আগামী ১২ মাসের মধ্যে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ‘সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তি’ (সিইসিএ) স্বাক্ষরিত হতে চলেছে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। এটি বাস্তবায়নে উভয় পক্ষ পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে একটি অন্তর্বর্তী চুক্তি করবে বলেও জানান তিনি।
গত ১১ ফেব্রুয়ারী, শুক্রবার, নয়াদিল্লিতে অজি বাণিজ্য, পর্যটন ও বিনিয়োগ মন্ত্রী ড্যান তেহানের সঙ্গে বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন ভারতীয় মন্ত্রী গোয়েল। তিনি বলেন, “ভারত এবং অস্ট্রেলিয়া ২০২২ সালের মার্চ মাস নাগাদ অন্তর্বর্তী চুক্তি স্বাক্ষর করবে বলে আশা করা হচ্ছে। অন্তর্বর্তী চুক্তির আওতায় থাকা ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে পণ্য, পরিষেবা, উত্সের নিয়ম, স্যানিটারি এবং ফাইটোস্যানিটারি ব্যবস্থা, শুল্ক পদ্ধতি এবং আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক সমস্যা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।”
এসময়, ড্যান তেহানের সঙ্গে আলোচনাকে অত্যন্ত ‘ফলপ্রসূ’ হিসেবে ঘোষণা করেন গোয়েল। পাশাপাশি ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির ক্ষেত্রেও অনেক বেশি অগ্রগতি সাধিত হয়েছে বলে জানান তিনি।
মোদী মন্ত্রীসভার গুরুত্বপূর্ণ এই মন্ত্রী বলেন, “স্বভাবতই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। বিভিন্ন ক্ষেত্রেই আমরা এঁকে অন্যের পরিপূরক হিসেবে কাজ করছি। গণতান্ত্রিক পক্ষ হিসেবে উভয় রাষ্ট্রের মধ্যেই আলোচনার উন্মুক্ততা, উদ্বেগ এবং সংবেদনশীলতা রয়েছে।”
উভয় রাষ্ট্রের মধ্যকার বিদ্যমান সম্পর্কের উষ্ণতা এবং হৃদ্যতার জন্যে দুই প্রধানমন্ত্রীর প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন গোয়েল। পাশাপাশি উভয় রাষ্ট্রের সিনিয়র কর্মকর্তাদেরও প্রশংসা করেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, “ভারত ও অস্ট্রেলিয়া ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে একত্রিত। ভারত মহাসাগর দ্বারা সংযুক্ত। আমাদের ইতিহাস আমাদেরকে এক কাতারে এনে দাঁড় করায়। আমাদের জনগণের মধ্যে দারুণ বোঝাপড়া রয়েছে। তাই সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তি আমাদের জন্য এক নতুন সম্ভাবনার সুযোগ উন্মোচন করবে।”
যৌথ বিবৃতি প্রদানকালে এক প্রশ্নের জবাবে গোয়েল বলেন, “কোয়াড গঠনের ফলে রাজনৈতিক, কূটনৈতিকভাবে আমরা চারটি দেশ যেমন একত্রিত হয়েছি। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও আমরা এঁকে অন্যের কাছাকাছি আসতে পারছি। তাই বিশ্ব মঙ্গলের জন্য এই জোটের ভূমিকা অনেক।”
এক পর্যায়ে অজি বাণিজ্যমন্ত্রী ড্যান তেহান ঘোষণা দেন, আগামী ২১ ফেব্রুয়ারী থেকে গোটা বিশ্বের জন্য খুলে দেয়া হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার সীমান্ত। ভারতীয়দেরকেও অস্ট্রেলিয়া সফরের আমন্ত্রণ জানান তিনি। আসন্ন অন্তর্বর্তী চুক্তির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “চুক্তিটি আমাদের দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হবে। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের উষ্ণতা এবং স্বচ্ছতার যে দৃষ্টান্ত, সেটি অত্যন্ত শক্তিশালী অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করবে আমাদের।”
খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক