পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে এবার উভয় দেশে অবস্থিত ধর্মীয় ও তীর্থস্থান ভ্রমণ পদ্ধতিকে সহজ করার আগ্রহ দেখিয়েছে ভারত। এ বিষয়ে আলোচনার জন্য ইসলামাবাদের কাছে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবও পাঠিয়েছে নয়াদিল্লী। গত ০৩ ফেব্রুয়ারী, বৃহস্পতিবার, এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বাগচী বলেন, “আমরা পাকিস্তানের নিকট একটা আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। এই বিষয়ে ভারত একটি পজিটিভ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হতে আগ্রহী। কোভিড অতিমারির পরিপ্রেক্ষিতে জমায়েত ও বিধি-নিষেধ জারি করা হলেও সচেতন থাকার চেষ্টা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা আশা করি যে আলোচনা করার পরিবেশ উন্মুক্ত হবে। এই যৌথ প্রোটোকল নিয়ে দীর্ঘ কয়েক বছর কোনও আলোচনায় বসেনি ভারত-পাকিস্তান। এবার তা স্বাভাবিকভাবে আলোচনায় বসা উচিত।”
প্রসঙ্গত, উভয় দেশের তীর্থযাত্রীদের বিশেষ অনুমতি দেওয়ার জন্য একটি প্রোটোকল রয়েছে। তবে সেইসব তীর্থক্ষেত্রের সংখ্যা নিতান্তই কম। তাই সেই সংখ্যার তালিকা বৃদ্ধি করার জন্য ভারতের একটি নয়া প্রস্তাবও রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, করোনা পরবর্তী সময়ে দু দেশের মধ্যে ধর্মীয় পর্যটন শিল্পে জোয়ার আনা ছাড়াও পাকিস্তানের সড়কপথ ব্যবহার করে আফগানিস্তানে গম, খাবার, ত্রাণ পাঠানোও লক্ষ্য ভারতের। ভারত-পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতির পর থেকে পাকিস্তান ভারতকে এই সড়কপথ ব্যবহার করতে দেয় না।
কিন্তু ১৯৭৪-এর যৌথ প্রোটোকল (দু দেশের নাগরিকদের তীর্থযাত্রা) নিয়ে কথাবার্তার সময় সড়কপথ ফের ব্যবহার করার অনুমতিও পাকিস্তানের থেকে ভারত এবার আদায় করতে পারবে বলে এদিন আশা প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী।
এদিকে, জানুয়ারীতে দুই দেশের সম্পর্ককে আরও শক্ত করতে পাকিস্তান হিন্দু কাউন্সিল করাচি থেকে জয়পুরে ১৬০ জন পাক হিন্দু তীর্থযাত্রীকে বিমান পরিষেবা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সেটিও এখনও আলোচনার টেবিলে রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
বস্তুত, প্রতি বছরই পাকিস্তান থেকে বহু হিন্দু ও শিখ সম্প্রদায়ের মানুষে ভারতের তীর্থস্থানগুলোতে পুণ্য অর্জনের জন্য আসেন। অপরদিকে বহু ভারতীয় শিখ, হিন্দু ও মুসলিম পাকিস্তানের বিখ্যাত গুরুদ্বার, মন্দির ও মসজিদে যান।
সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহেই ভারত ও পাকিস্তানের সরকারি কর্মকর্তাগণ পুণ্যার্থীদের তীর্থযাত্রা নিয়ে আলোচনায় বসতে পারেন। দু দেশের পুণ্যার্থীরা যাতে ২০টি তীর্থস্থান ভ্রমণের সুযোগ পান, তা নিয়েও কথা হবে। গত বছর কর্তারপুর করিডর খুলে দেওয়ার পর থেকেই পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে হিন্দু মন্দিরে তীর্থ করার জন্য উৎসাহী হয়ে রয়েছেন বহু শিখ।
খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক