বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০তম বিজয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে ভারতীয় রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সফরকে ঐতিহাসিক হিসেবে আখ্যা দিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
১৭ ডিসেম্বর, শুক্রবার, জারি করা এক বার্তায় ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, “রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সফরটিই প্রমাণ করে দেয় ভারত ও বাংলাদেশ মূল্যবোধ, পারস্পরিক বিশ্বাস এবং বোঝাপড়ার উপর ভিত্তিতে এঁকে অন্যের সঙ্গে কতো গভীরভাবে যুক্ত।”
এসময়, বাংলাদেশকে ভারতের প্রতিবেশী প্রথম নীতির এবং ‘অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি’র অন্যতম প্রধান স্তম্ভ হিসেবে আখ্যা দেয় ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাছাড়া, ভারত ও বাংলাদেশ বাণিজ্য ও সংযোগ, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, জলসম্পদ, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা, সংস্কৃতি এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগ সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শক্তিশালী এবং বহুমুখী দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা উপভোগ করছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে বার্তাটিতে।
বিবৃতিতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সফরকালীন বিভিন্ন কর্মসূচি তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি দু দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ তম বর্ষ উদযাপনের বিষয়েও আলোকপাত করা হয়েছে লিখায়।
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে ঢাকার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল প্রদর্শনী করা হয়েছে; দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বঙ্গবন্ধু চেয়ারের ঘোষণা দেয়া হয়েছে; এবং পাঁচ বছরের জন্য নতুন ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী মুক্তিযোদ্ধা সন্তান বৃত্তি প্রকল্পের সম্প্রসারণ করা হয়েছে।
তাছাড়া, বাংলাদেশে সফরকালে ভারতের রাষ্ট্রপতি মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত একটি টি-৫৫ ট্যাংক এবং একটি মিগ-২৯ যুদ্ধ বিমান বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষণ এবং প্রদর্শনের জন্য বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিকে উপহার হিসেবে দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গত বুধবার সকালে ঢাকায় আসেন ভারতের রাষ্ট্রপতি ও তার সফরসঙ্গীরা। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
সফরের প্রথম দিন সোনারগাঁও হোটেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন রামনাথ। পরে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং নৈশভোজে অংশ নেন।
দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার সকালে শেরেবাংলা নগরে জাতীয় প্যারেড ময়দানে বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে অংশ নেন কোবিন্দ। বিকালে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
সফরের তৃতীয় দিন শুক্রবার সকালে রমনা কালীমন্দিরের সংস্কার হওয়া ভবনের উদ্বোধন করেন। এ সময় মন্দির সংশ্লিষ্ট কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। এছাড়া মন্দিরে পূজা অর্চনাতেও অংশ নেন ভারতের রাষ্ট্রপ্রধান। এরপর দুপুরে দিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক