কো। অবস্থাদৃষ্টে ভারতও হয়তো এমন প্রস্তাব লুফে নিতে পারে।
অপরিশোধিত তেলের ব্যারেল প্রতি মূল্য প্রায় ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছেছে। এছাড়া, হোলসেল গ্যাসের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
তবে ভারতকে রাশিয়ার সঙ্গে লেনদেনে জড়িত হতে সতর্ক করছেন অনেক আন্তর্জাতিক বোদ্ধাই। কিন্তু, বর্তমান প্রেক্ষাপটে রাশিয়া থেকে তেল আমদানির দিকে ঝুঁকলে ভারতের লাভ বৈ ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কম। তাছাড়া, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বহু ইউরোপীয় দেশই রাশিয়া থেকে তেল সংগ্রহের দিকে মনোনিবেশ করেছে।
রাশিয়ার মোট প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানির প্রায় ৭৫% জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্সের ওইসিডি দেশগুলোতে পাঠানো হয় এবং নেদারল্যান্ডস, ইতালি, পোল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া, রোমানিয়ার মতো ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের বড় আমদানিকারক।
এদিকে, ভারত রাশিয়া থেকে মোট তেল আমদানির মাত্র ১ শতাংশ ক্রয় করে থাকে। অপরিশোধিত তেল ক্রয়ের দিক থেকে ভারতের শীর্ষ ১০ টি উৎসের মধ্যেও রাশিয়ার নাম নেই। একইভাবে, ভারতের সাথে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল আমদানির ক্ষেত্রে কোনো জি২জি ব্যবস্থাও নেই।
প্রসঙ্গত, ভারতের বেশিরভাগ আমদানি পশ্চিম এশিয়া থেকে (ইরাক ২৩%, সৌদি আরব ১৮%, আরব আমিরাত ১১%)। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র এখন ভারতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অপরিশোধিত তেলের উৎস হয়ে উঠেছে (৭.৩%)। একই সাথে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বর্তমান বছরে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে সম্ভবত প্রায় ১১% দ্বারা, বাজারের অংশীদারিত্ব ৮% এ নিয়ে যাবে৷ খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক