আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে সাইবারস্পেস ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রচেষ্টার নিন্দা জানিয়েছে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। ১২ ফেব্রুয়ারী, শনিবার, দু দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের উদ্বোধনী সাইবার ফ্রেমওয়ার্ক সংলাপের পরে জারি করা একটি যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “উভয় রাষ্ট্রই সাইবারস্পেস এর আন্তর্জাতিক মান, নিয়ম এবং কাঠামো উন্নয়নে জাতিসংঘ সহ বিভিন্ন বহুপাক্ষিক ফোরামে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করতে এবং সহযোগিতামূলকভাবে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এর মধ্যে রয়েছে, আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের মাধ্যমে অত্যাধুনিক এবং উদীয়মান প্রযুক্তি তৈরী ও উন্নয়ন; অপরাধমূলক কর্মকান্ডের উদ্দেশ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার প্রতিরোধে একটি ব্যাপক আন্তর্জাতিক কনভেনশন করতে অ্যাডহক কমিটি গঠন; আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার প্রেক্ষাপটে সাইবারস্পেসে দায়িত্বশীল রাষ্ট্রীয় আচরণের অগ্রগতির বিষয়ে জাতিসংঘের সরকারি বিশেষজ্ঞদের গ্রুপের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা; এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার প্রেক্ষাপটে তথ্য টেলিযোগাযোগ ক্ষেত্রে উন্নয়নের বিষয়ে জাতিসংঘের ওপেন-এন্ডেড ওয়ার্কিং গ্রুপ এর সাথে সমন্বয়।”
এসময়, ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারিত্বের অধীনে সাইবার এবং সাইবার-সক্ষম অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সহযোগিতা জোরদারকে স্বাগত জানায় ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “দুই মন্ত্রী নিরাপদ, স্থিতিস্থাপক এবং বিশ্বস্ত প্রযুক্তির প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। রাষ্ট্রীয় এবং অ-রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধিদের দ্বারা দূষিত সাইবার কার্যকলাপের উল্লেখযোগ্য হুমকি মোকাবেলায় একসাথে কাজ করার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন তারা।”
এছাড়া, টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্কসমূহর নিরাপত্তা এবং স্থিতিস্থাপকতার গুরুত্ব; ৫জি এবং ৬জি সহ পরবর্তী প্রজন্মের টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্কসমূহকে রক্ষা করার জন্য একে অপরের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার প্রয়োজনীয়তা নিয়েও আলোচনা করেছেন উভয় মন্ত্রী।
এসবের পাশাপাশি, ২০২১ সালের জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত চতুর্থ অস্ট্রেলিয়া-ভারত দ্বিপাক্ষিক সাইবার নীতি সংলাপের অগ্রগতির প্রশংসা করা হয়েছে যৌথ বিবৃতিটিতে। একই সঙ্গে, চলতি বছরের মার্চ মাসে ইনফরমেশন কমিউনিকেশন টেকনোলজিসে উদ্বোধনী জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সময়সূচীকেও স্বাগত জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।
যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, দুই মন্ত্রীই সাইবার গভর্নেন্স, সাইবার নিরাপত্তা, সক্ষমতা বৃদ্ধি, উদ্ভাবন, ডিজিটাল অর্থনীতি এবং সাইবার ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতাকে ভারত-অস্ট্রেলিয়া সম্পর্কের অপরিহার্য স্তম্ভ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘সেন্টার অফ এক্সিলেন্স ফর ক্রিটিক্যাল অ্যান্ড এমার্জিং টেকনোলজি পলিসি’ -ভারতের বেঙ্গালুরুতে অবস্থিত সাইবার এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার জন্য উভয় দেশের দীর্ঘমেয়াদী প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করে।
জানা গিয়েছে, আলোচনাকালে উভয় মন্ত্রীই একটি উন্মুক্ত, নিরাপদ, মুক্ত, অ্যাক্সেসযোগ্য, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ এবং আন্তঃপরিচালনাযোগ্য সাইবারস্পেস এবং প্রযুক্তির প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন; যা আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলবে।
আগামী বছরে দু দেশের মধ্যকার পরবর্তী পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সাইবার ফ্রেমওয়ার্ক সংলাপ আয়োজিত হবে বলে জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, কোয়াড পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক এবং অজি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে যোগ দিতে গত ১০ ফেব্রুয়ারী অস্ট্রেলিয়া যান জয়শঙ্কর। আগামী ১৩ তারিখ অবধি সেখানে অবস্থান করবেন তিনি।
খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক