ব্রিকসকে সন্ত্রাসবাদ, বিশেষ করে, আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই জিরো টলারেন্স প্রদর্শন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বৃহস্পতিবার, ব্রিকস পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তব্য প্রদান করতে গিয়ে এমন অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন চীনের রাষ্ট্রীয় কাউন্সিলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। এতে জয়শঙ্কর এবং ওয়াং ই ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্যান্ডর, ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাঞ্জা, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সারগেই লাভরভ।
বৈঠকের শুরুতে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের একটি ভিডিও ভাষণ সম্প্রচার করা হয়। ওয়াং ই বলেন, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ভাষণে ব্রিকস পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের উচ্চ পর্যায়ের মূল্যায়ন করেছেন। তিনি নিরাপত্তা ও উন্নয়নের দুটি প্রধান বিষয় গভীরভাবে তুলে ধরেছেন এবং ব্রিকস রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা আরও গভীর করার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতামত দিয়েছেন। এই বৈঠক সফল করার জন্য দিকনির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
ওয়াং ই বলেন যে বিগত পাঁচ বছরে, ব্রিকস দেশের নেতাদের অধীনে, সবাই অভিন্ন উদ্বেগজনক প্রধান আন্তর্জাতিক ইস্যুতে একসঙ্গে কথা বলেছে এবং পাঁচটি দেশের অভিন্ন স্বার্থ দৃঢ়ভাবে রক্ষা করেছে। বর্তমান জটিল পরিস্থিতিতে, সবাইকে সঠিক পথ চিনতে হবে, ঐক্যমত্য গড়ে তুলতে হবে এবং আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান হতে হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীবর্গ মহামারী মোকাবিলা ও বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় চীনের সক্রিয় ভূমিকার প্রশংসা করেন। তাঁরা মহামারী প্রতিরোধ, বাণিজ্য, স্বাস্থ্য, সংস্কৃতি ইত্যাদির খাতে সহযোগিতা জোরদার করা এবং জাতিসংঘের ২০৩০ সাল নাগাদ টেকসই উন্নয়নের এজেন্ডা বাস্তবায়নে আগ্রহ পোষণ করেন।
বৈঠকের পর একাধিক টুইটের মাধ্যমে বৈঠকে উত্থাপিত মূল বিষয় হাইলাইট করেছেন জয়শঙ্কর। সেগুলো যথাক্রমে,
১. আমাদের কেবলমাত্র কোভিড মহামারী থেকে আর্থ-সামাজিক পুনরুদ্ধার করতে হবে না, বরং স্থিতিস্থাপক এবং নির্ভরযোগ্য সরবরাহ চেইন তৈরি করতে হবে।
২. ইউক্রেন সংঘাতের নক-অন প্রভাব শক্তি, খাদ্য এবং পণ্যের খরচে তীব্র বৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করেছে। উন্নয়নশীল বিশ্বের স্বার্থে এটি অবশ্যই প্রশমিত করা উচিত।
৩. ব্রিকস বারবার সার্বভৌম সমতা, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি সম্মান নিশ্চিত করেছে। আমাদের এই অঙ্গীকার সমূহ মেনে চলতে হবে।
৪. ব্রিকসকে সর্বসম্মতিক্রমে এবং বিশেষভাবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার সমর্থন করা উচিত।
৫. একসাথে, আমাদের উচিত জলবায়ু কর্ম এবং জলবায়ু ন্যায়বিচারের জন্য উন্নত দেশগুলির দ্বারা সম্পদের বিশ্বাসযোগ্য অঙ্গীকারের জন্য চাপ দেওয়া।
৬. ব্রিকস অবশ্যই সন্ত্রাসবাদের প্রতি শূন্য সহনশীলতা প্রদর্শন করবে, বিশেষ করে সীমান্ত সন্ত্রাসবাদ।
৭. একটি বিশ্বায়িত এবং ডিজিটালাইজড বিশ্ব বিশ্বাস এবং স্বচ্ছতার প্রতি যথাযথ সম্মান দেবে ব্রিকস।
৮. টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা একটি ব্যাপক পদ্ধতিতে যোগাযোগ করা আবশ্যক। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক