প্রথমবারের জন্য ভারত-মধ্য এশিয়া ভার্চুয়াল সম্মেলন আয়োজন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিনের বৈঠকে উপস্থিতদের উদ্দেশ্যে তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা দিলেন তিনি। সম্মলনে মোদী বলেন, “মধ্য এশিয়ার প্রতি বিশেষ নজর রয়েছে ভারতের, কারণ প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গে ভারত সর্বদা সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায়।”
সম্মলনে বক্তব্য রাখার সময় শুরুতেই মোদী বলেন, “আমরা সকলেই আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত। এই সম্মেলন থেকে ভারত ও মধ্য এশিয়ার মধ্যে সম্পর্ক সুদৃঢ় হবে এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা বজায় রাখার ক্ষেত্রে সকলে একসঙ্গে কাজ করবে।”
এদিনের সম্মেলনে মধ্য এশিয়ার পাঁচটি দেশ অংশগ্রহণ করেছিল। পাঁচটি দেশের তরফে তাদের প্রেসিডেন্ট সম্মলনে অংশ নেন। কাজাখস্তানের কাসিম-জোমার্ট টোকায়েভ, উজবেকিস্তানের শাভকাত মির্জিওয়েভ, তাজিকিস্তানের ইমোমালি রহমান, তুর্কমেনিস্তানের গুরবাংগুলি বারদিমুহামেদো এবং কিরগিজ প্রজাতন্ত্রের সাদির জাপারভ সম্মলনে অংশগ্রহণ করেন।
আগামী বছরগুলোতে ভারত ও মধ্য এশিয়ার মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা এবং উচ্চাভিলাষী দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রেখে কাজ করার জন্যই সম্মলনের আয়োজন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। মোদী বলে ভারত ও মধ্য এশিয়ার পরস্পরকে সাহায্য করার মাধ্যমেই আঞ্চলিক নিরাপত্তা বজায় রাখা এবং উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করবে।
এই প্রথম ভারত ও সেন্ট্রাল এশিয়ার রাষ্ট্রগুলোর রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে এই ধরনের সম্মলেনের আয়োজন করা হল। আয়োজিত প্রথম সম্মলনে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, “এই সম্মেলন মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সাথে দেশের ক্রমবর্ধমান সম্পৃক্ততার প্রতিফলন। মধ্য এশিয়ার দেশগুলো ভারতের বর্ধিত প্রতিবেশীদের একটি অংশ। ২০১৫ সালে মধ্য এশিয়ার সমস্ত দেশ সফর করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পরবর্তীকালে, ভারত ও দেশগুলোর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক ফোরামে উচ্চ পর্যায়ে মতবিনিময় হয়েছে।”
মূলত যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি, বাণিজ্যের পথকে আরও বিস্তৃত করা, আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে গোটা ভার্চুয়াল সামিটে। এদিকে এই দেশগুলোর মধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রী পর্যায়ে যোগাযোগ গড়ে উঠেছে আগেই। সেটিকে বলা হচ্ছে ভারত-মধ্যএশিয়া ডায়ালগ। গত ডিসেম্বরে দিল্লিতে তাদের মধ্যে আলোচনাও হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এই সামিটের তিনটি প্রধান উদ্দেশ্য রয়েছে। প্রথমত, ভারত ও মধ্য এশিয়ায় পারস্পারিক সহযোগিতা আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির জন্য অনিবার্য। দ্বিতীয় উদ্দেশ্য হল, সহযোগিতার জন্য একটি কার্যকর পরিকাঠামো তৈরি করতে হবে। এর ফলে স্টেক হোল্ডারদের মধ্যে প্রতিনিয়ত আলাপচারিতার সুযোগ স্থাপন হবে।
তৃতীয় উদ্দেশ্য হল, দেশগুলোর সহযোগিতার জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে। এর মাধ্যমে ভারত ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলো আগামী ৩ বছরে আঞ্চলিক সংযোগের জন্য একটি সমন্বিত পদ্ধতি গ্রহণ করতে পারবে। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক