শীঘ্রই একটি সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির (সিইপিএ) বিষয়ে যৌথ সমীক্ষা প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে একমত হয়েছে ভারত ও বাংলাদেশ। পাশাপাশি সীমান্তবর্তী এলাকায় সীমান্ত কাস্টম স্টেশন এবং স্থলবন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নের বিষয়টিও গুরুত্ব পেয়েছে দু দেশের প্রতিনিধিদের আলোচনায়।
গত ০৪ মার্চ, শুক্রবার, নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারত সচিব পর্যায়ের বৈঠক। আলোচনাকালে, পাটজাত পণ্যের ওপর থেকে এন্টি-ডাম্পিং ডিউটি তুলে নেওয়া এবং বাণিজ্য বাধা দূর করতে ভারতের কাছে দীর্ঘদিনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আরও পণ্যের বিএসটিআই স্ট্যান্ডার্ড শংসাপত্রে ভারতের স্বীকৃতি, ভারতীয় বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার এবং ভারতের নতুন কাস্টম নিয়ম (সিএআরওটিএআর, ২০২০) এর বিষয়গুলোও উত্থাপন করা হয়েছে।
বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং ভারতীয় পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন দেশটির বাণিজ্য সচিব বি ভি আর সুব্রমারিয়াম। ভয় দেশের সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতিনিধিরা যোগ দেন। সূত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জানানো হয়- ভারতীয় পক্ষ বাংলাদেশের দাবি ‘লিপিবদ্ধ’ করেছে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করেছে।
এর আগে, বাংলাদেশ-ভারত জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ট্রেডের (জেডব্লিউজিটি) ১৪তম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উভয় দেশের অতিরিক্ত সচিব নিজ নিজ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
বাংলাদেশের পাটজাত পণ্যের উপর এন্টি-ডাম্পিং শুল্ক বিষয়ে সূত্র জানায়, বাংলাদেশ দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে তার পাট পণ্যের উপর ভারত কর্তৃক আরোপিত এন্টি-ডাম্পিং শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি করে আসছে যা ভারতে বাংলাদেশের বাণিজ্যকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করছে’।
গত বছরের মার্চে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করা হলেও এ লক্ষ্যে এখনো কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। সরকারি সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক বছরে ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২০২১ আর্থিক বছরে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে মোট বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল প্রায় ৯.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যার মধ্যে ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানি ছিল ইতিহাসের সর্বোচ্চ ১.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। দুই দেশের মধ্যে সর্বশেষ বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠক হয় গত বছরের মার্চে ঢাকায়।
উভয় দেশের প্রতিনিধিদল নিম্নলিখিত এজেন্ডা আইটেমগুলোর অগ্রগতির প্রশংসা করেছে:
* রেলের মাধ্যমে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য সহজতর করার জন্য –
ক) সিরাজগঞ্জ বাজারে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং সুবিধা বিকাশের জন্য একটি বিশদ প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) অনুমোদিত হয়েছে।
খ) ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে মালবাহী ট্রেন চালানোর জন্য বেনাপোলে ৯০০ মিটার নতুন সাইডিং লাইন নির্মাণ করা হয়েছে।
গ) দর্শনার মাধ্যমে রেলপথে ভারত থেকে সমস্ত পণ্য আমদানির অনুমতি দেওয়ার জন্য দর্শনায় লোডিং এবং আনলোডিং প্ল্যাটফর্মের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
ঘ) ঈশ্বরদীতে রেল ও সড়ক ভিত্তিক আইসিডি উন্নয়নের জন্য ডিপিপি অনুমোদিত হয়েছে।
* বর্ডার হাটঃ কোভিড বিধিনিষেধের কারণে বন্ধ থাকা হাটগুলি শীঘ্রই খোলা হবে
* পেট্রাপোল-বেনাপোল ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্ট (আইসিপি) ২৪x৭ চালু করা হবে শীঘ্রই
* আইসিপি/ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশনগুলোতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে
খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক