শেষ হলো ভারতের এ যাবত কালের সবচেয়ে বড় সশস্ত্র মহড়া ভিজিল – ২২। গত ১৫ ও ১৬ নভেম্বর ভারতের সম্পূর্ণ ৭,৫১৬ কিলোমিটার উপকূল রেখা জুড়ে এবং এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জ়োনে সামরিক মহড়াটি অনুষ্ঠিত হয়। দুই দিন ব্যাপী এই মহড়ায় ভারতীয় নৌবাহিনী, উপকূলরক্ষী বাহিনী-সহ বেশ কয়েকটি সশস্ত্র বাহিনী অংশ নিয়েছে। পরবর্তীতে তথ্যটি নিশ্চিত করে বিবৃতি দিয়েছে ভারতের প্রতিরক্ষা দপ্তর।
এদিকে, এই মহড়ার সঙ্গে জড়িত সামরিক আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ‘সি ভিজিল ২০২২’ নামে এই মহড়ার মূলত দুটি লক্ষ্য – প্রথমত, কোনও বিপদ ঘটলে তার মোকাবিলার জন্য বাহিনীর প্রস্তুতি যাচাই এবং সার্বিক সামুদ্রিক নিরাপত্তা জোরদার করা।
এইবারের ‘সি ভিজিল’ অনুশীলন বহু দিক থেকেই অভূতপূর্ব বলে দাবি করেছে সশস্ত্র বাহিনী। ২০০৮ সালে মুম্বইয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর, সামুদ্রিক নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১৮ সালে প্রথম এই ধরনের অনুশীলনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। ভারতীয় নৌবাহিনী, উপকূলরক্ষী বাহিনী, শুল্ক বিভাগ এবং অন্যান্য সমুদ্র নিরাপত্তা সংস্থা এই অনুশীলনে যোগ দেবে। আর এই বড় মাপের সামরিক মহড়ায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে সহায়তা করেছে স্বরাষ্ট্র, নৌপরিবহন এবং জলপথ, পেট্রোলিয়াম এবং প্রাকৃতিক গ্যাস, মৎস্য, পশুপালন এবং দুগ্ধ, শুল্ক বিভাগ।
সশস্ত্র বাহিনীর এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “ভারতের পুরো ৭,৫১৬ কিলোমিটার উপকূল রেখা এবং একান্ত অর্থনৈতিক অঞ্চলে এই অনুশীলন হবে। এই অনুশীলনে অংশ নেবে সমস্ত উপকূলবর্তী রাজ্য, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং মৎস্যজীবী, উপকূলীয় সম্প্রদায় এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডাররা। অনুশীলন পরিচালনা করবে ভারতীয় নৌবাহিনী, উপকূলরক্ষী বাহিনী এবং সমুদ্র নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রক।” তিনি আরও জানিয়েছেন, বিভিন্ন উপকূলীয় রাজ্যগুলোতে নিয়মিতভাবে ছোট আকারে সামরিক মহড়া হয়ে থাকে। তবে জাতীয় স্তরে সি ভিজিল অনুশীলনের উদ্দেশ্য অনেক বড় লক্ষ্য পূরণ করা।
সর্বোচ্চ স্তরে এই অনুশীলন সামুদ্রিক নিরাপত্তা এবং উপকূলীয় প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে ভারতের প্রস্তুতির মূল্যায়ন করার একটি বড় সুযোগ বলে মনে করা হচ্ছে। সি ভিজিল-২২ মহড়া ভারতের শক্তি এবং দুর্বলতাগুলো ধরা পড়েছে বলে আশা করছে সশস্ত্র বাহিনী। এর ফলে, সামুদ্রিক ও জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো শক্তিশালী হবে বলে দাবি সশস্ত্র বাহিনীর। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক