২০৭০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিলো ভারত। স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে আয়োজিত জলবায়ু বিষয়ক শীর্ষ সম্মেলন কোপ-২৬-এ এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।র
চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর বিশ্বের অন্যতম কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণকারী দেশ হচ্ছে ভারত। ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার টার্গেট পূরণের লক্ষ্যে অন্যান্য দেশের সঙ্গে ভারতও এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবারের সম্মেলনে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গ্লাসগো সম্মেলনে প্রথমবারের মতো এ প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করলেন।
শূন্য কার্বন অথবা কার্বন নিরপেক্ষতা হচ্ছে বায়ুমণ্ডলে যেনো নতুন করে গ্রীন হাউস গ্যাসের পরিমাণ যোগ না হয়। চীনও ২০৬০ সালের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষতায় পৌঁছতে পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। কার্বন শূন্যে নামাতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ-র টার্গেট হচ্ছে ২০৫০ সাল পর্যন্ত।
দুই সপ্তাহের গ্লাসগো সম্মেলনে বিশ্বের ১২০ নেতার মধ্যে রয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। স্থানীয় সময় সোমবার (১ নভেম্বর) বিশ্বনেতাদের অনেকে জলবায়ু সংকট ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা নিয়ে বক্তব্য রেখেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস।
স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে শুরু হওয়া কোপ-২৬ সম্মেলনকে প্যারিস চুক্তি-পরবর্তী সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জলবায়ু সম্মেলন হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। জলবায়ু বিষয়ক ২০২১ সালের শীর্ষ সম্মেলনে নতুন চুক্তির পথে না হাঁটলেও আলাদাভাবে নিজেদের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছেন বিশ্বনেতারা।
এই বিশ্বমঞ্চে বক্তব্য দিতে গিয়ে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর দাবি, ২০৭০ সালের মধ্যে কার্বন দূষণের মাত্রা পুরোপুরি কমিয়ে ফেলার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করবে ভারত। সব মিলিয়ে মোট পাঁচটি প্রতিশ্রুতিকে বিশ্বের কাছে ভারতের ‘পঞ্চামৃতের উপহার’ বলেও বর্ণনা করেছেন মোদী।
যে পাঁচটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী:
১) প্রধানমন্ত্রীর দাবি, ২০৩০ সালের মধ্যে অ-জীবাশ্ম শক্তির উৎপাদন বাড়িয়ে ৫০০ গিগাওয়াট করবে ভারত।
২) ওই একই সময়ের মধ্যে অর্থাৎ ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে শক্তির চাহিদার ৫০ শতাংশই পূরণ করা হবে পুনর্নবীকরণ শক্তির মাধ্যমে।
৩) চলতি বছর থেকে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ভারত যে পরিমাণ কার্বন দূষণ করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে, তার থেকে ১০০ কোটি টন কম কার্বন নিঃসরণ করবে।
৪) ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ ৪৫ শতাংশ কম করার লক্ষ্য রয়েছে ভারতের।
৫) সর্বশেষে, ২০৭০ সালের মধ্যে কার্বন দূষণের মাত্রা শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করবে ভারত।
প্রসঙ্গত, গ্লাসগোর আগে ইতালির রোমে জি-২০ সম্মেলনে বিশ্ব উষ্ণায়নের মাত্রা হ্রাস করার জন্য বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওই গোষ্ঠীভুক্ত দেশের রাষ্ট্রনেতারা। তার মধ্যে রয়েছে, বিশ্ব উষ্ণায়নের মাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়ালে সীমাবদ্ধ রাখা।
যদিও পরিবেশবিদ তথা বিজ্ঞানীদের মতে, উক্ত এই লক্ষ্যপূরণে ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন দূষণের মাত্রা কমিয়ে আনতে হবে ৫০ শতাংশ। পাশাপাশি, ২০৫০ সালের মধ্যে তা পুরোপুরি কমিয়ে ফেলতে হবে।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক