১১:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারত-আমিরাতের সিইপিএ আলোচনার তৃতীয় রাউন্ড সোমবার

দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ খাতে সম্পর্ক জোরদারে আবারও আলোচনার টেবিলে বসতে চলেছে ভারত এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত। সম্ভাব্য সিইপিএ আলোচনার তৃতীয় রাউন্ডে আগামী সোমবার, ০৬ ডিসেম্বর, নয়াদিল্লীতে বৈঠকে বসবে দেশ দুটোর প্রতিনিধিগণ।

বৈঠকে যোগদান করতে দুদিনের সফরে ভারতে আসতে পারেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের বৈদেশিক বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী থানি বিন আহমেদ আল জেইউদি এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ। অন্যদিকে, আলোচনায় ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব করবেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী পীযূষ গয়াল। বৈঠকটি দুদিন ব্যাপী চলতে পারে।

বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য আগামী বছরের মার্চ মাস নাগাদ দু দেশের মধ্যে একটি ব্যাপক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (সিইপিএ) স্বাক্ষর করা। এর মাধ্যমে উভয় পক্ষের মধ্যে বিদ্যমান বাণিজ্য সম্পর্ক পাঁচ বছরের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হবে। এছাড়াও, অন্যান্য পরিষেবা খাতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রায় ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হবে।

আসন্ন বৈঠকটি উপলক্ষ্যে ভারতের অ্যালুমিনিয়াম, তামা, রাসায়নিক এবং পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পের প্রতিনিধিদের সাথে গত শুক্রবার আলোচনায় বসেছিলেন ভারতের কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী পীযূষ গয়াল।

এর আগে গত ২০১৭ সালে একটি ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলো ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। তারই আদলে নতুন এই লাভজনক চুক্তিটি করতে আগ্রহী দু পক্ষ। ইতোপূর্বে দু দেশের পক্ষ থেকেই বাণিজ্য চুক্তি বাস্তবায়নে সম্ভাব্য সকল আলোচনা ২০২১ সালের ডিসেম্বর নাগাদ সমাপ্ত করার আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছিলো এবং ২০২২ সালের মার্চ মাস নাগাদ সিইপিএ স্বাক্ষরের ইচ্ছে প্রকাশ করা হয়েছিলো।

চুক্তিটির ফলে দু দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনই নতুন কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হবে। উভয় রাষ্ট্রের নাগরিকেরই জীবন যাত্রার মান বাড়বে। লাভবান হবে দু পক্ষই।

প্রসঙ্গত, সংযুক্ত আরব আমিরাত বর্তমানে ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরেও দু রাষ্ট্রের মধ্যে প্রায় ৫৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্য হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পর সংযুক্ত আরব আমিরাতই ভারতের রপ্তানীর দিক দিয়ে দ্বিতীয় বৃহত্তম গন্তব্য। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রায় ২৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমপরিমাণ পণ্য দেশটিতে রপ্তানী করেছে দিল্লী।

একইভাবে ভারতও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রপ্তানী গন্তব্য। শুধুমাত্র ২০১৯ সালে ভারতে প্রায় ৪১ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ পণ্য রপ্তানী করে দেশটি। এছাড়াও, সংযুক্ত আরব আমিরাত ভারতে অষ্টম বৃহত্তম বিনিয়োগকারী রাষ্ট্র। এই করোনাকালেও বিগত এক বছরে প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলার ভারতে বিনিয়োগ করেছে দেশটি। তাছাড়া, দেশটিতে ভারতীয় কোম্পানীগুলোও প্রায় ৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমপরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করে রেখেছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে মূলত পেট্রোলিয়াম পণ্য, মূল্যবান ধাতু, পাথর, রত্ন, গহনা, খনিজ পদার্থ, খাদ্যশস্য, যেমন: চিনি, ফল ও সবজি, চা, মাংস এবং সামুদ্রিক খাবার, বস্ত্র, প্রকৌশল ও যন্ত্রপাতি পণ্য এবং রাসায়নিক দ্রব্যাদি রপ্তানী করে থাকে ভারত। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক

ট্যাগ:

ভারত-আমিরাতের সিইপিএ আলোচনার তৃতীয় রাউন্ড সোমবার

প্রকাশ: ০১:১২:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২১

দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ খাতে সম্পর্ক জোরদারে আবারও আলোচনার টেবিলে বসতে চলেছে ভারত এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত। সম্ভাব্য সিইপিএ আলোচনার তৃতীয় রাউন্ডে আগামী সোমবার, ০৬ ডিসেম্বর, নয়াদিল্লীতে বৈঠকে বসবে দেশ দুটোর প্রতিনিধিগণ।

বৈঠকে যোগদান করতে দুদিনের সফরে ভারতে আসতে পারেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের বৈদেশিক বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী থানি বিন আহমেদ আল জেইউদি এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ। অন্যদিকে, আলোচনায় ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব করবেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী পীযূষ গয়াল। বৈঠকটি দুদিন ব্যাপী চলতে পারে।

বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য আগামী বছরের মার্চ মাস নাগাদ দু দেশের মধ্যে একটি ব্যাপক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (সিইপিএ) স্বাক্ষর করা। এর মাধ্যমে উভয় পক্ষের মধ্যে বিদ্যমান বাণিজ্য সম্পর্ক পাঁচ বছরের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হবে। এছাড়াও, অন্যান্য পরিষেবা খাতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রায় ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হবে।

আসন্ন বৈঠকটি উপলক্ষ্যে ভারতের অ্যালুমিনিয়াম, তামা, রাসায়নিক এবং পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পের প্রতিনিধিদের সাথে গত শুক্রবার আলোচনায় বসেছিলেন ভারতের কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী পীযূষ গয়াল।

এর আগে গত ২০১৭ সালে একটি ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলো ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। তারই আদলে নতুন এই লাভজনক চুক্তিটি করতে আগ্রহী দু পক্ষ। ইতোপূর্বে দু দেশের পক্ষ থেকেই বাণিজ্য চুক্তি বাস্তবায়নে সম্ভাব্য সকল আলোচনা ২০২১ সালের ডিসেম্বর নাগাদ সমাপ্ত করার আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছিলো এবং ২০২২ সালের মার্চ মাস নাগাদ সিইপিএ স্বাক্ষরের ইচ্ছে প্রকাশ করা হয়েছিলো।

চুক্তিটির ফলে দু দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনই নতুন কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হবে। উভয় রাষ্ট্রের নাগরিকেরই জীবন যাত্রার মান বাড়বে। লাভবান হবে দু পক্ষই।

প্রসঙ্গত, সংযুক্ত আরব আমিরাত বর্তমানে ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরেও দু রাষ্ট্রের মধ্যে প্রায় ৫৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্য হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পর সংযুক্ত আরব আমিরাতই ভারতের রপ্তানীর দিক দিয়ে দ্বিতীয় বৃহত্তম গন্তব্য। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রায় ২৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমপরিমাণ পণ্য দেশটিতে রপ্তানী করেছে দিল্লী।

একইভাবে ভারতও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রপ্তানী গন্তব্য। শুধুমাত্র ২০১৯ সালে ভারতে প্রায় ৪১ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ পণ্য রপ্তানী করে দেশটি। এছাড়াও, সংযুক্ত আরব আমিরাত ভারতে অষ্টম বৃহত্তম বিনিয়োগকারী রাষ্ট্র। এই করোনাকালেও বিগত এক বছরে প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলার ভারতে বিনিয়োগ করেছে দেশটি। তাছাড়া, দেশটিতে ভারতীয় কোম্পানীগুলোও প্রায় ৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমপরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করে রেখেছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে মূলত পেট্রোলিয়াম পণ্য, মূল্যবান ধাতু, পাথর, রত্ন, গহনা, খনিজ পদার্থ, খাদ্যশস্য, যেমন: চিনি, ফল ও সবজি, চা, মাংস এবং সামুদ্রিক খাবার, বস্ত্র, প্রকৌশল ও যন্ত্রপাতি পণ্য এবং রাসায়নিক দ্রব্যাদি রপ্তানী করে থাকে ভারত। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক