ভুয়ো চাকরির খপ্পরে পড়ে থাইল্যান্ড গিয়ে আটকে গিয়েছেন ৩০০ জন ভারতীয়। সূত্রের খবর, চাকরির প্রতিশ্রুতি পেয়ে আন্তর্জাতিক র্যাকেটের শিকার হয়েছিলেন ওই ভারতীয়রা। ওই ৩০০ জনের মধ্যে ৬০ জনই তামিলনাড়ুর। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছে, ওই ৩০০ জন ভারতীয়কে বন্দি করে একটি গ্যাং। অভিযোগ, বন্দীদের দিয়ে নানাবিধ সাইবার ক্রাইম কার্যকলাপ করানো হয়। থাইল্যান্ডের সীমান্তবর্তী দক্ষিণ-পূর্ব মায়ানমারের কাইন রাজ্যের মায়াওয়াদ্দি এলাকা পুরোপুরি মায়ানমার সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই এবং কিছু জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী এটির ওপর কর্তৃত্ব কায়েম করে।
কীভাবে জানা গেল ঘটনাটা: ঘটনার সঙ্গে পরিচিত ব্যক্তিরা বলেছেন যে, ভারতীয় নাগরিকদের থাইল্যান্ডে চাকরির প্রস্তাব দিয়ে প্রতারিত করে একটি আন্তর্জাতিক গ্যাং। তারাই পরবর্তীতে তাঁদের অবৈধ ভাবে মায়ানমারে নিয়ে যায়। গত শনিবার কিছু তামিল পুরুষ একটি এসওএস ভিডিয়ো পাঠিয়ে কেন্দ্র ও তামিলনাড়ু সরকারকে তাদের উদ্ধার করার জন্য একযোগে অনুরোধ জানায়। তারপরেই ঘটনাটি দিনের আলো দেখে।
এসওএস ভিডিওর মাধ্যমে ওই আটক তামিল ব্যক্তিরা বলেছেন, তাঁদের দিনে ১৫ ঘণ্টার বেশি কাজ করতে বাধ্য করানো হয়। আর যদি তাঁরা কোনও ভাবে নিয়োগ কর্তাদের কথা অমান্য করেন, তাহলে তাঁদের মারধর করা হয়, এমনকি ইলেকট্রিক শকও দেওয়া হয়।
উদ্ধারের জন্য কাজ করছে ভারতীয় দূতাবাস: ইতিমধ্যে ইয়াঙ্গুনে ভারতীয় দূতাবাস তাঁদের উদ্ধারে মায়ানমার সরকারের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে। “এলাকাটি পুরোপুরি মায়ানমার সরকারের নিয়ন্ত্রণে না থাকায় ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই ভারতীয় নাগরিকদের উদ্ধারের জন্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে । এখনও পর্যন্ত দূতাবাস মায়াওয়াদ্দি এলাকায় আটকে পড়া ৩০ জনেরও বেশি ভারতীয় নাগরিককে উদ্ধার করেছে। বাকিদেরও যত দ্রুত সম্ভব উদ্ধারের চেষ্টা চলছে”, একটি সূত্র দাবি করেছে।
ভুয়ো চাকরি ফাঁদে পড়ে প্রতারিত না হতে যা করবেন: গত ০৫ জুলাই চাকরি প্রদানকারী অসাধু সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে সতর্কতা জারি করে ভারতীয় দূতাবাস। “আমরা সাম্প্রতিক অতীতে পর্যবেক্ষণ করেছি, মায়ানমারের প্রত্যন্ত পূর্ব সীমান্ত এলাকায় অবস্থিত ডিজিটাল স্ক্যামিং/ফোরজ ক্রিপ্টো কার্যক্রমে নিয়োজিত কিছু তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি, আইটি সেক্টরে সম্ভাব্য কর্মসংস্থানের সুযোগের অজুহাতে রিক্রুটিং এজেন্টদের মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গা থেকে ভারতীয় কর্মীদের নিয়োগ করছে।”
প্রাথমিক নিয়োগের পরে মিশন বলেছে, ভারতীয় শ্রমিকদের যথাযথ নথিপত্র ছাড়াই অবৈধভাবে মায়ানমারে নিয়ে যাওয়া হয়, যার ফলে তাঁদের ‘ফাঁদে ফেলা’ হয়। আরও যোগ করে বলা হয়েছে, “এই ভয়ঙ্কর ঘটনার পর ভারতীয় নাগরিকদের যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করতে এবং নিয়োগকারী এজেন্টদের পূর্বসূরি যাচাই করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। প্রস্তাবিত যে কোনও কর্মসংস্থান গ্রহণ করার আগে সমস্ত প্রয়োজনীয় তথ্য (চাকরির বিবরণ, কোম্পানির বিবরণ, অবস্থান, কর্মসংস্থান চুক্তি ইত্যাদি) থাকা বাঞ্ছনীয়।” খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক