০৩:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারতের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় জাপান গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার: শ্রিংলা

জাপানকে ভারতের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার অন্যতম প্রধান শরিক ও অংশীদার হিসেবে আখ্যা দিলেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শ্রী হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। গত ২৪ ফেব্রুয়ারী, বৃহস্পতিবার, ভারতের অনন্ত সেন্টার এবং নয়াদিল্লীস্থ জাপানের দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত ‘ভারত-জাপান: সহযোগিতার ৭০ বছর এবং এগিয়ে যাওয়ার পথ’ -শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।

এদিন, দু দেশের মধ্যকার চীন আধ্যাত্মিক, সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক এবং সভ্যতাগত সম্পর্ক ও মেলবন্ধন নিয়ে আলোচনা করেন শ্রিংলা। তিনি বলেন, “গত ৭০ বছরে জাপান ভারতের অন্যতম প্রধান মিত্র দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এখনও অবধি জাপান আমাদের সবচেয়ে বিশ্বস্ত অংশীদার। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী মোদীর জাপান সফর আমাদের সম্পর্ককে এক বিশেষ মাত্রা দিয়েছে। কোয়াড গঠন এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে অংশীদারিত্বের ফলে বিগত কয়েক বছরে আমাদের সম্পর্ক এক বিস্তৃত পরিসরে ছড়িয়ে পড়েছে।”

এসময়, কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭০ বছর পূর্তি হওয়াতে চলতি বছর জুড়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা করা হয়েছে বলেও জানান শ্রিংলা। অভিজ্ঞ এই কূটনীতিক আরও বলেন, “আমাদের অগ্রযাত্রায় জাপানের ভূমিকা অবিস্মরণীয়। আমাদের আইকনিক দিল্লী মেট্রোর ফলে, আমরা যেভাবে শহুরে গতিশীলতার কল্পনা করি, তার আমূল বদল এসেছে। মুম্বাই-আমেদাবাদ হাই স্পিড রেল (এমএএইচএসআর), দিল্লি-মুম্বাই ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডোর (ডিএমআইসি) এবং ডেডিকেটেড ফ্রেইট করিডোর (ডিএফসি) এর মতো ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে।”

বিগত কয়েক বছরে জাপান ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ ও জোরালো হয়েছে উল্লেখ করে শ্রিংলা বলেন, “সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্ব পূর্বের চেয়ে অনেক বেড়েছে। তথাপি আমাদের বিদ্যমান সুসম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ ও দৃঢ় করতে আমাদেরকে একযোগে কাজ করতে হবে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের মিত্র হওয়ায় স্বভাবতই আমরা বিশ্বজুড়ে লাইমলাইটে থাকবো কেননা বিশ্ব ভূ-রাজনীতির মোড় কিছুটা হলেও ইন্দো-প্যাসিফিকের দিকে এগিয়ে আসছে।”

তাছাড়া, ভারতের অ্যাক্ট ইস্ট পলিসিতেও ক্রমবর্ধমান স্যালিয়েন্স রয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব শ্রিংলা। তিনি বলেন, “ভারত-জাপান অ্যাক্ট ইস্ট ফোরামের অধীনে কানেক্টিভিটি এবং অন্যান্য উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হচ্ছে, যেগুলো ভারতে জাপানের রাষ্ট্রদূত এবং আমি যৌথ সভাপতিত্ব করেছি। এভাবে, ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের উন্নয়নে অবদান রাখছি আমরা৷ তাছাড়া, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এসব প্রকল্পের দিকটা হলো উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এর অবস্থান। এছাড়াও, আমরা বিভিন্ন আঞ্চলিক এবং বহুপাক্ষিক ফোরামে অন্যান্য সমমনা অংশীদারদের সাথে যুক্ত হতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছি।”

মহামারী পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধারেও একযোগে কাজের অঙ্গীকার শ্রিংলার গলায়। এ লক্ষ্যে তিনি বলেন, “উভয় দেশেরই লক্ষ্য হওয়া উচিত বিভিন্ন খাতে অংশীদারিত্ব শক্তিশালী করা। যেমন:

* প্রতিরক্ষা এবং কৌশলগত সম্পর্ক উন্নত করা, বিশেষ করে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম এবং প্রযুক্তিতে

* সরবরাহ চেইনগুলোকে আরও স্থিতিস্থাপক, বিশ্বস্ত এবং সুরক্ষিত করতে পুনরায় কাজ করা

* গ্রীন এনার্জি পার্টনারশিপের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমিত করার জন্য নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করার সময় উভয় দেশের জন্য শক্তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা

* উত্পাদন এবং এমএসএমই সেক্টরে নতুন উদ্ভাবনী অংশীদারিত্ব তৈরি করা

খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক

ট্যাগ:
জনপ্রিয়

ভারতের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় জাপান গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার: শ্রিংলা

প্রকাশ: ০৫:৪৭:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২

জাপানকে ভারতের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার অন্যতম প্রধান শরিক ও অংশীদার হিসেবে আখ্যা দিলেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শ্রী হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। গত ২৪ ফেব্রুয়ারী, বৃহস্পতিবার, ভারতের অনন্ত সেন্টার এবং নয়াদিল্লীস্থ জাপানের দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত ‘ভারত-জাপান: সহযোগিতার ৭০ বছর এবং এগিয়ে যাওয়ার পথ’ -শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।

এদিন, দু দেশের মধ্যকার চীন আধ্যাত্মিক, সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক এবং সভ্যতাগত সম্পর্ক ও মেলবন্ধন নিয়ে আলোচনা করেন শ্রিংলা। তিনি বলেন, “গত ৭০ বছরে জাপান ভারতের অন্যতম প্রধান মিত্র দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এখনও অবধি জাপান আমাদের সবচেয়ে বিশ্বস্ত অংশীদার। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী মোদীর জাপান সফর আমাদের সম্পর্ককে এক বিশেষ মাত্রা দিয়েছে। কোয়াড গঠন এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে অংশীদারিত্বের ফলে বিগত কয়েক বছরে আমাদের সম্পর্ক এক বিস্তৃত পরিসরে ছড়িয়ে পড়েছে।”

এসময়, কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭০ বছর পূর্তি হওয়াতে চলতি বছর জুড়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা করা হয়েছে বলেও জানান শ্রিংলা। অভিজ্ঞ এই কূটনীতিক আরও বলেন, “আমাদের অগ্রযাত্রায় জাপানের ভূমিকা অবিস্মরণীয়। আমাদের আইকনিক দিল্লী মেট্রোর ফলে, আমরা যেভাবে শহুরে গতিশীলতার কল্পনা করি, তার আমূল বদল এসেছে। মুম্বাই-আমেদাবাদ হাই স্পিড রেল (এমএএইচএসআর), দিল্লি-মুম্বাই ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডোর (ডিএমআইসি) এবং ডেডিকেটেড ফ্রেইট করিডোর (ডিএফসি) এর মতো ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে।”

বিগত কয়েক বছরে জাপান ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ ও জোরালো হয়েছে উল্লেখ করে শ্রিংলা বলেন, “সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্ব পূর্বের চেয়ে অনেক বেড়েছে। তথাপি আমাদের বিদ্যমান সুসম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ ও দৃঢ় করতে আমাদেরকে একযোগে কাজ করতে হবে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের মিত্র হওয়ায় স্বভাবতই আমরা বিশ্বজুড়ে লাইমলাইটে থাকবো কেননা বিশ্ব ভূ-রাজনীতির মোড় কিছুটা হলেও ইন্দো-প্যাসিফিকের দিকে এগিয়ে আসছে।”

তাছাড়া, ভারতের অ্যাক্ট ইস্ট পলিসিতেও ক্রমবর্ধমান স্যালিয়েন্স রয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব শ্রিংলা। তিনি বলেন, “ভারত-জাপান অ্যাক্ট ইস্ট ফোরামের অধীনে কানেক্টিভিটি এবং অন্যান্য উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হচ্ছে, যেগুলো ভারতে জাপানের রাষ্ট্রদূত এবং আমি যৌথ সভাপতিত্ব করেছি। এভাবে, ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের উন্নয়নে অবদান রাখছি আমরা৷ তাছাড়া, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এসব প্রকল্পের দিকটা হলো উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এর অবস্থান। এছাড়াও, আমরা বিভিন্ন আঞ্চলিক এবং বহুপাক্ষিক ফোরামে অন্যান্য সমমনা অংশীদারদের সাথে যুক্ত হতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছি।”

মহামারী পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধারেও একযোগে কাজের অঙ্গীকার শ্রিংলার গলায়। এ লক্ষ্যে তিনি বলেন, “উভয় দেশেরই লক্ষ্য হওয়া উচিত বিভিন্ন খাতে অংশীদারিত্ব শক্তিশালী করা। যেমন:

* প্রতিরক্ষা এবং কৌশলগত সম্পর্ক উন্নত করা, বিশেষ করে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম এবং প্রযুক্তিতে

* সরবরাহ চেইনগুলোকে আরও স্থিতিস্থাপক, বিশ্বস্ত এবং সুরক্ষিত করতে পুনরায় কাজ করা

* গ্রীন এনার্জি পার্টনারশিপের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমিত করার জন্য নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করার সময় উভয় দেশের জন্য শক্তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা

* উত্পাদন এবং এমএসএমই সেক্টরে নতুন উদ্ভাবনী অংশীদারিত্ব তৈরি করা

খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক