মার্কিন মুল্লুকের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে সদ্য সমাপ্ত ৪র্থ ২+২ মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠককে ‘খুবই অর্থবহ’ এবং ‘গম্ভীর আলোচনা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। গোটা আয়োজনটি দু দেশের মধ্যকার কৌশলগত প্রতিরক্ষা ব্যস্ততাকে আরও শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বৈঠক পরবর্তী এক টুইটে রাজনাথ লিখেছেন, “ওয়াশিংটন ডিসিতে ২+২ মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠকে অত্যন্ত অর্থবহ ও গভীর আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে আমরা আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমূহ সহ গোটা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নিয়ে নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি বিনিময় করেছি। ভারত-মার্কিন প্রতিরক্ষা সহযোগিতা ক্রমশ প্রসারিত হচ্ছে এবং তা আরও শক্তিশালী হবে।”
মন্ত্রী জানিয়েছেন, “বৈঠকে ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয় রাষ্ট্রই আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং আইনের শাসন প্রচারে নিজেদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।”
উল্লেখ্য, ১১ এপ্রিল ওয়াশিংটন ডিসিতে চতুর্থ ২+২ মন্ত্রী পর্যায়ের সংলাপে বসে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। বৈঠকে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। অন্যদিকে, মার্কিন প্রতিনিধিত্ব করেন বাইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লয়েড অস্টিন।
বৈঠকের পর ভিন্ন আরেকটি টুইটে রাজনাথ লিখেছেন, “ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কৌশলগত প্রতিরক্ষা ব্যস্ততাকে শক্তিশালী করার জন্য বৈঠকটি গুরুত্বপূর্ণ এবং পারস্পরিক স্বার্থের ক্ষেত্রে আমাদের পাশাপাশি কাজ করতে সক্ষম করবে। আমাদের বর্ধিত সহযোগিতা শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য এবং গ্লোবাল কমন্সে অবাধ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে আশা করি।”
রাজনাথ উল্লেখ করেছেন, “ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই একটি মুক্ত, উন্মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং নিয়ম-ভিত্তিক ইন্দো-প্যাসিফিক এবং ভারত মহাসাগর অঞ্চলের অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ভাগ করে নেয়। ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধির জন্য আমাদের অংশীদারিত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
রাজনাথ বলেন, “ভারতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সন্ত্রাসবাদকে ব্যবহারের বিষয়টি ২+২ বৈঠকে বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছে। ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ব্যাপক সম্পৃক্ততার গুরুত্ব নিয়েও কথা হয়েছে।”
এসবের পাশাপাশি ভারতের মহাকাশ বিভাগ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের মধ্যে একটি চুক্তি, নিকট ভবিষ্যতে প্রতিরক্ষা খাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংলাপ শুরু করা, সামরিক মহড়ার পরিধি বাড়ানো, সাইবার, বিশেষ বাহিনী, বাণিজ্য উদ্যোগ এবং আলোচনাধীন অন্যান্য উদ্যোগ নিয়ে বিশদ কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজনাথ।
জানা গিয়েছে, ২+২ বৈঠকের আলোচনা চলাকালীন মার্কিন কোম্পানিগুলোর সাথে উন্নয়ন এবং সহ-উৎপাদনের বিষয়ে ভারতের আগ্রহের কথাও ব্যক্ত করেছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। মেক ইন ইন্ডিয়া কর্মসূচিতে মার্কিন অংশীদারিত্ব নিশ্চিতের বিষয়ে নিজের ইচ্ছের কথা জানান তিনি। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক