আমেরিকা ও কানাডার সীমান্তে প্রবল ঠাণ্ডায় জমে মৃত্যু হল এক ভারতীয় পরিবারের চার সদস্যের। মৃতদের মধ্যে রয়েছে এক শিশুও। এই ঘটনায় ৪৭ বছর বয়সী স্টিভ শ্যান্ড নামে এক মানব পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে মার্কিন প্রশাসন। মনে করা হচ্ছে পাচারের জন্য ওই চার ভারতীয়কে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো। পরে কোনও কারণে তাঁদের ফেলে রেখে পালায় পাচারকারীরা। এরপর প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় তাঁদের মৃত্যু হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। দ্রুত পদক্ষেপের দাবি জানানো হয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে।
গত ২১ জানুয়ারী, শুক্রবার, এক টুইটবার্তায় জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, “আমেরিকা-কানাডা সীমান্ত এলাকায় সদ্যোজাত-সহ চার ভারতীয়র মৃত্যুর খবর পেয়ে আমি স্তম্ভিত। আমেরিকা ও কানাডার ভারতীয় দূতাবাসের আধিকারিকদের দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।”
সূত্রের খবর দুই দেশের প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে ভারত সরকার। ঘটনা প্রসঙ্গে মার্কিন মুলুকের ভারতীয় দূত তরণজিৎ সিং সান্ধু লেখেন, “এটি একটি দুর্ভাগ্যজনক ও মর্মান্তিক ঘটনা। ইতিমধ্যেই তদন্তের বিষয়ে আমেরিকার আধিকারিকদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। দূতাবাসের পক্ষ থেকে একটি দল মিনেসোটা যাচ্ছে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য।”
আমেরিকা ও কানাডা সীমান্তের ৯ থেকে ১০ কিলোমিটারের মধ্যেই নাকি মৃত দেহগুলো উদ্ধার হয়েছে। আর সেখানে এই মুহূর্তে মাইনাস ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। মনে করা হচ্ছে, রাতের অন্ধকারে সীমান্ত পার হতে গিয়েই ঠান্ডার বলি হয়েছে চার ভারতীয়। যদিও বিষয়টি এখনও তদন্ত সাপেক্ষ। তবে ঘটনাকে মর্মান্তিক হিসেব ব্যাখ্যা করেছেন কানাডার ভারতীয় হাইকমিশনার অজয় বিসারিয়া।
ওই চারজনের দেহ উদ্ধারের পর আমেরিকার সীমান্তরক্ষীদের চোখে পড়ে আরও পাঁচজন ওই এলাকাতে পায়ে হেঁটে এগিয়ে চলেছেন। তাঁরাও ভারতীয় ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁরা সীমান্ত পার করতেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁদের কাছে একটি ব্যাগপ্যাক পাওয়া গিয়েছে, যাতে রয়েছে ওই মৃত পরিবারের কিছু সামগ্রী। যে চারজনের মৃত্যু হয়েছে তাঁরা ওই একই দলে ছিলেন, পরে কোনও ভাবে দলছুট হয়ে যান। দুই ভারতীয়কে সীমান্ত পার করানোর সময়ই হাতেনাতে ধরা পড়েন স্টিভ শ্যান্ড। কোনও বৈধ নথি ছাড়াই ওই দুই ভারতীয়কে সীমান্ত পার করাচ্ছিলেন তিনি।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে ঠাণ্ডায় জমেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। রয়াল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার জেন ম্যাকল্যাচি জানান, শুধু অমানবিক ঠাণ্ডাই নয়, চারপাশে ধূ ধূ প্রান্তর আর ঘন অন্ধকার পেরোতে হয়েছিল ওই চারজনকে। ওই এলাকায় তাপমাত্রা প্রায় মাইনাস ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক