০৯:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শেরপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের অনিয়ম-দুর্নীতি অভিযোগ

মো. ইউসুফ জামিল: ঘুষ, দুর্নীতি আর অনিয়মের আখড়ায় পরিনত হয়েছে শেরপুর জেলা সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিস। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই সরকার নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব রেজিস্ট্রার, কিছু দলিল লেখক ও অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সমন্বয়ে গঠিত সিন্ডিকেটকে চাহিদামতো টাকা না দিলেই ভোগান্তি শেষ থাকেনা বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দলিল লেখকদের পক্ষে গত ২০ মার্চ শেরপুর জেলা প্রশাসক এবং জেলা পুলিশ সুপার বরাবর এ লিখিত অভিযোগপত্র প্রদান করা হয়।

অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়, অত্র অফিসের সাব-রেজিস্ট্রার জনাব মোঃ আলতাফ হোসেন যোগদানের পর হইতে কিছু অসাধু দলিল লেখক, ষ্ট্যাম্প ভেন্ডার ও নকল নসিব ভেন্ডার ( মো বেলায়েত হোসেন, মো জুলহাস উদ্দিন, মো হানিফ উদ্দিন, মতিউর রহমানম মো জাহাঙ্গীর আলম, মো মোস্তফা কামাল, মো জালাল উদ্দিন এবং মতিউর রহমান শুভ গং) দীর্ঘ দিন যাবত এদের দ্বারা সিন্ডিকেট করে বিভিন্ন মৌজার জমি গড় মূল্য পরিবর্তন করে সরকারকে রাজস্ব ফাকি দিয়ে আসছে।

অভিযোগ পত্র আরও উল্লেখ করা হয়, দলিল প্রতি সরকারি ফিস বাদেও ২১০০ টাকা এবং সহি মুহুরী নকল বাবদ ৪৬০ টাকা বেআইনি ভাবে আদায় করে আসছিল। তাদের এহেন কার্যকলাপে কেউ বাঁধা দিতে চাইলে তাকে প্রাণ নাশের হুমকিসহ নানা রকমের ভয়ভীতি ও মামলা মোকদ্দমার হুমকি প্রদান করিয়া আসিতেছে এবং গত ৭/৮ দিন পূর্বে আলামাছ নামীয় অত্র অফিসের এক দলিল লেখককে চাঁদা না দেওয়ার কারনে অফিসরুমে প্রকাশ্য দিবালোকে সকলের সামনে তাকে বেধম প্রহার করা হয় ও মাহবুবুল হাসান শাহীন সরকারের নামে শেরপুর সদর থানায় ৫০ হাজার টাকার মিথ্যা চুরির নাটক সাজিয়ে মামলা দায়ের করেছেন। এমতাবস্থায় দূর্নীতি দমন কমিশন, শেরপুর সদর উপজেলা বরাবর অভিযোগ দায়ের করিলে তাহাতেও প্রতিকারতো পাওয়া যায়নি বরং উল্টো অভিযোগকারীদের প্রতিনিয়ত ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে আসছে।

অভিযোগের ব্যাপারে শেরপুর জেলা সদর সাব-রেজিস্ট্রার জনাব মোঃ আলতাফ হোসেন বলেন,

“অভিযোগ যদি কেউ করে থাকে অভিযোগ করতেই পারে। আমাকে জেলা প্রশাসক মহোদয় এবং আমার উর্ধ্বতন কর্মকতারা যদি সে অভিযোগের লিখিত জবাব চাই আমি লিখিত জবাব দিব। আমার অফিসের ভিতরে মারধরের ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না এবং মামলার ব্যাপারেও আমি জানি না।”

অভিযোগে উল্লেখিত সিন্ডিকেট সদস্য দলিল লেখক মো. জুলহাস উদ্দিন বলেন,

“আমি দলিল লেখক। আমি এটা করে চলি। যে অভিযোগ গুলো করছে এটা ষড়যন্ত্রমূলক।”

অতিরিক্ত টাকা না দেয়াতে মারধরের শিকার অভিযোগকারী দলিল লেখক মো. আলমাছ আলী বলেন,

“আমি দলিল ‍নিয়ে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের কেরানির টেবিলে রাখি। তারপর ফ্রী বাবদ ৭০০ টাকা দিলে তারা আমার কাছে ২৮০০টাকা দাবি করে না দিলে দলিলে স্বাক্ষর হবে না বলে জানাই। আমি অতিরিক্ত টাকা দিতে পারব না বলে জানিয়ে দিলে এ নিয়ে তাদের সাথে তর্ক হয় এবং আমাকে মারধর করে।”

শেরপুর জেলা নকল নবিস এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রোকনুজজামান বলেন,

“অত্র অফিসে দলিল প্রতি ২১০০ টাকা এবং নকল প্রতি ৪৬০ অতিরিক্ত নেয় সাব রেজিষ্ট্রার সহ তার সাথে জড়িত কিছু নেতা নামধারী চাঁদাবাজ।”

সাব রেজিষ্ট্রার মোঃ আলতাফ হোসেন নিয়মিত অফিস করেন না অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্যের সাথে জড়িত বলে জানান তিনি।

ট্যাগ:

শেরপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের অনিয়ম-দুর্নীতি অভিযোগ

প্রকাশ: ১২:২৩:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০১৯

মো. ইউসুফ জামিল: ঘুষ, দুর্নীতি আর অনিয়মের আখড়ায় পরিনত হয়েছে শেরপুর জেলা সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিস। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই সরকার নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব রেজিস্ট্রার, কিছু দলিল লেখক ও অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সমন্বয়ে গঠিত সিন্ডিকেটকে চাহিদামতো টাকা না দিলেই ভোগান্তি শেষ থাকেনা বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দলিল লেখকদের পক্ষে গত ২০ মার্চ শেরপুর জেলা প্রশাসক এবং জেলা পুলিশ সুপার বরাবর এ লিখিত অভিযোগপত্র প্রদান করা হয়।

অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়, অত্র অফিসের সাব-রেজিস্ট্রার জনাব মোঃ আলতাফ হোসেন যোগদানের পর হইতে কিছু অসাধু দলিল লেখক, ষ্ট্যাম্প ভেন্ডার ও নকল নসিব ভেন্ডার ( মো বেলায়েত হোসেন, মো জুলহাস উদ্দিন, মো হানিফ উদ্দিন, মতিউর রহমানম মো জাহাঙ্গীর আলম, মো মোস্তফা কামাল, মো জালাল উদ্দিন এবং মতিউর রহমান শুভ গং) দীর্ঘ দিন যাবত এদের দ্বারা সিন্ডিকেট করে বিভিন্ন মৌজার জমি গড় মূল্য পরিবর্তন করে সরকারকে রাজস্ব ফাকি দিয়ে আসছে।

অভিযোগ পত্র আরও উল্লেখ করা হয়, দলিল প্রতি সরকারি ফিস বাদেও ২১০০ টাকা এবং সহি মুহুরী নকল বাবদ ৪৬০ টাকা বেআইনি ভাবে আদায় করে আসছিল। তাদের এহেন কার্যকলাপে কেউ বাঁধা দিতে চাইলে তাকে প্রাণ নাশের হুমকিসহ নানা রকমের ভয়ভীতি ও মামলা মোকদ্দমার হুমকি প্রদান করিয়া আসিতেছে এবং গত ৭/৮ দিন পূর্বে আলামাছ নামীয় অত্র অফিসের এক দলিল লেখককে চাঁদা না দেওয়ার কারনে অফিসরুমে প্রকাশ্য দিবালোকে সকলের সামনে তাকে বেধম প্রহার করা হয় ও মাহবুবুল হাসান শাহীন সরকারের নামে শেরপুর সদর থানায় ৫০ হাজার টাকার মিথ্যা চুরির নাটক সাজিয়ে মামলা দায়ের করেছেন। এমতাবস্থায় দূর্নীতি দমন কমিশন, শেরপুর সদর উপজেলা বরাবর অভিযোগ দায়ের করিলে তাহাতেও প্রতিকারতো পাওয়া যায়নি বরং উল্টো অভিযোগকারীদের প্রতিনিয়ত ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে আসছে।

অভিযোগের ব্যাপারে শেরপুর জেলা সদর সাব-রেজিস্ট্রার জনাব মোঃ আলতাফ হোসেন বলেন,

“অভিযোগ যদি কেউ করে থাকে অভিযোগ করতেই পারে। আমাকে জেলা প্রশাসক মহোদয় এবং আমার উর্ধ্বতন কর্মকতারা যদি সে অভিযোগের লিখিত জবাব চাই আমি লিখিত জবাব দিব। আমার অফিসের ভিতরে মারধরের ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না এবং মামলার ব্যাপারেও আমি জানি না।”

অভিযোগে উল্লেখিত সিন্ডিকেট সদস্য দলিল লেখক মো. জুলহাস উদ্দিন বলেন,

“আমি দলিল লেখক। আমি এটা করে চলি। যে অভিযোগ গুলো করছে এটা ষড়যন্ত্রমূলক।”

অতিরিক্ত টাকা না দেয়াতে মারধরের শিকার অভিযোগকারী দলিল লেখক মো. আলমাছ আলী বলেন,

“আমি দলিল ‍নিয়ে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের কেরানির টেবিলে রাখি। তারপর ফ্রী বাবদ ৭০০ টাকা দিলে তারা আমার কাছে ২৮০০টাকা দাবি করে না দিলে দলিলে স্বাক্ষর হবে না বলে জানাই। আমি অতিরিক্ত টাকা দিতে পারব না বলে জানিয়ে দিলে এ নিয়ে তাদের সাথে তর্ক হয় এবং আমাকে মারধর করে।”

শেরপুর জেলা নকল নবিস এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রোকনুজজামান বলেন,

“অত্র অফিসে দলিল প্রতি ২১০০ টাকা এবং নকল প্রতি ৪৬০ অতিরিক্ত নেয় সাব রেজিষ্ট্রার সহ তার সাথে জড়িত কিছু নেতা নামধারী চাঁদাবাজ।”

সাব রেজিষ্ট্রার মোঃ আলতাফ হোসেন নিয়মিত অফিস করেন না অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্যের সাথে জড়িত বলে জানান তিনি।