১১:৩২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণে বাংলাদেশ-ভারত চুক্তি সই

সিরাজগঞ্জ-বগুড়া রেলপথ নির্মাণে পরামর্শক নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ২৭ সেপ্টেম্বর, সোমবার, বাংলাদেশের রেল ভবনে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন ও বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কে দোরাইস্বামীর উপস্থিতিতে এ সংক্রান্ত চুক্তি সই হয়।

চুক্তি অনুযায়ী, ৯৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকার বিনিময়ে ভারতের আরআইটিইএস লিমিটেড নেতৃত্বাধীন যৌথ প্রতিষ্ঠান ‘রাইটস ইন্ডিয়া লিমিটেড’ এবং ‘আরভি ইন্ডিয়া’ এই প্রকল্পের সমীক্ষা প্রতিবেদন (ফিজিবিলিটি স্টাডি রিপোর্ট) হালনাগাদ, পূর্ণাঙ্গ নকশা এবং টেন্ডারের নথিপত্র প্রস্তুত করবে। এ ছাড়া, রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প কাজের বাস্তবায়ন শুরু হলে তদারকিও করবে প্রতিষ্ঠানটি।

বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রায় পাঁচ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে সিরাজগঞ্জ থেকে বগুড়া পর্যন্ত ৮৬ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করবে। এখানে ৮৬ কিলোমিটার মেইন লাইন ও ১৬ কিলোমিটার লুপ লাইন নির্মিত হবে।

আগামী ১৩ মাসের মধ্যে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান তাদের রিপোর্ট জমা দেবে। এরপর লাইন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করাসহ অন্যান্য কাজ শুরু হবে। এক বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশের রেলপথ মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষে প্রকল্প পরিচালক মো. আবু জাফর মিঞা ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আরআইটিইএস লিমিটেডের পক্ষে এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্জয় আগারওয়াল চুক্তিতে সই করেন।

চুক্তি সই অনুষ্ঠানে রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, “নতুন এ রেল লাইনের মাধ্যমে সমগ্র উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার সহজ যোগাযোগ স্থাপিত হবে, সময় কমে যাবে। বর্তমানে ঢাকা-রংপুর বিভাগের জেলাতে ট্রেন যায় পাবনার ঈশ্বরদী ঘুরে বগুড়ার সান্তাহার হয়ে। এ কারণে শত কিলোমিটার বাড়তি পথ পাড়ি দিতে হয় উত্তরের যাত্রীদের। ঢাকা-বগুড়ার বর্তমান দূরত্ব ৩২৪ কিলোমিটার। নতুন রেলপথ নির্মাণ হলে এই দূরত্ব কমে হবে ২১২ কিলোমিটার। ১১২ কিলোমিটার দূরত্ব কমায় আশা করা হচ্ছে অন্তত তিন ঘণ্টা সাশ্রয় হবে। আমাদের এ কাজে ভারত এগিয়ে এসেছে।”

বাংলাদেশ রেলওয়েতে ভারতের বিভিন্ন সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “ভারত সরকার রেল উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। তিনটি এলওসির মাধ্যমে ভারত সরকার রেলওয়েতে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে একের পর এক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছি। ভারতের সঙ্গে বন্ধ থাকা সব কয়টি রেললাইন চালু করা হচ্ছে। দুদেশের মধ্যে যাত্রী ও মালবাহী ট্রেনের সংখা বাড়ানো হচ্ছে। তাছাড়া, ভারত আমাদের ক্যাটারিং সার্ভিসের উন্নয়নসহ ট্রেনিং ক্ষেত্রে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। আমাদের রেলের লোকবলকে তারা প্রশিক্ষণ দেবে বলেও জানিয়েছে।”

তিনি জানান, “খুলনা থেকে মংলা পর্যন্ত নতুন লাইন নির্মাণ, ঢাকা-টঙ্গী তৃতীয়‌ ও চতুর্থ লাইন নির্মাণ, টঙ্গী-জয়দেবপুর ডাবল লাইন নির্মাণ, সিরাজগঞ্জ-বগুড়া নতুন রেলপথ নির্মাণ, পার্বতীপুর-কাউনিয়া পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণ, খুলনা-দর্শনা, কুলাউড়া-শাহবাজপুর নতুন রেলপথ নির্মাণ, সৈয়দপুর কারখানার আধুনিকায়ন প্রকল্প ভারতীয় অর্থায়নে হচ্ছে।”

ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রয় কুমার দোরাইস্বামী বলেছেন, “ভারত-বাংলাদেশ একই সূতোয় বাঁধা। বাংলাদেশ রেলে উন্নয়নে ভারত সরকার বিশেষভাবে অবদান রাখবে। আগামীতেও যেকোনো উন্নয়নে অবদান রাখবে। আর্থিকভাবে উন্নয়নের কারণে ভারত বাংলাদেশ উভয় দেশ উপকৃত হচ্ছে।” তাছাড়া, দু দেশের মধ্যে শীঘ্রই পর্যটন ভিসা চালু করা হবে বলেও জানান দোরাইস্বামী।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন রেল সচিব সেলিম রেজা। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদার এবং রাইটস ইন্ডিয়া লিমিটেডের পরিচালক অনিল ভিজ। চুক্তি অনুযায়ী, আগামী ছয় মাসে প্রকল্পের বিস্তারিত সমীক্ষা করবে এ দুই প্রতিষ্ঠান।

তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক

 

ট্যাগ:

বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণে বাংলাদেশ-ভারত চুক্তি সই

প্রকাশ: ০৩:১৪:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

সিরাজগঞ্জ-বগুড়া রেলপথ নির্মাণে পরামর্শক নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ২৭ সেপ্টেম্বর, সোমবার, বাংলাদেশের রেল ভবনে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন ও বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কে দোরাইস্বামীর উপস্থিতিতে এ সংক্রান্ত চুক্তি সই হয়।

চুক্তি অনুযায়ী, ৯৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকার বিনিময়ে ভারতের আরআইটিইএস লিমিটেড নেতৃত্বাধীন যৌথ প্রতিষ্ঠান ‘রাইটস ইন্ডিয়া লিমিটেড’ এবং ‘আরভি ইন্ডিয়া’ এই প্রকল্পের সমীক্ষা প্রতিবেদন (ফিজিবিলিটি স্টাডি রিপোর্ট) হালনাগাদ, পূর্ণাঙ্গ নকশা এবং টেন্ডারের নথিপত্র প্রস্তুত করবে। এ ছাড়া, রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প কাজের বাস্তবায়ন শুরু হলে তদারকিও করবে প্রতিষ্ঠানটি।

বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রায় পাঁচ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে সিরাজগঞ্জ থেকে বগুড়া পর্যন্ত ৮৬ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করবে। এখানে ৮৬ কিলোমিটার মেইন লাইন ও ১৬ কিলোমিটার লুপ লাইন নির্মিত হবে।

আগামী ১৩ মাসের মধ্যে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান তাদের রিপোর্ট জমা দেবে। এরপর লাইন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করাসহ অন্যান্য কাজ শুরু হবে। এক বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশের রেলপথ মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষে প্রকল্প পরিচালক মো. আবু জাফর মিঞা ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আরআইটিইএস লিমিটেডের পক্ষে এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্জয় আগারওয়াল চুক্তিতে সই করেন।

চুক্তি সই অনুষ্ঠানে রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, “নতুন এ রেল লাইনের মাধ্যমে সমগ্র উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার সহজ যোগাযোগ স্থাপিত হবে, সময় কমে যাবে। বর্তমানে ঢাকা-রংপুর বিভাগের জেলাতে ট্রেন যায় পাবনার ঈশ্বরদী ঘুরে বগুড়ার সান্তাহার হয়ে। এ কারণে শত কিলোমিটার বাড়তি পথ পাড়ি দিতে হয় উত্তরের যাত্রীদের। ঢাকা-বগুড়ার বর্তমান দূরত্ব ৩২৪ কিলোমিটার। নতুন রেলপথ নির্মাণ হলে এই দূরত্ব কমে হবে ২১২ কিলোমিটার। ১১২ কিলোমিটার দূরত্ব কমায় আশা করা হচ্ছে অন্তত তিন ঘণ্টা সাশ্রয় হবে। আমাদের এ কাজে ভারত এগিয়ে এসেছে।”

বাংলাদেশ রেলওয়েতে ভারতের বিভিন্ন সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “ভারত সরকার রেল উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। তিনটি এলওসির মাধ্যমে ভারত সরকার রেলওয়েতে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে একের পর এক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছি। ভারতের সঙ্গে বন্ধ থাকা সব কয়টি রেললাইন চালু করা হচ্ছে। দুদেশের মধ্যে যাত্রী ও মালবাহী ট্রেনের সংখা বাড়ানো হচ্ছে। তাছাড়া, ভারত আমাদের ক্যাটারিং সার্ভিসের উন্নয়নসহ ট্রেনিং ক্ষেত্রে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। আমাদের রেলের লোকবলকে তারা প্রশিক্ষণ দেবে বলেও জানিয়েছে।”

তিনি জানান, “খুলনা থেকে মংলা পর্যন্ত নতুন লাইন নির্মাণ, ঢাকা-টঙ্গী তৃতীয়‌ ও চতুর্থ লাইন নির্মাণ, টঙ্গী-জয়দেবপুর ডাবল লাইন নির্মাণ, সিরাজগঞ্জ-বগুড়া নতুন রেলপথ নির্মাণ, পার্বতীপুর-কাউনিয়া পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণ, খুলনা-দর্শনা, কুলাউড়া-শাহবাজপুর নতুন রেলপথ নির্মাণ, সৈয়দপুর কারখানার আধুনিকায়ন প্রকল্প ভারতীয় অর্থায়নে হচ্ছে।”

ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রয় কুমার দোরাইস্বামী বলেছেন, “ভারত-বাংলাদেশ একই সূতোয় বাঁধা। বাংলাদেশ রেলে উন্নয়নে ভারত সরকার বিশেষভাবে অবদান রাখবে। আগামীতেও যেকোনো উন্নয়নে অবদান রাখবে। আর্থিকভাবে উন্নয়নের কারণে ভারত বাংলাদেশ উভয় দেশ উপকৃত হচ্ছে।” তাছাড়া, দু দেশের মধ্যে শীঘ্রই পর্যটন ভিসা চালু করা হবে বলেও জানান দোরাইস্বামী।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন রেল সচিব সেলিম রেজা। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদার এবং রাইটস ইন্ডিয়া লিমিটেডের পরিচালক অনিল ভিজ। চুক্তি অনুযায়ী, আগামী ছয় মাসে প্রকল্পের বিস্তারিত সমীক্ষা করবে এ দুই প্রতিষ্ঠান।

তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক