০৭:২০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পোল্যান্ড-ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতিদের সাথে মোদীর ফোনালাপ

ইউক্রেন সঙ্কট ইস্যুতে পোল্যান্ড, ফ্রান্স এবং ইউরোপীয় কাউন্সিলের রাষ্ট্রপতিদের সাথে ফোনে কথা বলেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত ০১ মার্চ, মঙ্গলবার, এসব ফোনালাপে দ্রুত সহিংসতা বন্ধ পূর্বক সংলাপে ফিরে আসার জন্য পূর্বতন বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করেছেন তিনি।

পরবর্তীতে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে তথ্যটি নিশ্চিত করা হয়। জানা গিয়েছে, ইউক্রেন থেকে ভারতীয়দের সরিয়ে নিতে পোল্যান্ডের সহায়তার জন্য এবং ভিসাজনিত কর্মসূচি শিথিল করায় পোলিশ রাষ্ট্রপতি আন্দ্রেজ দুদাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন মোদী। পাশাপাশি কঠিন এই সময়ে ভারতীয়দের পাশে দাঁড়ানোয় পোলিশ রাষ্ট্রপতিকে শীঘ্রই ভারত সফরের আমন্ত্রণও জানান মোদী।

দু দেশের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের দিকে ইঙ্গিত করে ২০০১ সালে গুজরাটে ভূমিকম্পের পর পোল্যান্ডের দেয়া ব্যাপক সহযোগিতার কথা স্মরণ করেন মোদী। একই সঙ্গে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বেশ কয়েকটি পোলিশ পরিবার এবং অল্পবয়সী এতিমদের উদ্ধারে ভারতের জামনগরের মহারাজার ভূমিকার কথাও স্মরণ করেন।

এছাড়া, রোমানিয়া ও স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রীকেও ফোন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভারতীয়দের ফেরাতে সাহায্য করার জন্য দুই দেশের প্রধানকে ধন্যবাদ জানান মোদী। আপাতত রোমানিয়া, হাঙ্গেরি, স্লোভাক রিপাবলিক ও পোল্যান্ড থেকে বিশেষ বিমানে করে আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধার করে আনা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে এ সংক্রান্ত একটি বিবৃতিও জারি করা হয়েছে। সেখানেই বলা হয়েছে নরেন্দ্র মোদী রোমানিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোলে লনেলকে ফোন করেন।

এদিকে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পড়ুয়া শিক্ষার্থী সহ ইউক্রেনে এখনও যে ভারতীয়রা আটকে পড়ে রয়েছেন, তাঁদের ফেরাতে বিশেষ দূত হিসেবে ইউক্রেনের প্রতিবেশী দেশগুলোতে যাবেন চার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া যাবেন রোমানিয়া। কিরেন রিজিজু স্লোভাক প্রজাতন্ত্র, হরদীপ পুরী হাঙ্গেরি ও ভিকে সিংহ পোল্যান্ডে যাবেন। ভারতীয়দের উদ্ধার করে নিয়ে আসার প্রক্রিয়ার তদারকি ও সমন্বয় সাধন করবেন এই চার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।  পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি এ কথা জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভারতীয়দের উদ্ধার করে নিয়ে আসার চলতি প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানাতে গিয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরের অরিন্দম বাগচি বলেছেন, এখনও পর্যন্ত ছয়টি উড়ান ১৪০০ ভারতীয়কে নিয়ে দেশে ফিরেছে। এর মধ্যে চারটি উড়ান দেশে ফিরেছে রোমানিয়ার বুখারেস্ট থেকে। দুটি উড়ান দেশে এসেছে হাঙ্গেরির বুদাপেস্ট থেকে। বাগচি আরও বলেছেন, যুদ্ধ শুরুর পূর্বেই আমাদের নির্দেশিকা জারির পর প্রায় ৮ হাজার ভারতীয় ইউক্রেন ছেড়েছেন।

বাগচি ভারতীয়দের সরাসরি সীমান্তে না আসার আর্জি জানিয়েছেন। কারণ, সীমান্তগুলোতে ভীড় রয়েছে এবং উদ্ধারের কাজে সময় লাগবে। তিনি বলেছেন, ইউক্রেনের পরিস্থিতি এখনও জটিল ও উদ্বেগজনক। কিন্তু এরইমধ্যে উদ্ধার অভিযান ত্বরান্বিত করা গিয়েছে।

তিনি বলেছেন, আমরা ভারতীয়দের অনুরোধ করছে, সরাসরি সীমান্তে যাবেন না। কারণ, সেখানে ভীড় রয়েছে। উদ্ধারের কাজ সময়সাপেক্ষ। নিকটবর্তী শহরে যান এবং সেখানে আশ্রয় নিন। আমরা সেখানে ব্যবস্থা করছি, আমাদের দল আপনাদের সাহায্য করবে। আমাদের পর্যাপ্ত উড়ান রয়েছে।

সাংবাদিক বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, কিয়েভ, বুখারেস্ট, বুদাপেস্ট ও ওয়ারশের ভারতীয় দূতাবাস উদ্ধার কাজের ক্ষেত্রে বাস পরিষেবা নিয়ে কাজ করছে। এর পাশাপাশি যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে মানবিক সাহায্য পাঠানো অব্যহত রাখবে ভারত। যুদ্ধজনিত পরিস্থিতিতে দুর্গতদের জন্য ওষুধপত্র সহ মানবিক সাহায্য পাঠানোর অঙ্গীকার করেছে ভারত। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক

ট্যাগ:

পোল্যান্ড-ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতিদের সাথে মোদীর ফোনালাপ

প্রকাশ: ১২:৫৮:২৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ মার্চ ২০২২

ইউক্রেন সঙ্কট ইস্যুতে পোল্যান্ড, ফ্রান্স এবং ইউরোপীয় কাউন্সিলের রাষ্ট্রপতিদের সাথে ফোনে কথা বলেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত ০১ মার্চ, মঙ্গলবার, এসব ফোনালাপে দ্রুত সহিংসতা বন্ধ পূর্বক সংলাপে ফিরে আসার জন্য পূর্বতন বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করেছেন তিনি।

পরবর্তীতে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে তথ্যটি নিশ্চিত করা হয়। জানা গিয়েছে, ইউক্রেন থেকে ভারতীয়দের সরিয়ে নিতে পোল্যান্ডের সহায়তার জন্য এবং ভিসাজনিত কর্মসূচি শিথিল করায় পোলিশ রাষ্ট্রপতি আন্দ্রেজ দুদাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন মোদী। পাশাপাশি কঠিন এই সময়ে ভারতীয়দের পাশে দাঁড়ানোয় পোলিশ রাষ্ট্রপতিকে শীঘ্রই ভারত সফরের আমন্ত্রণও জানান মোদী।

দু দেশের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের দিকে ইঙ্গিত করে ২০০১ সালে গুজরাটে ভূমিকম্পের পর পোল্যান্ডের দেয়া ব্যাপক সহযোগিতার কথা স্মরণ করেন মোদী। একই সঙ্গে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বেশ কয়েকটি পোলিশ পরিবার এবং অল্পবয়সী এতিমদের উদ্ধারে ভারতের জামনগরের মহারাজার ভূমিকার কথাও স্মরণ করেন।

এছাড়া, রোমানিয়া ও স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রীকেও ফোন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভারতীয়দের ফেরাতে সাহায্য করার জন্য দুই দেশের প্রধানকে ধন্যবাদ জানান মোদী। আপাতত রোমানিয়া, হাঙ্গেরি, স্লোভাক রিপাবলিক ও পোল্যান্ড থেকে বিশেষ বিমানে করে আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধার করে আনা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে এ সংক্রান্ত একটি বিবৃতিও জারি করা হয়েছে। সেখানেই বলা হয়েছে নরেন্দ্র মোদী রোমানিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোলে লনেলকে ফোন করেন।

এদিকে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পড়ুয়া শিক্ষার্থী সহ ইউক্রেনে এখনও যে ভারতীয়রা আটকে পড়ে রয়েছেন, তাঁদের ফেরাতে বিশেষ দূত হিসেবে ইউক্রেনের প্রতিবেশী দেশগুলোতে যাবেন চার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া যাবেন রোমানিয়া। কিরেন রিজিজু স্লোভাক প্রজাতন্ত্র, হরদীপ পুরী হাঙ্গেরি ও ভিকে সিংহ পোল্যান্ডে যাবেন। ভারতীয়দের উদ্ধার করে নিয়ে আসার প্রক্রিয়ার তদারকি ও সমন্বয় সাধন করবেন এই চার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।  পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি এ কথা জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভারতীয়দের উদ্ধার করে নিয়ে আসার চলতি প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানাতে গিয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরের অরিন্দম বাগচি বলেছেন, এখনও পর্যন্ত ছয়টি উড়ান ১৪০০ ভারতীয়কে নিয়ে দেশে ফিরেছে। এর মধ্যে চারটি উড়ান দেশে ফিরেছে রোমানিয়ার বুখারেস্ট থেকে। দুটি উড়ান দেশে এসেছে হাঙ্গেরির বুদাপেস্ট থেকে। বাগচি আরও বলেছেন, যুদ্ধ শুরুর পূর্বেই আমাদের নির্দেশিকা জারির পর প্রায় ৮ হাজার ভারতীয় ইউক্রেন ছেড়েছেন।

বাগচি ভারতীয়দের সরাসরি সীমান্তে না আসার আর্জি জানিয়েছেন। কারণ, সীমান্তগুলোতে ভীড় রয়েছে এবং উদ্ধারের কাজে সময় লাগবে। তিনি বলেছেন, ইউক্রেনের পরিস্থিতি এখনও জটিল ও উদ্বেগজনক। কিন্তু এরইমধ্যে উদ্ধার অভিযান ত্বরান্বিত করা গিয়েছে।

তিনি বলেছেন, আমরা ভারতীয়দের অনুরোধ করছে, সরাসরি সীমান্তে যাবেন না। কারণ, সেখানে ভীড় রয়েছে। উদ্ধারের কাজ সময়সাপেক্ষ। নিকটবর্তী শহরে যান এবং সেখানে আশ্রয় নিন। আমরা সেখানে ব্যবস্থা করছি, আমাদের দল আপনাদের সাহায্য করবে। আমাদের পর্যাপ্ত উড়ান রয়েছে।

সাংবাদিক বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, কিয়েভ, বুখারেস্ট, বুদাপেস্ট ও ওয়ারশের ভারতীয় দূতাবাস উদ্ধার কাজের ক্ষেত্রে বাস পরিষেবা নিয়ে কাজ করছে। এর পাশাপাশি যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে মানবিক সাহায্য পাঠানো অব্যহত রাখবে ভারত। যুদ্ধজনিত পরিস্থিতিতে দুর্গতদের জন্য ওষুধপত্র সহ মানবিক সাহায্য পাঠানোর অঙ্গীকার করেছে ভারত। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক