১০:২৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সৌরশক্তিতে ভবিষ্যত: নবায়নযোগ্য জ্বালানীতে জোর ভারতের

জলবায়ু সংকট সামাল দিতে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানোর জন্য একাট্টা হয়ে কাজ শুরু করেছে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো। সে লক্ষ্যে এবার ভারতও বিদ্যুৎখাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার সম্প্রসারণ করতে নিয়েছে বড় বিনিয়োগের পরিকল্পনা।

ভারতের নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের সবচেয়ে বড় অন্তরায় এখন বিদ্যুৎখাতের ট্রান্সমিশন লাইনগুলো। এ লাইনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন থেকে শুরু করে সার্বিকভাবে ২ দশমিক ৪৪ ট্রিলিয়ন ডলারের (৩০ বিলিয়ন) এক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে দেশটি।

বর্তমানে ভারতের নবায়নযোগ্য জ্বালানির ট্রান্সমিশন ক্যাপাসিটি ১১২ গিগাওয়াটস। নতুন পরিকল্পনায় চলতি দশকের শেষের দিকে এ ক্যাপাসিটি বাড়িয়ে ১৫০ গিগাওয়াট করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে দেশটি। ২০৩০ সালকে সীমারেখা ধরে ২ দশমিক ৪৪ ট্রিলিয়ন ডলারের প্রকল্পটি নিয়ে শিগগিরই কাজ শুরু করবে দেশটি।

মূলত রাজস্থান ও গুজরাটের সোলার প্যানেল ও তামিলনাড়ুর উইন্ড মিলগুলোকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করার জন্য প্রাথমিকভাবে এ অর্থ খরচ করা হবে বলে জানা গেছে।

ভারতের লক্ষ্য ২০৭০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনা। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে এখন থেকেই কাজ শুরু করেছে দেশটি। বর্তমানে অ-জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে ভারতের ১৭৩ গিগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ আসে, যা ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০০ গিগাওয়াটে উন্নীত করার লক্ষ্যে কাজ করবে ভারত। এ জন্য শুরুতেই ভারতের ট্রান্সমিশন লাইন নিয়ে কাজ করতে হবে, যাতে সহজেই শহর ও শিল্পাঞ্চলে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সুবিধা পৌঁছে দেয়া যায়।
তবে কোন মাধ্যমে ভারত এই ট্রান্সমিশন লাইনের মেগা প্রজেক্টের কাজ বাস্তবায়ন করবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। এতদিন দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত পাওয়ার গ্রিড করপোরেশন এ ধরনের কাজ করলেও, ধারণা করা হচ্ছে, এবার কোনো প্রাইভেট কোম্পানিকে এ দায়িত্ব দেয়া হতে পারে। এরই মধ্যে কাজ পেতে অনেক প্রাইভেট কোম্পানি সরকারের সঙ্গে লবিং শুরু করেছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

এমনই এক লবিং গ্রুপের সদস্য ইলেকট্রিক পাওয়ার ট্রান্সমিশন অ্যাসোসিয়েশনের মহাপরিচালক বিজয় চিবার বলেন, ‘নতুন এই পরিকল্পনাটি এককথায় দেশের শিল্পখাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে সবার আগে আমাদের জানতে হবে কীভাবে ও কাদের মাধ্যমে কাজ করতে চায় সরকার।’

ভারতের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোর ক্ষমতার ৪০ শতাংশই এখন অব্যবহৃত থাকছে। মনে করা হচ্ছে, সরকার যে পরিমাণ বিদ্যুতের চাহিদার কথা মাথায় রেখে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো নির্মাণ করেছিল, প্রকৃত চাহিদা তত বেশি না হওয়াই এর কারণ। নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারের আগ্রহও এর পেছনে কাজ করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের পর ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম কার্বন নিঃসরণকারী দেশ। এ দেশে এখনো জ্বালানি হিসেবে কয়লার চাহিদা সবচেয়ে বেশি। দেশটির বিদ্যুৎ চাহিদার ৬১ শতাংশই পূরণ হয় কয়লা পুড়িয়ে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন পূর্বসূরি বারাক ওবামার জলবায়ু নীতি উল্টে দিয়ে নির্বাহী আদেশ জারি করলেন, তখন হয়তো ভারতের কয়লাখনি ব্যবসায়ীদের চেয়ে বেশি খুশি কেউ হয়নি।

তবে ভারতের সাম্প্রতিক জ্বালানি চালচিত্রে ভিন্ন ছবিই দেখা যাচ্ছে। দেশটির সরকার ঘোষণা দিয়েছে, পরবর্তী দশকের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে তাদের আর নতুন করে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কোনো প্রয়োজন নেই। সেই সঙ্গে সৌর ও বায়ুশক্তি কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ চাহিদার বড় অংশ পূরণে সরকার উদ্যোগী হয়েছে। অনেকেই বলেছেন, এটা খুব উচ্চাকাঙ্ক্ষী হচ্ছে।

তবে এসব একটা বিষয়ের দিকেই ইঙ্গিত দেয়, কয়লার ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে চাইছে ভারত। তা ছাড়া অর্থনৈতিক বিষয়টাও বিবেচ্য। দেশটিতে বর্তমানে নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদনক্ষমতা হবে ৫০ গিগাওয়াট। কিন্তু বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার জটিল হিসাব-নিকাশের কারণে তার অনেকগুলোর নির্মাণকাজই হয়তো স্থগিত করা হতে পারে।

এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার হঠাৎ করেই নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে তারা এই জ্বালানি থেকে ৫০০ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। মধ্যপ্রদেশে গত ফেব্রুয়ারি মাসে নিলামে জেতা সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনকারীরা খরচের দিক থেকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের সঙ্গে পাল্লা দিতে পেরেছিল। মোদির সরকার সম্প্রতি ৫০টি ‘সোলার পার্কের’ অনুমোদন দিয়েছে। এগুলোর মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতা ৪০ গিগাওয়াট।

তবে এত সব উদ্যোগ সত্ত্বেও ভারতে এখনো বিপুল পরিমাণ কয়লা পুড়ছে। দেশটির বহু পুরোনো প্রতিষ্ঠান সস্তায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রভাবশালী ধনাঢ্য ব্যক্তিদের মালিকানাধীন, যাঁরা হয়তো তাঁদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা ঠেকাতে উদ্যোগী হবেন। এ ছাড়া কয়লার ওপর নির্ভরশীলতা কমালে খনি খাতেও চাকরি হারানোর ভীতি বাড়বে। ফলে পুরোপুরি নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে এগোতে ভারত সরকারকে নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হতে পারে। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক

ট্যাগ:

সৌরশক্তিতে ভবিষ্যত: নবায়নযোগ্য জ্বালানীতে জোর ভারতের

প্রকাশ: ০৩:৪৬:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৩

জলবায়ু সংকট সামাল দিতে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানোর জন্য একাট্টা হয়ে কাজ শুরু করেছে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো। সে লক্ষ্যে এবার ভারতও বিদ্যুৎখাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার সম্প্রসারণ করতে নিয়েছে বড় বিনিয়োগের পরিকল্পনা।

ভারতের নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের সবচেয়ে বড় অন্তরায় এখন বিদ্যুৎখাতের ট্রান্সমিশন লাইনগুলো। এ লাইনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন থেকে শুরু করে সার্বিকভাবে ২ দশমিক ৪৪ ট্রিলিয়ন ডলারের (৩০ বিলিয়ন) এক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে দেশটি।

বর্তমানে ভারতের নবায়নযোগ্য জ্বালানির ট্রান্সমিশন ক্যাপাসিটি ১১২ গিগাওয়াটস। নতুন পরিকল্পনায় চলতি দশকের শেষের দিকে এ ক্যাপাসিটি বাড়িয়ে ১৫০ গিগাওয়াট করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে দেশটি। ২০৩০ সালকে সীমারেখা ধরে ২ দশমিক ৪৪ ট্রিলিয়ন ডলারের প্রকল্পটি নিয়ে শিগগিরই কাজ শুরু করবে দেশটি।

মূলত রাজস্থান ও গুজরাটের সোলার প্যানেল ও তামিলনাড়ুর উইন্ড মিলগুলোকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করার জন্য প্রাথমিকভাবে এ অর্থ খরচ করা হবে বলে জানা গেছে।

ভারতের লক্ষ্য ২০৭০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনা। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে এখন থেকেই কাজ শুরু করেছে দেশটি। বর্তমানে অ-জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে ভারতের ১৭৩ গিগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ আসে, যা ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০০ গিগাওয়াটে উন্নীত করার লক্ষ্যে কাজ করবে ভারত। এ জন্য শুরুতেই ভারতের ট্রান্সমিশন লাইন নিয়ে কাজ করতে হবে, যাতে সহজেই শহর ও শিল্পাঞ্চলে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সুবিধা পৌঁছে দেয়া যায়।
তবে কোন মাধ্যমে ভারত এই ট্রান্সমিশন লাইনের মেগা প্রজেক্টের কাজ বাস্তবায়ন করবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। এতদিন দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত পাওয়ার গ্রিড করপোরেশন এ ধরনের কাজ করলেও, ধারণা করা হচ্ছে, এবার কোনো প্রাইভেট কোম্পানিকে এ দায়িত্ব দেয়া হতে পারে। এরই মধ্যে কাজ পেতে অনেক প্রাইভেট কোম্পানি সরকারের সঙ্গে লবিং শুরু করেছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

এমনই এক লবিং গ্রুপের সদস্য ইলেকট্রিক পাওয়ার ট্রান্সমিশন অ্যাসোসিয়েশনের মহাপরিচালক বিজয় চিবার বলেন, ‘নতুন এই পরিকল্পনাটি এককথায় দেশের শিল্পখাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে সবার আগে আমাদের জানতে হবে কীভাবে ও কাদের মাধ্যমে কাজ করতে চায় সরকার।’

ভারতের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোর ক্ষমতার ৪০ শতাংশই এখন অব্যবহৃত থাকছে। মনে করা হচ্ছে, সরকার যে পরিমাণ বিদ্যুতের চাহিদার কথা মাথায় রেখে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো নির্মাণ করেছিল, প্রকৃত চাহিদা তত বেশি না হওয়াই এর কারণ। নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারের আগ্রহও এর পেছনে কাজ করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের পর ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম কার্বন নিঃসরণকারী দেশ। এ দেশে এখনো জ্বালানি হিসেবে কয়লার চাহিদা সবচেয়ে বেশি। দেশটির বিদ্যুৎ চাহিদার ৬১ শতাংশই পূরণ হয় কয়লা পুড়িয়ে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন পূর্বসূরি বারাক ওবামার জলবায়ু নীতি উল্টে দিয়ে নির্বাহী আদেশ জারি করলেন, তখন হয়তো ভারতের কয়লাখনি ব্যবসায়ীদের চেয়ে বেশি খুশি কেউ হয়নি।

তবে ভারতের সাম্প্রতিক জ্বালানি চালচিত্রে ভিন্ন ছবিই দেখা যাচ্ছে। দেশটির সরকার ঘোষণা দিয়েছে, পরবর্তী দশকের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে তাদের আর নতুন করে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কোনো প্রয়োজন নেই। সেই সঙ্গে সৌর ও বায়ুশক্তি কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ চাহিদার বড় অংশ পূরণে সরকার উদ্যোগী হয়েছে। অনেকেই বলেছেন, এটা খুব উচ্চাকাঙ্ক্ষী হচ্ছে।

তবে এসব একটা বিষয়ের দিকেই ইঙ্গিত দেয়, কয়লার ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে চাইছে ভারত। তা ছাড়া অর্থনৈতিক বিষয়টাও বিবেচ্য। দেশটিতে বর্তমানে নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদনক্ষমতা হবে ৫০ গিগাওয়াট। কিন্তু বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার জটিল হিসাব-নিকাশের কারণে তার অনেকগুলোর নির্মাণকাজই হয়তো স্থগিত করা হতে পারে।

এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার হঠাৎ করেই নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে তারা এই জ্বালানি থেকে ৫০০ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। মধ্যপ্রদেশে গত ফেব্রুয়ারি মাসে নিলামে জেতা সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনকারীরা খরচের দিক থেকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের সঙ্গে পাল্লা দিতে পেরেছিল। মোদির সরকার সম্প্রতি ৫০টি ‘সোলার পার্কের’ অনুমোদন দিয়েছে। এগুলোর মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতা ৪০ গিগাওয়াট।

তবে এত সব উদ্যোগ সত্ত্বেও ভারতে এখনো বিপুল পরিমাণ কয়লা পুড়ছে। দেশটির বহু পুরোনো প্রতিষ্ঠান সস্তায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রভাবশালী ধনাঢ্য ব্যক্তিদের মালিকানাধীন, যাঁরা হয়তো তাঁদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা ঠেকাতে উদ্যোগী হবেন। এ ছাড়া কয়লার ওপর নির্ভরশীলতা কমালে খনি খাতেও চাকরি হারানোর ভীতি বাড়বে। ফলে পুরোপুরি নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে এগোতে ভারত সরকারকে নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হতে পারে। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক