বৈশ্বিক রাজনৈতিক, আঞ্চলিক ও আভ্যন্তরীণ নানা ইস্যুতে চীনে আগ্রহ হারাচ্ছেন বড় বিনিয়োগকারীরা। ফলে সারা বিশ্বের ক্যাপিটাল সংস্থাসমূহের কাছ থেকে বিনিয়োগ পাচ্ছে ভারতের স্টার্টআপগুলো। গত ২১ নভেম্বর, রবিবার, জাপানের নিক্কেই এশিয়া-তে এমনই এক রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে।
‘Tracxn’ নামক একটি স্টার্টআপ ট্র্যাকারের তথ্যের উপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদন লিখেছে পত্রিকাটি। চীনের প্রতি বিনিয়োগকারীদের উত্সাহহীনতাই ভারতের এই উন্নয়নের নেপথ্যে মূল কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে।
নিক্কেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২১১টি তহবিল এই বছর ভারতে প্রথম বিনিয়োগ করেছে, যা গত বছরের তুলনায় ৬৪টি বেশি। আন্দ্রেসেন হোরোভিটজ, টিসিভি, ভিট্রুভিয়ান পার্টনার্স এবং জিএসভি ভেঞ্চারস ভারতে বিনিয়োগ করা সংস্থাগুলোর মধ্যে অন্যতম।
এদিকে ২০১৪ সালে ভারত ত্যাগ করা সিলিকন ভ্যালির তহবিল ‘ক্লেইনার পারকিন্স’ ফের একবার ভারতে বিনিয়োগ শুরু করেছে। Tracxn-এর সামগ্রিক তথ্য উদ্ধৃত করে নিক্কেই এশিয়া বলছে, ৫৯৭টি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম এই বছর এ পর্যন্ত ২,২৮৪টি চুক্তি করেছে।
চীনের পরিস্থিতি সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, প্রযুক্তি খাতে বেজিংয়ের নিয়ন্ত্রক ক্র্যাকডাউনের জেরে চীন নিয়ে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কমেছে। এর আগে এশিয়ায় বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক সংস্থাগুলোর প্রথম পছন্দ ছিল চীন। তবে বেজিংয়ের সাম্প্রতিক পদক্ষেপে সেই আবেদন ক্ষুন্ন হয়েছে।
ব্লুমবার্গের মতে, গত নভেম্বরে জ্যাক মা-এর অ্যান্ট গ্রুপ এবং আলিবাবা গ্রুপ হোল্ডিংয়ের উপর বেজিংয়ের নজরদারি বাড়ার পর তা ক্রমশ টেনসেন্ট হোল্ডিংস এবং দিদি গ্লোবালের মতো আরও সংস্থার উপর গিয়ে পড়ে। কারণ বেজিং ডেটা সুরক্ষা এবং সম্পদ বণ্টন পর্যন্ত সমস্ত কিছুর উপর নজরদারি বাড়িয়ে চলেছে।
ব্লুমবার্গ বলেছে, এই ক্র্যাকডাউনের কারণেই চীনে বিনিয়োগের পরিমাণ কমেছে। চীনা স্টকের মূল্য ১.৫ ট্রিলিয়ন ডলার হ্রাস পেয়েছে।
নিক্কেই এশিয়া-র রিপোর্ট বলছে, ভারতে পাবলিক মার্কেট দ্রুত বাড়ছে। পাশাপাশি কোভিড-১৯ মহামারির পরে অনলাইন পরিষেবাসমূহের দ্রুত গ্রহণযোগ্যতা বাড়ায় ভারত এখন বিনিয়োগের আদর্শ জায়গা।
ব্যবসায়িক বিশ্লেষণ প্ল্যাটফর্ম সিবি ইনসাইটস অনুসারে, বছরের প্রথম নয় মাসে (জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর) ভারতে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রবাহ সর্বকালের সর্বোচ্চ ১৯.৫ বিলিয়ন ডলার ছিল। এটি আরও জানাচ্ছে, জুলাই-সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকেই বিনিয়োগ হয়েছে এর অর্ধেক। উক্ত সময়ের মধ্যে ৫১৯টি চুক্তিতে ৯.৯ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করা হয়েছে। সিবি ইনসাইটস জানিয়েছে, এই সময়ের মধ্যে অনেকটাই কমেছে চীনে বিনিয়োগ। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক