বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউক্রেনে সম্ভাব্য রুশ হামলাকে কেন্দ্র করে বিশ্বজুড়ে ক্রমশ বাড়ছে উত্তেজনা! এমতাবস্থায়, পূর্ব ইউরোপের দেশটি থেকে নিজেদের নাগরিকদের সরিয়ে নিচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র। একই পথে পা বাড়িয়েছে ভারতও।
সরকারীভাবে দেয়া ঘোষণায়, ভারতীয়দেরকে অযথা ইউক্রেন না যাবার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারী, মঙ্গলবার, এক বিবৃতির মাধ্যমে পরামর্শটি জারি করে কিয়েভে নিযুক্ত ভারতীয় দূতাবাস। একই সঙ্গে, ইউক্রেনে অবস্থানরত ভারতীয় ছাত্রদের সাময়িকভাবে ইউক্রেন ত্যাগের পরামর্শও দেয়া হয়।
এমতাবস্থায়, পরিস্থিতি সামাল দিতে ইউক্রেন থেকে আসা বিমান বা ইউক্রেনে পাঠানোর জন্য বিমানের সংখ্যার উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে ভারতীয় সরকার। এয়ার বাবল ব্যবস্থার মাধ্যমে ইউক্রেন থেকে ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করছে ভারত সরকার। বেসামরিক উড়ান মন্ত্রণালয়ের তরফে জারি করা একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “যেকোনও সংখ্যক বিমান, এমনকি চার্টার বিমানও চলাচল করতে পারে ইউক্রেন-ভারত রুটে।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “বেসামরিক উড়ান মন্ত্রণালয় এয়ার বাবল ব্যবস্থার মাধ্যমে ভারত ও ইউক্রেনের মধ্যে সমস্ত বিমানের সংখ্যা এবং আসন সংখ্যার মধ্যে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে। ইউক্রেন এবং ভারতের মধ্যে যে কোনও সংখ্যায় বিমান চলাচল করতে পারে, এমনকি চার্টার বিমানও চলাচল করতে পারবে। চাহিদা বৃদ্ধির কারণে ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোকে ফ্লাইট মাউন্ট করার জন্য জানানো হয়েছে। বেসামরিক উড়ান মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একযোগে কাজ করছে।”
গতকাল জানা গিয়েছিলো, ভারতে ফেরার বিমানের টিকিট কাটতে পারছেন না ইউক্রেনে বসবাসকারী বহু ভারতীয়। তারপরই ইউক্রেনে ভারতের দূতাবাসের তরফে জানানো হয়েছিল যে, বিমানের টিকিট না পাওয়া নিয়ে অবগত তাঁরা। তবে ভারতীয়দের এই বিষয় নিয়ে চিন্তা করতে বারণ করা হয়েছিল।
গতকালই ইউক্রেনে ভারতীয় দূতাবাসের তরফে টুইট করে জানানা হয়েছিল যে, বিমানের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে দূতাবাসের তরফে পরিষ্কারভাবে কিছু জানানো হয়নি যে অতিরিক্ত বিমান চলাচল কবে কার্যকর হবে।
দূতাবাসের তরফে টুইটে জানানো হয়েছিল, “ইউক্রেন থেকে ভারতের বিমানের অনুপলব্ধতা নিয়ে ভারতীয় দূতাবাস বেশ কয়েকটি আবেদন পেয়েছে। এই বিষয়ে শিক্ষার্থীদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে ভারতে যাওয়ার জন্য দ্রুততম উপলব্ধ এবং সুবিধাজনক বিমান বুক করুন।”
টুইটে আরও বলা হয়েছে, “বর্তমানে ইউক্রেনিয়ান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস, এয়ার আরবিয়া, ফ্লাই দুবাই, কাতার এয়ারওয়েসের বিমানের পরিষেবা বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে।” কাল ইউক্রেন থেকে বিমানের অপ্রতুলতার বিষয়টি সামনে আসার পরই আজ বিমানের সংখ্যা বাড়ানো নিয়ে নির্দেশ দিল ভারতের অসামরিক উড়ান মন্ত্রক।
প্রসঙ্গত, এয়ার বাবল ব্যবস্থা হল কোভিড-১৯ অতিমারীর কারণে যখন নিয়মিত আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা স্থগিত করা হয় তখন বাণিজ্যিক যাত্রী পরিষেবা পুনরায় চালু করার লক্ষ্যে দুই দেশের মধ্যে অস্থায়ী ব্যবস্থা। বর্তমানে ৩৫ টি দেশের সঙ্গে ভারতের এয়ার বাবল ব্যবস্থা রয়েছে। কোভিড অতিমারীর কারণে ২০২০ সালের ২৩ মার্চ থেকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক যাত্রী বিমান পরিষেবা স্থগিত রয়েছে।
খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক