ভারতের ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতিতে বাংলাদেশ একটি বিশেষ স্থান দখল করে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। গত ১৫ ডিসেম্বর, বুধবার, ভারতের রাষ্ট্রপতির সম্মানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের দেয়া নৈশভোজে সপরিবারে উপস্থিত হয়ে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে ব্যাপক এবং প্রাণবন্ত হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।
রামনাথ কোবিন্দ বলেন, “আমরা ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের ওপর জোর দিচ্ছি। ভারতের উন্নয়ন অংশীদার বাংলাদেশ। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে অংশীদারিত্বও ব্যাপক ও প্রাণবন্ত।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে তিনটি মেগা ইভেন্ট উদযাপনে অংশীদার হতে পেরে আমরা খুবই খুশি। বাংলাদেশ যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছে, এমন একটি সময়ে আমি এই অনুষ্ঠানগুলোতে উপস্থিত থাকতে পেরে খুবই আনন্দিত।”
জানা গিয়েছে, প্রেসিডেন্ট হামিদের দেয়া নৈশ ভোজে যোগ দিতে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় স্ত্রী সবিতা কোবিন্দ ও মেয়ে স্বাতী কোবিন্দকে নিয়ে বঙ্গভবনে পৌঁছান ভারতীয় রাষ্ট্রপতি। প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ এবং তার স্ত্রী রাশিদা হামিদ তাঁদের স্বাগত জানান। পরে বঙ্গভবনের ক্রেডেনশিয়াল হলে বৈঠকে বসেন তারা।
দুই দেশের পারষ্পরিক বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেন উভয় রাষ্ট্রপ্রধান। উভয় নেতা যোগাযোগ ও বাণিজ্য, মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহযোগিতা এবং উন্নয়ন অংশীদারিত্বসহ উভয় দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। উল্লেখ্য, করোনা মহামারী শুরু হওয়ার পর এই প্রথমবারের মতো বিদেশ সফর করছেন ভারতীয় রাষ্ট্রপতি।
এর আগে রাজধানীর একটি হোটেলে ভারতের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
প্রসঙ্গত, প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদের আমন্ত্রণে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বুধবার সকালে ঢাকায় আসেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। ঢাকায় পৌঁছানোর পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিমানবন্দরে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ তাকে স্বাগত জানান। সেখানে ভারতের রাষ্ট্রপতিকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। সফরের শুরুতে সকালে রামনাথ কোবিন্দ সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এরপর তিনি ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান।
উল্লেখ্য, ভারতের রাষ্ট্রপতি ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশের বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ‘গেস্ট অব অনার’ হিসেবে অংশ নেবেন। একই দিন বিকেলে রামনাথ কোবিন্দ জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় বাংলাদেশের বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর ঐতিহাসিক মুহূর্তে জাতির জনকের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং রক্তস্নাত বিজয়ের আবেগ ও আনন্দ উদ্যাপনের জন্য আয়োজিত ‘মহাবিজয়ের মহানায়ক’ অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
সফরের তৃতীয় দিন আগামী শুক্রবার ভারতের রাষ্ট্রপতি ঢাকার রমনার কালীমন্দিরের সদ্য সংস্কার করা অংশের উদ্বোধন করবেন এবং মন্দিরটি পরিদর্শন করবেন। একই দিন দুপুরে তিনি দিল্লীর উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক
নিউজ গার্ডিয়ান/ এফএম/