০৩:০২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জলবায়ু পরিবর্তন রোধের সকল প্রতিশ্রুতিতে ব্যর্থ উন্নত দেশগুলো: ভারত

বিশ্বের উন্নত দেশগুলো শুধুমাত্র জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনের ক্ষেত্রে নয়, বরং জলবায়ু অর্থায়ন ও প্রযুক্তিতে অ্যাক্সেস প্রদানের ক্ষেত্রেও ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে ভারত। গত ০৯ মার্চ, বুধবার, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এআরআরআইএ-ফর্মুলা মিটিং অন ক্লাইমেট ফাইন্যান্স ফর সাসটেইনিং পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি-তে ভাষণ দিতে গিয়ে এই কথা বলেন সেখানে নিযুক্ত ভারতের ডেপুটি পার্মানেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ আর. রবীন্দ্র।

নিজ বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “উন্নত দেশগুলোকে অবশ্যই জলবায়ু অর্থায়ন করতে হবে এবং অঙ্কের হিসেবে তা হবে অবশ্যই ১ ট্রিলিয়ন ডলার।”

জলবায়ু সংক্রান্ত বিভিন্ন পদক্ষেপের ক্ষেত্রে ভারত বিশ্বের কারোর পিছনে নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গ্লাসগো কোপ সম্মেলনেও উচ্চাভিলাষী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং আগে করা প্রতিশ্রুতিগুলোর বাস্তবায়নও করেছেন।”

রবীন্দ্র বলেন, “প্রকৃতপক্ষে, ভারত সম্ভবত একমাত্র জি২০ দেশ, যা ২০৩০ সালের ভেতর প্যারিস লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারবে।” এসময়, জলবায়ু পরিবর্তনে জাতিসংঘের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন (ইউএনএফসিসিসি) এর প্রশংসা করেন তিনি।

অভিজ্ঞ এই কূটনীতিক বলেন, “ইউএনএফসিসিসি, জাতিসংঘে যার প্রায় সর্বজনীন সদস্যপদ রয়েছে, বছরের পর বছর ধরে আমাদের সকলকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রধান চালক হিসেবে কাজ করছে, সর্বসম্মতভাবে সুনির্দিষ্ট নীতি ও বিধানের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। এই নীতি ও বিধানের কারণেই জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই এতোটা অর্থবহ হয়েছে।”

ইউএনএফসিসিসি একটি ভারসাম্যপূর্ণ বৈশ্বিক গণতান্ত্রিক প্রচেষ্টার প্রতিনিধিত্ব করে বলেও মন্তব্য করেন রবীন্দ্র। তাই, জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুকে কেন্দ্র করে তৈরী হওয়া যেকোনো আলোচনাকে ইউএনএফসিসিসির বাইরে নেওয়ার প্রচেষ্টা প্রতিহত করার কথাও ঘোষণা করেন তিনি।

নিরাপত্তা পরিষদে অনেক সময়ই বিশ্বের মোড়ল রাষ্ট্রগুলো ইউএনএফসিসিসি এর এখতিয়ারভূক্ত কার্যক্রমে নাক গলানোর চেষ্টা করে বলে মন্তব্য করেন রবীন্দ্র। জাতিসংঘে ভারতের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, “নিরাপত্তা পরিষদে জলবায়ু বিষয়ক আলোচনা নিয়ে আসা মানেই এখানে বিশ্বের অন্য সকল গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু থেকে মনোযোগ সরিয়ে আনার পায়তারা করা হচ্ছে। তাই ইউএনএফসিসিসি এর বাইরে জলবায়ু ইস্যু নিয়ে কথা বলার কোনো প্রাসঙ্গিকতা ভারত দেখে না।”

জাতিসংঘে ভারতের এই দূতের মতে, “বাস্তবতা হলো, উন্নত দেশগুলো শুধুমাত্র প্রশমনের ক্ষেত্রেই নয়, জলবায়ু অর্থ ও প্রযুক্তিতে অ্যাক্সেস প্রদানের ক্ষেত্রেও তাদের প্রতিশ্রুতি পালনে ব্যর্থ হয়েছে। ফলস্বরূপ, জলবায়ুকে নিরাপত্তার সাথে যুক্ত করার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। ইউএনএফসিসিসি-এর অধীনে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে অগ্রগতির অভাবকে অস্পষ্ট করতে এসব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।”

এসময়, তিনি বলেন, “বিশ্বের উন্নত দেশগুলোকে অবশ্যই যত দ্রুত সম্ভব জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় প্রতিশ্রুত ১ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করতে হবে।”

উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে প্রকাশিত আইপিসিসি জলবায়ু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘অভিযোজনের জন্য জলবায়ু অর্থ অপর্যাপ্ত এবং অভিযোজন বাস্তবায়নকে বাধাগ্রস্ত করে। আসুন আমরা সেই বিষয়গুলোতে ফোকাস করি যা উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য অত্যাবশ্যক এবং নিরাপত্তার আড়ালে পাশ কাটিয়ে না যায়।” খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক

ট্যাগ:
জনপ্রিয়

জলবায়ু পরিবর্তন রোধের সকল প্রতিশ্রুতিতে ব্যর্থ উন্নত দেশগুলো: ভারত

প্রকাশ: ০২:১৪:০৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ ২০২২

বিশ্বের উন্নত দেশগুলো শুধুমাত্র জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনের ক্ষেত্রে নয়, বরং জলবায়ু অর্থায়ন ও প্রযুক্তিতে অ্যাক্সেস প্রদানের ক্ষেত্রেও ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে ভারত। গত ০৯ মার্চ, বুধবার, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এআরআরআইএ-ফর্মুলা মিটিং অন ক্লাইমেট ফাইন্যান্স ফর সাসটেইনিং পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি-তে ভাষণ দিতে গিয়ে এই কথা বলেন সেখানে নিযুক্ত ভারতের ডেপুটি পার্মানেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ আর. রবীন্দ্র।

নিজ বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “উন্নত দেশগুলোকে অবশ্যই জলবায়ু অর্থায়ন করতে হবে এবং অঙ্কের হিসেবে তা হবে অবশ্যই ১ ট্রিলিয়ন ডলার।”

জলবায়ু সংক্রান্ত বিভিন্ন পদক্ষেপের ক্ষেত্রে ভারত বিশ্বের কারোর পিছনে নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গ্লাসগো কোপ সম্মেলনেও উচ্চাভিলাষী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং আগে করা প্রতিশ্রুতিগুলোর বাস্তবায়নও করেছেন।”

রবীন্দ্র বলেন, “প্রকৃতপক্ষে, ভারত সম্ভবত একমাত্র জি২০ দেশ, যা ২০৩০ সালের ভেতর প্যারিস লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারবে।” এসময়, জলবায়ু পরিবর্তনে জাতিসংঘের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন (ইউএনএফসিসিসি) এর প্রশংসা করেন তিনি।

অভিজ্ঞ এই কূটনীতিক বলেন, “ইউএনএফসিসিসি, জাতিসংঘে যার প্রায় সর্বজনীন সদস্যপদ রয়েছে, বছরের পর বছর ধরে আমাদের সকলকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রধান চালক হিসেবে কাজ করছে, সর্বসম্মতভাবে সুনির্দিষ্ট নীতি ও বিধানের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। এই নীতি ও বিধানের কারণেই জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই এতোটা অর্থবহ হয়েছে।”

ইউএনএফসিসিসি একটি ভারসাম্যপূর্ণ বৈশ্বিক গণতান্ত্রিক প্রচেষ্টার প্রতিনিধিত্ব করে বলেও মন্তব্য করেন রবীন্দ্র। তাই, জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুকে কেন্দ্র করে তৈরী হওয়া যেকোনো আলোচনাকে ইউএনএফসিসিসির বাইরে নেওয়ার প্রচেষ্টা প্রতিহত করার কথাও ঘোষণা করেন তিনি।

নিরাপত্তা পরিষদে অনেক সময়ই বিশ্বের মোড়ল রাষ্ট্রগুলো ইউএনএফসিসিসি এর এখতিয়ারভূক্ত কার্যক্রমে নাক গলানোর চেষ্টা করে বলে মন্তব্য করেন রবীন্দ্র। জাতিসংঘে ভারতের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, “নিরাপত্তা পরিষদে জলবায়ু বিষয়ক আলোচনা নিয়ে আসা মানেই এখানে বিশ্বের অন্য সকল গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু থেকে মনোযোগ সরিয়ে আনার পায়তারা করা হচ্ছে। তাই ইউএনএফসিসিসি এর বাইরে জলবায়ু ইস্যু নিয়ে কথা বলার কোনো প্রাসঙ্গিকতা ভারত দেখে না।”

জাতিসংঘে ভারতের এই দূতের মতে, “বাস্তবতা হলো, উন্নত দেশগুলো শুধুমাত্র প্রশমনের ক্ষেত্রেই নয়, জলবায়ু অর্থ ও প্রযুক্তিতে অ্যাক্সেস প্রদানের ক্ষেত্রেও তাদের প্রতিশ্রুতি পালনে ব্যর্থ হয়েছে। ফলস্বরূপ, জলবায়ুকে নিরাপত্তার সাথে যুক্ত করার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। ইউএনএফসিসিসি-এর অধীনে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে অগ্রগতির অভাবকে অস্পষ্ট করতে এসব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।”

এসময়, তিনি বলেন, “বিশ্বের উন্নত দেশগুলোকে অবশ্যই যত দ্রুত সম্ভব জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় প্রতিশ্রুত ১ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করতে হবে।”

উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে প্রকাশিত আইপিসিসি জলবায়ু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘অভিযোজনের জন্য জলবায়ু অর্থ অপর্যাপ্ত এবং অভিযোজন বাস্তবায়নকে বাধাগ্রস্ত করে। আসুন আমরা সেই বিষয়গুলোতে ফোকাস করি যা উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য অত্যাবশ্যক এবং নিরাপত্তার আড়ালে পাশ কাটিয়ে না যায়।” খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক