জাতিসংঘের শান্তি কমিশনের নতুন সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছে ভারত। গত ০১ ফেব্রুয়ারী, মঙ্গলবার, নিউইয়র্কে মিশরের কাছ থেকে ২০২২ সেশনের জন্য এই দায়িত্ব গ্রহণ করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা। এরপরই তাঁকে শুভেচ্ছা জানান জাতিসংঘে নিযুক্ত ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টিএস তিরুমূর্তি।
রাবাব ফাতিমা সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় ভারতীয় কূটনীতিক জানান, “এটি আমাদের জন্য গর্বের বিষয় যে আমাদের প্রতিবেশী এই সঙ্কটময় বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দেয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নিয়েছে। এমন এক সময়ে তিনি দায়িত্ব নিলেন যখন বিশ্বব্যাপী মহামারী, অর্থনৈতিক মন্দা এবং বিভিন্ন সংঘাত চলমান!”
তিনি আরও বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে সৈন্য এবং পুলিশ প্রেরণের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠায় শীর্ষ অবদান রাখা দেশগুলোর একটি এবং নেতৃস্থানীয় কণ্ঠস্বর। বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশ অনন্য স্থান পেয়েছে।”
একই সময়ে জাতিসংঘে মিশরের প্রতিনিধি ওসামা মাহমুদ আবদেল খালেক এবং রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ফাতি আহমেদ ইদ্রিসকে নিষ্ঠার সঙ্গে জাতিসংঘের শান্তি কমিশনের দায়িত্ব পালন করায় অভিনন্দন জানান ভারতীয় কূটনীতিক। উল্লেখ্য, ২০১২ সালের পর আবারও জাতিসংঘের শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিশনের সভাপতি হলো বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার ইউএন পিস বিল্ডিং কমিশন এক টুইটের মাধ্যমে জানায়, শান্তি কমিশনের রাষ্ট্রদূত পর্যায়ের এক বৈঠকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নতুন সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশের রাবাব ফাতিমা। নতুন সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিশনের ২০২২ সালের আসন্ন ১৬তম অধিবেশনে সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন রাবাব ফাতিমা।
প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে শীর্ষ সৈন্য প্রেরণকারী এবং অর্থ সাহায্যদাতা দেশগুলো এই শান্তি কমিশনের সদস্য হিসাবে কাজ করে। বর্তমানে জাতিসংঘের বিভিন্ন শান্তি মিশনে সৈন্য পাঠানোর তালিকায় শীর্ষস্থানীয় অবস্থানে আছে বাংলাদেশ।
শান্তি কমিশনের নতুন সভাপতির জন্য পাঁচটি দিকনির্দেশনা মূলক পরামর্শও দেন তিরুমূর্তি। সেগুলো যথাক্রমে,
প্রথমত, মহামারী থেকে টেকসই রক্ষার্থে সবার জন্য ভ্যাকসিন নিশ্চিত করা। উন্নয়নশীল বিশ্বে এই হার বাঁড়াতে হবে। দ্বিতীয়ত, শাসনের স্থায়ী কাঠামো নির্মাণকল্পে প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, যা মানবাধিকার রক্ষা করবে এবং আইনের শাসন আনবে। এতে নারী, শিশু, শান্তি ও নিরাপত্তা এজেন্ডাকেও জোরালোভাবে সমর্থন করতে হবে।
তৃতীয়ত, সন্ত্রাসবাদের লাগাম টেনে ধরা। বিশেষ করে আফ্রিকা অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাসবাদের রাশ টেনে ধরতে হবে। শান্তিরক্ষা এবং শান্তি বিনির্মাণের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাতে হবে। চতুর্থত, ডিজিটাল পৃথিবীর সাথে তাল মিলিয়ে শান্তি প্রচেষ্টা এগিয়ে নিতে হবে। এবং সর্বশেষ, পঞ্চম পরামর্শ হিসেবে তিরুমূর্তি বলেন, টেকসই এবং পর্যাপ্ত অর্থায়নের দিকে মনযোগ দিতে হবে! খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক