০১:৫৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দু দশকে বিবর্তন এসেছে ভারত-মার্কিন সম্পর্কে: জয়শঙ্কর

ভারত-মার্কিন ৪র্থ ২+২ মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠক শেষে বর্তমানে ওয়াশিংটন ডিসিতেই অবস্থান করছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। কর্মব্যবস্ততার মাঝেই হাওয়ার্ড ইউনিভার্সিটির উদ্যোগে ইন্ডিয়া-ইউএস এডুকেশন কোলাবোরেশন -শীর্ষক এক ইভেন্টে যোগ দেন তিনি। গত ১২ এপ্রিল, মঙ্গলবার, ইভেন্টটি অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে জয়শঙ্কর বলেন, “গত দুই দশকে ভারত-মার্কিন সম্পর্কের সত্যিকারের পরিবর্তন হয়েছে। ক্রমশ সম্পর্কের গভীরতা বাড়ছে আমাদের। ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের মধ্যকার দৃঢ় সংযোগের ফলেই দেশ দুটো ঘনিষ্ঠ মিত্র হয়ে উঠেছে।”

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিঙ্কেনের উপস্থিতিতে হাওয়ার্ড ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের উদ্দেশ্যে অভিজ্ঞ এই কূটনীতিক বলেন, “হাওয়ার্ড ইউনিভার্সিটি শুধু আমাদের ঐতিহ্য কিংবা গর্বের অংশ নয়, বরং ভবিষ্যতেও অপার সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিবে এই বিদ্যাপীঠ। আমাদের ভবিষ্যত সম্পর্কের মজবুতিকরণে আমাদেরকে কাজ করতে হবে। আমেরিকান তরুণদেরকেও ভারত তথা বিশ্ব সম্পর্কে আরও বেশি করে জানতে হবে।”

যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত প্রবাসী ভারতীয়দের উদ্দেশ্যে জয়শঙ্কর বলেন, “কৌশলগত ঘনিষ্ঠতা, নিরাপত্তা সহযোগিতা কিংবা অর্থনৈতিক কর্মসূচি এবং প্রযুক্তিগত অংশীদারিত্ব, সর্বক্ষেত্রেই ঘনিষ্ঠ হচ্ছে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক। বৈশ্বিক স্তরে আমাদের সম্পর্কের গভীরতা ও প্রাসঙ্গিকতা বাড়ছে। এর অন্যতম কারণ এখানে বসবাসরত সাড়ে ৪ মিলিয়ন ভারতীয় প্রবাসী। তারা ছাত্রত্ব, শিক্ষাবিদ, গবেষক এবং অন্যান্য পেশায় অনবদ্য অবদান রাখছেন। আমাদের শক্তির অন্যতম উৎস তারা।”

এসময়, ভারত-মার্কিন শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নের বিষয়ে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ চালুর বিষয়ে কথা বলেন জয়শঙ্কর। গোটা কার্যক্রমটি শিক্ষা, গবেষণা, উদ্ভাবন এবং উদ্যোক্তা তৈরীর ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ অন্বেষণ করতে সক্ষম করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এর আগে মার্কিন মুল্লুকের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে সদ্য সমাপ্ত ৪র্থ ২+২ মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠকে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নিয়ে নিজের মূল্যায়ন ব্যক্ত করেছিলেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি বলেছিলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন রোধে ব্যবস্থা নেয়া থেকে আরম্ভ করে করোনা মহামারীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা কিংবা সামুদ্রিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা থেকে শুরু করে উদীয়মান প্রযুক্তির প্রচার, ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একসাথে যা করবে, তাই দৃশ্যমান পার্থক্য এনে দিবে।”

এর আগে, এক ভার্চুয়াল সম্মেলনে বৈঠকে বসেছিলেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেখানেও ভারত-মার্কিন কৌশলগত অংশীদারিত্বের জয়গান করা হয়েছিলো উভয় রাষ্ট্রপ্রধানের তরফে। পাশাপাশি রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে ভারতের নিরপেক্ষ অবস্থানের ব্যাখ্যাও দেন মোদী।

এদিকে, ২+২ বৈঠকে, ভারতের মহাকাশ বিভাগ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের মধ্যে একটি চুক্তি, নিকট ভবিষ্যতে প্রতিরক্ষা খাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংলাপ শুরু করা, সামরিক মহড়ার পরিধি বাড়ানো, সাইবার-ইন্টারনেট সুরক্ষা, বিশেষ বাহিনী, বাণিজ্য উদ্যোগ এবং আলোচনাধীন অন্যান্য উদ্যোগ নিয়ে বিশদ কথা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ভারত-মার্কিন এফটিএ নিয়েও আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক

ট্যাগ:

দু দশকে বিবর্তন এসেছে ভারত-মার্কিন সম্পর্কে: জয়শঙ্কর

প্রকাশ: ০৭:৪৮:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ এপ্রিল ২০২২

ভারত-মার্কিন ৪র্থ ২+২ মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠক শেষে বর্তমানে ওয়াশিংটন ডিসিতেই অবস্থান করছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। কর্মব্যবস্ততার মাঝেই হাওয়ার্ড ইউনিভার্সিটির উদ্যোগে ইন্ডিয়া-ইউএস এডুকেশন কোলাবোরেশন -শীর্ষক এক ইভেন্টে যোগ দেন তিনি। গত ১২ এপ্রিল, মঙ্গলবার, ইভেন্টটি অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে জয়শঙ্কর বলেন, “গত দুই দশকে ভারত-মার্কিন সম্পর্কের সত্যিকারের পরিবর্তন হয়েছে। ক্রমশ সম্পর্কের গভীরতা বাড়ছে আমাদের। ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের মধ্যকার দৃঢ় সংযোগের ফলেই দেশ দুটো ঘনিষ্ঠ মিত্র হয়ে উঠেছে।”

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিঙ্কেনের উপস্থিতিতে হাওয়ার্ড ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের উদ্দেশ্যে অভিজ্ঞ এই কূটনীতিক বলেন, “হাওয়ার্ড ইউনিভার্সিটি শুধু আমাদের ঐতিহ্য কিংবা গর্বের অংশ নয়, বরং ভবিষ্যতেও অপার সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিবে এই বিদ্যাপীঠ। আমাদের ভবিষ্যত সম্পর্কের মজবুতিকরণে আমাদেরকে কাজ করতে হবে। আমেরিকান তরুণদেরকেও ভারত তথা বিশ্ব সম্পর্কে আরও বেশি করে জানতে হবে।”

যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত প্রবাসী ভারতীয়দের উদ্দেশ্যে জয়শঙ্কর বলেন, “কৌশলগত ঘনিষ্ঠতা, নিরাপত্তা সহযোগিতা কিংবা অর্থনৈতিক কর্মসূচি এবং প্রযুক্তিগত অংশীদারিত্ব, সর্বক্ষেত্রেই ঘনিষ্ঠ হচ্ছে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক। বৈশ্বিক স্তরে আমাদের সম্পর্কের গভীরতা ও প্রাসঙ্গিকতা বাড়ছে। এর অন্যতম কারণ এখানে বসবাসরত সাড়ে ৪ মিলিয়ন ভারতীয় প্রবাসী। তারা ছাত্রত্ব, শিক্ষাবিদ, গবেষক এবং অন্যান্য পেশায় অনবদ্য অবদান রাখছেন। আমাদের শক্তির অন্যতম উৎস তারা।”

এসময়, ভারত-মার্কিন শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নের বিষয়ে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ চালুর বিষয়ে কথা বলেন জয়শঙ্কর। গোটা কার্যক্রমটি শিক্ষা, গবেষণা, উদ্ভাবন এবং উদ্যোক্তা তৈরীর ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ অন্বেষণ করতে সক্ষম করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এর আগে মার্কিন মুল্লুকের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে সদ্য সমাপ্ত ৪র্থ ২+২ মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠকে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নিয়ে নিজের মূল্যায়ন ব্যক্ত করেছিলেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি বলেছিলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন রোধে ব্যবস্থা নেয়া থেকে আরম্ভ করে করোনা মহামারীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা কিংবা সামুদ্রিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা থেকে শুরু করে উদীয়মান প্রযুক্তির প্রচার, ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একসাথে যা করবে, তাই দৃশ্যমান পার্থক্য এনে দিবে।”

এর আগে, এক ভার্চুয়াল সম্মেলনে বৈঠকে বসেছিলেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেখানেও ভারত-মার্কিন কৌশলগত অংশীদারিত্বের জয়গান করা হয়েছিলো উভয় রাষ্ট্রপ্রধানের তরফে। পাশাপাশি রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে ভারতের নিরপেক্ষ অবস্থানের ব্যাখ্যাও দেন মোদী।

এদিকে, ২+২ বৈঠকে, ভারতের মহাকাশ বিভাগ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের মধ্যে একটি চুক্তি, নিকট ভবিষ্যতে প্রতিরক্ষা খাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংলাপ শুরু করা, সামরিক মহড়ার পরিধি বাড়ানো, সাইবার-ইন্টারনেট সুরক্ষা, বিশেষ বাহিনী, বাণিজ্য উদ্যোগ এবং আলোচনাধীন অন্যান্য উদ্যোগ নিয়ে বিশদ কথা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ভারত-মার্কিন এফটিএ নিয়েও আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক