নয়াদিল্লী এবং মস্কোর মধ্যে ঐতিহ্যগতভাবেই দৃঢ়, ঘনিষ্ঠ ও পরীক্ষিত সম্পর্ক রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ০৬ ডিসেম্বর, সোমবার, ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হওয়া মন্ত্রী পর্যায়ের ২+২ বৈঠকে এই মন্তব্য করেন তিনি।

নিজ বক্তব্য রাখতে গিয়ে জয়শঙ্কর বলেন, “আমরা বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতির এক গভীর সন্ধিক্ষণে রয়েছি। বর্তমান বিশ্ব ভূ-রাজনীতির পট পরিবর্তন হচ্ছে। বিশেষভাবে বলতে গেলে, মহামারীর পর থেকে এই ধারা আরও সক্রিয় হয়েছে। এমনই এক কঠিন সময়ে আমরা আজ মিলিত হচ্ছি। ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং কৌশলগত অংশীদার হিসেবে ভারত ও রাশিয়া ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যগতভাবেই এঁকে অন্যের পরিপূরক। আমরা আমাদের জনগণের শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি নিশ্চায়নে একত্রে কাজ করছি।”

মোদী মন্ত্রীসভার গুরুত্বপূর্ণ এই অংশীদার বলেন, “পরিবর্তনশীল এই বিশ্বে ভারত ও রাশিয়ার বন্ধুত্ব ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে এখনও স্থিতাবস্থায় রয়েছে। দীর্ঘদিন যাবত আমরা রাজনৈতিক স্তরে সক্রিয় রয়েছি এবং বহু বছর ধরেই আমাদের মধ্যে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্ব রয়েছে। পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ইস্যু ও বিশ্ব শান্তি রক্ষায় আমাদের বৈঠকগুলো গুরুত্বপূর্ণ।”

এসময়, মহামারী থেকে উত্তরণে করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করেন জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, “মহামারী আমাদেরকে চোখে আঙুল দিয়ে বর্তমান বিশ্ব মডেলের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। দীর্ঘস্থায়ী চ্যালেঞ্জ সমূহ যেমন: সন্ত্রাসবাদ, সহিংস চরমপন্থা এবং মৌলবাদের মতো বিষয় গুলো আমাদের সামনে উপস্থিত। মধ্য এশিয়া সহ আফগানিস্তানের পরিস্থিতি দিনকে দিন ঘোলাটেই হচ্ছে কেবল। এমন পরিস্থিতিতে ভারত-রাশিয়া সম্পর্ক অনেকটাই আশা জাগানিয়া। তাছাড়া, আমাদের উভয় রাষ্ট্রই আসিয়ান কেন্দ্রিকতার উপর বিশ্বাসী।”

প্রসঙ্গত, ঐতিহ্যগতভাবেই সুসম্পর্ক রয়েছে ভারত ও রাশিয়ার। সাম্প্রতিক সময়ে এই সম্পর্কের আকাশে কিছুটা মেঘ দেখা গেলেও তা কাটিয়ে উঠতে মরিয়া উভয় রাষ্ট্রের শীর্ষ নেতৃত্ব। এরই ধারাবাহিকতায় ভারতে এসেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সোমবারই ২১ তম শীর্ষ বৈঠকে মোদীর সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা তাঁর। করোনার কারণে গতবছর এই সম্মেলনটি বানচাল হয়ে যায়।

এই সফরে পুতিনের সঙ্গী হিসেবে রয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। পূর্বেই জানা গিয়েছিলো, পুতিনের ভারত সফরের প্রথমদিনেই, অর্থাৎ আজই মন্ত্রী পর্যায়ে ২+২ বৈঠক আয়োজন করবে ভারত ও রাশিয়া। বৈঠকে আফগানিস্তান নিয়ে বর্তমান অবস্থান ও ভবিষ্যৎ করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করছেন মন্ত্রীগণ। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক