০৮:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খারকিভ থেকে ভারতীয়দের ফেরানো শীর্ষ অগ্রাধিকার: শ্রিংলা

রুশ-ইউক্রেন সঙ্কট চূড়ান্ত পরিণতির দিকে এগোচ্ছে। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ দখলে এবার সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিচ্ছে পুতিনের রাশিয়া। এমতাবস্থায়, কিয়েভ ছেড়েছেন সেখানে বসবাসরত সকল ভারতীয়। ০১ মার্চ, মঙ্গলবার, এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এমনটিই জানালেন ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব শ্রী হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।

অভিজ্ঞ এই কূটনীতিক বলেন, “আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি কিয়েভে বসবাসরত সকল ভারতীয় ইতোমধ্যে শহর ছেড়েছেন। রাশিয়ার সামরিক অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে আমাদের দূতাবাসও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কেননা এই রিপোর্ট তৈরির পর থেকে কিয়েভ থেকে কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। কিয়েভে কর্মরত আমাদের সকল কর্মীকেও সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এ মুহূর্তে ইউক্রেনের অন্যান্য শহর, বিশেষ করে খারকিভ এবং সংলগ্ন সংঘাতপূর্ণ এলাকাগুলোতে থাকা ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনাই আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।”

শ্রিংলা জানিয়েছেন, “ভারত তৎপর যুদ্ধবিদ্ধস্ত ইউক্রেন থেকে ভারতীয় পড়ুয়া ও অন্যান্য নাগরিকদের ফিরিয়ে আনতে। সে জন্য কিয়েভ ছেড়ে তাঁরা কোন পথে আসবে, তা নিয়েই আমরা আলোচনা চালু রেখেছি। বুখারেস্ট এবং বুদাপেস্টের পাশাপাশি পোল্যান্ড এবং স্লোভাকের বিমানবন্দরগুলোও ফ্লাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহার করা হবে। আগামী তিনদিনের মধ্যে ভারতীয় নাগরিকদের ইউক্রেন থেকে বের করে আনা হবে। সে জন্য ২৬টি ফ্লাইট নির্ধারিত হয়েছে। সেইমতোই পরিকল্পনা করা হয়েছে।”

পররাষ্ট্রসচিব বলেছেন, “৮ মার্চ পর্যন্ত ভারত মোট ৪৬টি বিমান চালাবে। তার মধ্যে ২৯টি বিমান বুখারেস্ট থেকে, ১০টি বুদাপেস্ট থেকে, ছয়টি পোল্যান্ড থেকে এবং একটি স্লোভাকিয়া থেকে চালানো হবে। এছাড়া বিমানবাহিনীর একটি বিমান বুখারেস্ট থেকে আটক ভারতীয়দের নিয়ে দেশে ফিরবে।”

উল্লেখ্য, ‘অপারেশন গঙ্গা’-এর অধীনে ইউক্রেনের সংঘাতপূর্ণ অঞ্চল থেকে ভারতীয়দের সরিয়ে নেওয়ার জন্য ০৯ টি ফ্লাইট ইতিমধ্যে ইউক্রেনে আটকে থাকা ১০০০ জনেরও বেশি ছাত্রকে ফিরিয়ে এনেছে।

শ্রিংলা বলেন, “ভারতীয় নাগরিকদের প্রত্যাবাসনের জন্য বুধবার ভোর চারটেতে একটি সি-১৭ আইএএফ বিমান রোমানিয়ার উদ্দেশ্যে উড়ে যাবে। ইউক্রেনে আনুমানিক ২০ হাজার ভারতীয় পড়ুয়া ছিল। সরকার যখন প্রথমে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল, তখন ২০ হাজার ভারতীয় ছাত্র-ছাত্রী ও প্রবাসী ছিল ইউক্রেনে। সেই সংখ্যা থেকে আনুমানিক ১২ হাজার ইউক্রেন ছেড়ে চলে এসেছে। অর্থাৎ ইউক্রেনে আমাদের নাগরিকদের মোট সংখ্যার ৬০ শতাংশ ইতোমধ্যে দেশ ছাড়তে পেরেছেন।”

বাকি ৪০ শতাংশের বিষয়ে শ্রিংলা বলেন, “বাকিদের মধ্যে মোটামুটি অর্ধেক খারকিভ ও সুমির মতো সংঘাতপূর্ণ এলাকায় রয়ে গেছে। আর বাকি অর্ধেক হয় পৌঁছে গেছে ইউক্রেনের পশ্চিম সীমান্ত, নতুবা ইউক্রেনের পশ্চিম অংশের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। তারা সাধারণত সংঘাতপূর্ণ এলাকার বাইরে রয়েছে বলেই আমরা জানি।”

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শ্রিংলা রাশিয়া ও ইউক্রেনের রষ্ট্রদূতদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাদের শ্রিংলা জানিয়েছেন, খারকিভ ও অন্য এলাকায় যে ভারতীয়রা আছেন, তারা যাতে নিরাপদে সীমান্তে পৌঁছাতে পারে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। দুই রাষ্ট্রদূতই সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক

ট্যাগ:
জনপ্রিয়

খারকিভ থেকে ভারতীয়দের ফেরানো শীর্ষ অগ্রাধিকার: শ্রিংলা

প্রকাশ: ১২:৫২:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ মার্চ ২০২২

রুশ-ইউক্রেন সঙ্কট চূড়ান্ত পরিণতির দিকে এগোচ্ছে। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ দখলে এবার সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিচ্ছে পুতিনের রাশিয়া। এমতাবস্থায়, কিয়েভ ছেড়েছেন সেখানে বসবাসরত সকল ভারতীয়। ০১ মার্চ, মঙ্গলবার, এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এমনটিই জানালেন ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব শ্রী হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।

অভিজ্ঞ এই কূটনীতিক বলেন, “আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি কিয়েভে বসবাসরত সকল ভারতীয় ইতোমধ্যে শহর ছেড়েছেন। রাশিয়ার সামরিক অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে আমাদের দূতাবাসও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কেননা এই রিপোর্ট তৈরির পর থেকে কিয়েভ থেকে কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। কিয়েভে কর্মরত আমাদের সকল কর্মীকেও সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এ মুহূর্তে ইউক্রেনের অন্যান্য শহর, বিশেষ করে খারকিভ এবং সংলগ্ন সংঘাতপূর্ণ এলাকাগুলোতে থাকা ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনাই আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।”

শ্রিংলা জানিয়েছেন, “ভারত তৎপর যুদ্ধবিদ্ধস্ত ইউক্রেন থেকে ভারতীয় পড়ুয়া ও অন্যান্য নাগরিকদের ফিরিয়ে আনতে। সে জন্য কিয়েভ ছেড়ে তাঁরা কোন পথে আসবে, তা নিয়েই আমরা আলোচনা চালু রেখেছি। বুখারেস্ট এবং বুদাপেস্টের পাশাপাশি পোল্যান্ড এবং স্লোভাকের বিমানবন্দরগুলোও ফ্লাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহার করা হবে। আগামী তিনদিনের মধ্যে ভারতীয় নাগরিকদের ইউক্রেন থেকে বের করে আনা হবে। সে জন্য ২৬টি ফ্লাইট নির্ধারিত হয়েছে। সেইমতোই পরিকল্পনা করা হয়েছে।”

পররাষ্ট্রসচিব বলেছেন, “৮ মার্চ পর্যন্ত ভারত মোট ৪৬টি বিমান চালাবে। তার মধ্যে ২৯টি বিমান বুখারেস্ট থেকে, ১০টি বুদাপেস্ট থেকে, ছয়টি পোল্যান্ড থেকে এবং একটি স্লোভাকিয়া থেকে চালানো হবে। এছাড়া বিমানবাহিনীর একটি বিমান বুখারেস্ট থেকে আটক ভারতীয়দের নিয়ে দেশে ফিরবে।”

উল্লেখ্য, ‘অপারেশন গঙ্গা’-এর অধীনে ইউক্রেনের সংঘাতপূর্ণ অঞ্চল থেকে ভারতীয়দের সরিয়ে নেওয়ার জন্য ০৯ টি ফ্লাইট ইতিমধ্যে ইউক্রেনে আটকে থাকা ১০০০ জনেরও বেশি ছাত্রকে ফিরিয়ে এনেছে।

শ্রিংলা বলেন, “ভারতীয় নাগরিকদের প্রত্যাবাসনের জন্য বুধবার ভোর চারটেতে একটি সি-১৭ আইএএফ বিমান রোমানিয়ার উদ্দেশ্যে উড়ে যাবে। ইউক্রেনে আনুমানিক ২০ হাজার ভারতীয় পড়ুয়া ছিল। সরকার যখন প্রথমে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল, তখন ২০ হাজার ভারতীয় ছাত্র-ছাত্রী ও প্রবাসী ছিল ইউক্রেনে। সেই সংখ্যা থেকে আনুমানিক ১২ হাজার ইউক্রেন ছেড়ে চলে এসেছে। অর্থাৎ ইউক্রেনে আমাদের নাগরিকদের মোট সংখ্যার ৬০ শতাংশ ইতোমধ্যে দেশ ছাড়তে পেরেছেন।”

বাকি ৪০ শতাংশের বিষয়ে শ্রিংলা বলেন, “বাকিদের মধ্যে মোটামুটি অর্ধেক খারকিভ ও সুমির মতো সংঘাতপূর্ণ এলাকায় রয়ে গেছে। আর বাকি অর্ধেক হয় পৌঁছে গেছে ইউক্রেনের পশ্চিম সীমান্ত, নতুবা ইউক্রেনের পশ্চিম অংশের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। তারা সাধারণত সংঘাতপূর্ণ এলাকার বাইরে রয়েছে বলেই আমরা জানি।”

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শ্রিংলা রাশিয়া ও ইউক্রেনের রষ্ট্রদূতদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাদের শ্রিংলা জানিয়েছেন, খারকিভ ও অন্য এলাকায় যে ভারতীয়রা আছেন, তারা যাতে নিরাপদে সীমান্তে পৌঁছাতে পারে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। দুই রাষ্ট্রদূতই সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক