০৪:১৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আশিয়ান ব্লককে নন-ট্যারিফ বাধা দূর করার তাগিদ ভারতীয় মন্ত্রীর

আশিয়ান ব্লককে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যাবতীয় নন-ট্যারিফ বাধা দূরীকরণের তাগিদ দিয়েছেন ভারতীয় কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী পীযূষ গয়াল। এর পাশাপাশি গোটা অঞ্চল জুড়ে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির অপব্যবহার রোধ করার আহবানও জানিয়েছেন তিনি।

০৮ অক্টোবর, শুক্রবার, কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (সিআইআই) আয়োজিত “অঞ্চল জুড়ে বাণিজ্য মন্ত্রীদের সঙ্গে বিশেষ সমাবেশ: ইন্দো-আশিয়ান ব্যবসা” -শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেন গয়াল।

ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য প্রদানকালে গয়াল বলেন, “এটা অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে সাম্প্রতিক অতীতে আমাদেরকে আশিয়ান অঞ্চলের সঙ্গে ব্যবসার ক্ষেত্রে, বিশেষ করে কৃষি ও অটো সেক্টরে রপ্তানী খাতে আমাদেরকে বেশ কিছু বিধি নিষেধের মোকাবেলা করতে হয়েছিলো। আমি মনে করি আমাদের সকলের মঙ্গলের জন্যেই এ সমস্ত বাধা দূর করতে হবে। পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিতে হবে।”

এসময় ভারতের সঙ্গে আশিয়ানের বিদ্যমান সকল অসম বাণিজ্য ভারসাম্য দূর করতে ব্লকের প্রতি মুক্ত বাণিজ্যের অনুমতি প্রদানের আহবান জানান তিনি। মোদী মন্ত্রীসভার অন্যতম গুরুত্বপুর্ণ এই নেতা বলেন, “বর্তমানে আশিয়ান থেকে আমদানী দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। রপ্তানী ক্ষেত্রেও সম্পর্ক বেড়েছে। কিন্তু বিভিন্ন বিধিনিষেধ এবং নিয়মের ফেরে তা পূর্ণ গতি লাভ করতে পারছে না। এগুলো সমস্যার সমাধান করতে হবে। সামঞ্জস্যের সঙ্গে পদক্ষেপ নিতে হবে।”

এসময় গয়াল আরও বলেন, “ভারত এবং আশিয়ানের মধ্যে বর্তমানে প্রায় ৮০ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য রয়েছে, যা অঞ্চলটিকে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্য ক্ষেত্রে পরিণত করেছে। আমরা ২০২২ সালের মধ্যে ২০০ বিলিয়ন ডলার বাণিজ্যের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি।”

ভারতের লুক ইস্ট নীতি বর্তমানে অ্যাক্ট ইস্ট নীতিতে পরিণত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। মন্ত্রী আরও বলেন, “এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, আশিয়ান ভারতের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান কেন্দ্র। আমাদের বাণিজ্যিক খাতে অঞ্চলটির গুরুত্ব অপরিসীম।”

এছাড়া, আলোচনাকালে কোভিড ভ্যাকসিন, কোয়াড প্রসঙ্গ এবং বহুপাক্ষিক নানা ইস্যুতে কথা বলেন মন্ত্রী। পাশাপাশি প্রযুক্তি, বিজ্ঞান ও উদ্ভাবন খাতে গভীর সহযোগিতার আহবান জানান তিনি। মহামারী মোকাবেলায় প্রতিবেশী দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের আহবানও জানান তিনি।

স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতার আহবান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “ভারত বর্তমানে বিশ্বের ফার্মেসী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। তাই বন্ধুত্বের নিদর্শন স্বরূপ আশিয়ান দেশগুলোকে তাঁদের চাহিদা পূরণের জন্য জেনেরিক ওষুধ এবং ভ্যাকসিন তৈরীতে পূর্ণ সহযোগিতা প্রদান করতে প্রস্তুত আমরা।”

প্রসঙ্গত, অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি সেই বিশেষ কর্মকৌশল, যার মাধ্যমে ভারত আশিয়ানভূক্ত দেশগুলোর পাশাপাশি জাপান, ভিয়েতনাম আর অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাস্তব সহযোগিতার ভিত্তিতে নিজেদের অর্থনৈতিক উত্থান নিশ্চিত করতে চায়। তবে এখন তা রাজনৈতিক, কৌশলগত ও সাংস্কৃতিক মাত্রা পেয়েছে।

দেশীয় ক্ষেত্রে ভারত সরকার কর্তৃক সড়ক, রেল, অন্তর্দেশীয় জলপথ পরিবহন, বিদ্যুৎ, বিমান বন্দর এবং টেলিকম সংযোগের ক্ষেত্রে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে জটিল পরিকাঠামোগত প্রকল্প সমাপ্ত করার ক্ষেত্রে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এই নীতির আওতায়।

চলতি বছর আশিয়ানের সঙ্গে ভারতের অংশীদারিত্বের ২৫ তম বর্ষ উদযাপিত হচ্ছে। তবে বিগত এক দশক সময়কালে আশিয়ান অঞ্চলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে ভারত। বিগত ২০১০ সালে যেখানে আশিয়ানের সঙ্গে ভারতের রপ্তানী সম্পর্ক ছিলো ২৩ বিলিয়ন ডলার, তা ২০২০ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ৩০ বিলিয়ন ডলারে। অন্যদিকে ২০১০ সালে ভারত যেখানে আশিয়ান অঞ্চল থেকে প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার আমদানী করতো, সেখানে বর্তমানে প্রায় ৪৪ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ আমদানী করে থাকে প্রতি বছর।

তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক

ট্যাগ:

আশিয়ান ব্লককে নন-ট্যারিফ বাধা দূর করার তাগিদ ভারতীয় মন্ত্রীর

প্রকাশ: ১২:০৯:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অক্টোবর ২০২১

আশিয়ান ব্লককে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যাবতীয় নন-ট্যারিফ বাধা দূরীকরণের তাগিদ দিয়েছেন ভারতীয় কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী পীযূষ গয়াল। এর পাশাপাশি গোটা অঞ্চল জুড়ে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির অপব্যবহার রোধ করার আহবানও জানিয়েছেন তিনি।

০৮ অক্টোবর, শুক্রবার, কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (সিআইআই) আয়োজিত “অঞ্চল জুড়ে বাণিজ্য মন্ত্রীদের সঙ্গে বিশেষ সমাবেশ: ইন্দো-আশিয়ান ব্যবসা” -শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেন গয়াল।

ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য প্রদানকালে গয়াল বলেন, “এটা অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে সাম্প্রতিক অতীতে আমাদেরকে আশিয়ান অঞ্চলের সঙ্গে ব্যবসার ক্ষেত্রে, বিশেষ করে কৃষি ও অটো সেক্টরে রপ্তানী খাতে আমাদেরকে বেশ কিছু বিধি নিষেধের মোকাবেলা করতে হয়েছিলো। আমি মনে করি আমাদের সকলের মঙ্গলের জন্যেই এ সমস্ত বাধা দূর করতে হবে। পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিতে হবে।”

এসময় ভারতের সঙ্গে আশিয়ানের বিদ্যমান সকল অসম বাণিজ্য ভারসাম্য দূর করতে ব্লকের প্রতি মুক্ত বাণিজ্যের অনুমতি প্রদানের আহবান জানান তিনি। মোদী মন্ত্রীসভার অন্যতম গুরুত্বপুর্ণ এই নেতা বলেন, “বর্তমানে আশিয়ান থেকে আমদানী দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। রপ্তানী ক্ষেত্রেও সম্পর্ক বেড়েছে। কিন্তু বিভিন্ন বিধিনিষেধ এবং নিয়মের ফেরে তা পূর্ণ গতি লাভ করতে পারছে না। এগুলো সমস্যার সমাধান করতে হবে। সামঞ্জস্যের সঙ্গে পদক্ষেপ নিতে হবে।”

এসময় গয়াল আরও বলেন, “ভারত এবং আশিয়ানের মধ্যে বর্তমানে প্রায় ৮০ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য রয়েছে, যা অঞ্চলটিকে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্য ক্ষেত্রে পরিণত করেছে। আমরা ২০২২ সালের মধ্যে ২০০ বিলিয়ন ডলার বাণিজ্যের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি।”

ভারতের লুক ইস্ট নীতি বর্তমানে অ্যাক্ট ইস্ট নীতিতে পরিণত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। মন্ত্রী আরও বলেন, “এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, আশিয়ান ভারতের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান কেন্দ্র। আমাদের বাণিজ্যিক খাতে অঞ্চলটির গুরুত্ব অপরিসীম।”

এছাড়া, আলোচনাকালে কোভিড ভ্যাকসিন, কোয়াড প্রসঙ্গ এবং বহুপাক্ষিক নানা ইস্যুতে কথা বলেন মন্ত্রী। পাশাপাশি প্রযুক্তি, বিজ্ঞান ও উদ্ভাবন খাতে গভীর সহযোগিতার আহবান জানান তিনি। মহামারী মোকাবেলায় প্রতিবেশী দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের আহবানও জানান তিনি।

স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতার আহবান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “ভারত বর্তমানে বিশ্বের ফার্মেসী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। তাই বন্ধুত্বের নিদর্শন স্বরূপ আশিয়ান দেশগুলোকে তাঁদের চাহিদা পূরণের জন্য জেনেরিক ওষুধ এবং ভ্যাকসিন তৈরীতে পূর্ণ সহযোগিতা প্রদান করতে প্রস্তুত আমরা।”

প্রসঙ্গত, অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি সেই বিশেষ কর্মকৌশল, যার মাধ্যমে ভারত আশিয়ানভূক্ত দেশগুলোর পাশাপাশি জাপান, ভিয়েতনাম আর অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাস্তব সহযোগিতার ভিত্তিতে নিজেদের অর্থনৈতিক উত্থান নিশ্চিত করতে চায়। তবে এখন তা রাজনৈতিক, কৌশলগত ও সাংস্কৃতিক মাত্রা পেয়েছে।

দেশীয় ক্ষেত্রে ভারত সরকার কর্তৃক সড়ক, রেল, অন্তর্দেশীয় জলপথ পরিবহন, বিদ্যুৎ, বিমান বন্দর এবং টেলিকম সংযোগের ক্ষেত্রে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে জটিল পরিকাঠামোগত প্রকল্প সমাপ্ত করার ক্ষেত্রে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এই নীতির আওতায়।

চলতি বছর আশিয়ানের সঙ্গে ভারতের অংশীদারিত্বের ২৫ তম বর্ষ উদযাপিত হচ্ছে। তবে বিগত এক দশক সময়কালে আশিয়ান অঞ্চলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে ভারত। বিগত ২০১০ সালে যেখানে আশিয়ানের সঙ্গে ভারতের রপ্তানী সম্পর্ক ছিলো ২৩ বিলিয়ন ডলার, তা ২০২০ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ৩০ বিলিয়ন ডলারে। অন্যদিকে ২০১০ সালে ভারত যেখানে আশিয়ান অঞ্চল থেকে প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার আমদানী করতো, সেখানে বর্তমানে প্রায় ৪৪ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ আমদানী করে থাকে প্রতি বছর।

তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক


Fatal error: Uncaught wfWAFStorageFileException: Unable to save temporary file for atomic writing. in /home/nabajugc/public_html/wp-content/plugins/wordfence/vendor/wordfence/wf-waf/src/lib/storage/file.php:34 Stack trace: #0 /home/nabajugc/public_html/wp-content/plugins/wordfence/vendor/wordfence/wf-waf/src/lib/storage/file.php(658): wfWAFStorageFile::atomicFilePutContents('/home/nabajugc/...', '<?php exit('Acc...') #1 [internal function]: wfWAFStorageFile->saveConfig('livewaf') #2 {main} thrown in /home/nabajugc/public_html/wp-content/plugins/wordfence/vendor/wordfence/wf-waf/src/lib/storage/file.php on line 34