০৪:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন প্রতিরোধে এক হচ্ছে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র

বিদেশে অর্থ পাচার এবং সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন প্রতিরোধে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হয়েছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। পারস্পরিক গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় এবং সেগুলো সমন্বয়ের মাধ্যমে সমস্যার সমাধানে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করার ঘোষণা দিয়েছে দু পক্ষ।

গত ১৫ অক্টোবর, শুক্রবার, ওয়াশিংটন ডিসিতে আয়োজিত ‘ইন্ডিয়া-ইউএস ইকোনোমিক এন্ড ফিনান্সিয়াল পার্টনারশীপ’ এর অষ্টম মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে এই সমঝোতায় পৌঁছেছে দেশ দুটো। বৈঠকটিতে যৌথভাবে সভাপতিত্ব করেন ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এবং মার্কিন ট্রেজারি সচিব জ্যানেট ইয়েলেন।

পরবর্তীতে এক যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে বৈঠকের আদ্যোপান্ত তুলে ধরা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “যেকোনো পর্যায়ের অর্থ কেলেঙ্কারি প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপের বিষয়ে একমত হয়েছে দু পক্ষ। এজন্য মানসম্মত ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স গঠন ও সেটি কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয় পক্ষই করোনা মহামারী থেকে অর্থনীতির পুনরুদ্ধার, বাজার নিয়ন্ত্রণ, প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বৃদ্ধি, বহুপাক্ষিক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় অর্থায়ন, সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন বন্ধ এবং মানি লন্ডারিং ঠেকাতে সচেষ্ট। এ লক্ষ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বাড়াতে প্রস্তুত দুই দেশ।”

বৈঠকে করোনা মহামারীতে জনজীবনের উপর নেমে আসা বিপর্যয়ের বহুল প্রভাব নিয়ে আলোচনা করে দু পক্ষ। সাধারণ নাগরিক সমাজে সার্বিক অবস্থা স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে আসার আগ অবধি সহায়তা কার্যক্রম অব্যহত রাখার গুরুত্বের উপরও মতবিনিময় করে উভয় দেশের প্রতিনিধি দল।

তাছাড়া, জলবায়ু ইস্যুতে ব্যাপক এবং বিস্তৃতভাবে আলোচনা হয় বৈঠকটিতে। জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব থেকে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে রক্ষা করতে উন্নত বিশ্ব কর্তৃক বরাদ্দকৃত অনুদান সঠিকভাবে প্রদান এবং বরাদ্দ বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র।

একই সঙ্গে, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, কার্বন নিঃসরণ এবং নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার ব্যাপক হারে বাড়ানোর বিষয়েও আলোচনা করেন উভয় রাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল।

এসময়, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্প্রতি স্বাক্ষরিত হওয়া ‘ক্লাইমেট অ্যাকশন অ্যান্ড ফাইন্যান্স মোবিলাইজেশন ডায়ালগ (সিএএফএমডি)’ নিয়েও আলোচনা করে দু পক্ষ। গত ১৩ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরির উপস্থিতিতে সংলাপটি চালুর ঘোষণা দেয়া হয়েছিলো। ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের জলবায়ু ও পরিবেশ বান্ধব জ্বালানী এজেন্ডা ২০৩০ বাস্তবায়নের আওতায় শুরু হয় সংলাপটি।

এসবের পাশাপাশি বহুপাক্ষিক সংস্থা সমূহে অংশীদারিত্ব জোরদারের প্রসঙ্গেও আলোচনা করে দু পক্ষ। জি-২০ বৈশ্বিক জোটের পরবর্তী সভাপতি ইন্দোনেশিয়ার সভাপতিত্ব করার বিষয়েও আলোচনা করেন উভয় প্রতিনিধি দল। বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং শান্তি ও সমৃদ্ধি পুনরুদ্ধারে জি-২০ গ্রুপকে আরও কার্যকর করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে দু পক্ষ।

উল্লেখ্য, আগামী ২০২২ সালের ০১ ডিসেম্বর থেকে জি-২০ গ্রুপের সভাপতির দায়িত্ব নিবে ভারত। গত ২০১৪ সাল থেকে জি-২০ ফোরামে ভারতের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ২০২৩ সালে প্রথমবারের মতো জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন আহবান করবে ভারত।

আলোচনার সময় পারস্পরিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা করে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। ভবিষ্যতে দু পক্ষের মধ্যকার প্রযুক্তিগত সম্পর্ক আরও ব্যাপক মাত্রায় বাড়ানোর বিষয়ে সম্মত হয়েছে তাঁরা।

তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক

ট্যাগ:

মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন প্রতিরোধে এক হচ্ছে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশ: ০৪:১০:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২১

বিদেশে অর্থ পাচার এবং সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন প্রতিরোধে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হয়েছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। পারস্পরিক গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় এবং সেগুলো সমন্বয়ের মাধ্যমে সমস্যার সমাধানে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করার ঘোষণা দিয়েছে দু পক্ষ।

গত ১৫ অক্টোবর, শুক্রবার, ওয়াশিংটন ডিসিতে আয়োজিত ‘ইন্ডিয়া-ইউএস ইকোনোমিক এন্ড ফিনান্সিয়াল পার্টনারশীপ’ এর অষ্টম মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে এই সমঝোতায় পৌঁছেছে দেশ দুটো। বৈঠকটিতে যৌথভাবে সভাপতিত্ব করেন ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এবং মার্কিন ট্রেজারি সচিব জ্যানেট ইয়েলেন।

পরবর্তীতে এক যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে বৈঠকের আদ্যোপান্ত তুলে ধরা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “যেকোনো পর্যায়ের অর্থ কেলেঙ্কারি প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপের বিষয়ে একমত হয়েছে দু পক্ষ। এজন্য মানসম্মত ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স গঠন ও সেটি কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয় পক্ষই করোনা মহামারী থেকে অর্থনীতির পুনরুদ্ধার, বাজার নিয়ন্ত্রণ, প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বৃদ্ধি, বহুপাক্ষিক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় অর্থায়ন, সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন বন্ধ এবং মানি লন্ডারিং ঠেকাতে সচেষ্ট। এ লক্ষ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বাড়াতে প্রস্তুত দুই দেশ।”

বৈঠকে করোনা মহামারীতে জনজীবনের উপর নেমে আসা বিপর্যয়ের বহুল প্রভাব নিয়ে আলোচনা করে দু পক্ষ। সাধারণ নাগরিক সমাজে সার্বিক অবস্থা স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে আসার আগ অবধি সহায়তা কার্যক্রম অব্যহত রাখার গুরুত্বের উপরও মতবিনিময় করে উভয় দেশের প্রতিনিধি দল।

তাছাড়া, জলবায়ু ইস্যুতে ব্যাপক এবং বিস্তৃতভাবে আলোচনা হয় বৈঠকটিতে। জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব থেকে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে রক্ষা করতে উন্নত বিশ্ব কর্তৃক বরাদ্দকৃত অনুদান সঠিকভাবে প্রদান এবং বরাদ্দ বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র।

একই সঙ্গে, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, কার্বন নিঃসরণ এবং নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার ব্যাপক হারে বাড়ানোর বিষয়েও আলোচনা করেন উভয় রাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল।

এসময়, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্প্রতি স্বাক্ষরিত হওয়া ‘ক্লাইমেট অ্যাকশন অ্যান্ড ফাইন্যান্স মোবিলাইজেশন ডায়ালগ (সিএএফএমডি)’ নিয়েও আলোচনা করে দু পক্ষ। গত ১৩ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরির উপস্থিতিতে সংলাপটি চালুর ঘোষণা দেয়া হয়েছিলো। ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের জলবায়ু ও পরিবেশ বান্ধব জ্বালানী এজেন্ডা ২০৩০ বাস্তবায়নের আওতায় শুরু হয় সংলাপটি।

এসবের পাশাপাশি বহুপাক্ষিক সংস্থা সমূহে অংশীদারিত্ব জোরদারের প্রসঙ্গেও আলোচনা করে দু পক্ষ। জি-২০ বৈশ্বিক জোটের পরবর্তী সভাপতি ইন্দোনেশিয়ার সভাপতিত্ব করার বিষয়েও আলোচনা করেন উভয় প্রতিনিধি দল। বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং শান্তি ও সমৃদ্ধি পুনরুদ্ধারে জি-২০ গ্রুপকে আরও কার্যকর করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে দু পক্ষ।

উল্লেখ্য, আগামী ২০২২ সালের ০১ ডিসেম্বর থেকে জি-২০ গ্রুপের সভাপতির দায়িত্ব নিবে ভারত। গত ২০১৪ সাল থেকে জি-২০ ফোরামে ভারতের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ২০২৩ সালে প্রথমবারের মতো জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন আহবান করবে ভারত।

আলোচনার সময় পারস্পরিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা করে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। ভবিষ্যতে দু পক্ষের মধ্যকার প্রযুক্তিগত সম্পর্ক আরও ব্যাপক মাত্রায় বাড়ানোর বিষয়ে সম্মত হয়েছে তাঁরা।

তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক


Fatal error: Uncaught wfWAFStorageFileException: Unable to save temporary file for atomic writing. in /home/nabajugc/public_html/wp-content/plugins/wordfence/vendor/wordfence/wf-waf/src/lib/storage/file.php:34 Stack trace: #0 /home/nabajugc/public_html/wp-content/plugins/wordfence/vendor/wordfence/wf-waf/src/lib/storage/file.php(658): wfWAFStorageFile::atomicFilePutContents('/home/nabajugc/...', '<?php exit('Acc...') #1 [internal function]: wfWAFStorageFile->saveConfig('livewaf') #2 {main} thrown in /home/nabajugc/public_html/wp-content/plugins/wordfence/vendor/wordfence/wf-waf/src/lib/storage/file.php on line 34