সম্প্রতি শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে যদি কোনো একটি নির্দিষ্ট পক্ষকে বেছে নিতে হয়, তবে তা কেবলমাত্র ‘শান্তির’ পক্ষ বলে অভিমত দিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ০৬ এপ্রিল, বুধবার, ভারতের লোকসভাতে বক্তব্য প্রদানকালে ইউরোপের চলমান সংঘাত নিয়ে এভাবেই অভিমত ব্যক্ত করেন মোদী মন্ত্রীসভার গুরুত্বপূর্ণ এই মন্ত্রী।
জয়শঙ্কর বলেন, “ইউক্রেনের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে ভারত গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা সর্বোতভাবে যে কোনও সঙ্ঘাতের বিরুদ্ধে। আমরা বিশ্বাস করি রক্ত ঝরিয়ে এবং নিরপরাধ মানুষের জীবনের মূল্যে কোনও সমস্যার সমাধান মেলে না। বর্তমান পরিস্থিতিতে একমাত্র আলোচনা এবং কূটনীতির দ্বারা যে কোনো বিরোধের সমাধান সম্ভব।’’
নিজ বক্তৃতায়, যুদ্ধ শুরুর পরে ইউক্রেন থেকে ভারতীয় পড়ুয়া-সহ আটকে পড়া ভারতীয় নাগরিকদের উদ্ধারের ঘটনাকে ‘নরেন্দ্র মোদী সরকারের বড় সাফল্য’ বলে বর্ণনা করেছেন জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, “যুদ্ধ পরিস্থিতিতে চার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ইউক্রেনের চার প্রতিবেশী দেশে গিয়ে সড়ক পথে সীমান্ত পেরুনো ভারতীয়দের দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করেছিলেন। সে কারণেই এই সাফল্য। দেশের ইতিহাসে কখনওই এতো বড় পরিসরে ভিনদেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধারের নজির নেই।”
তাঁর দাবি, “এই অপারেশনে ব্যক্তিগত ভাবে নজর ছিল প্রধানমন্ত্রীর। প্রয়োজনে উনি বৈঠক করেছেন এবং গোটা উদ্ধারকাজ পর্যবেক্ষণ করেছেন।”
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে ভারত কোনদিকে? এই প্রশ্নের জবাবে জয়শঙ্কর বলেছেন, “ভারত শান্তির পক্ষে। বুচা গণহত্যা নিন্দনীয়। এই ঘটনায় স্বাধীন তদন্তে জোর দেওয়া হোক।”
জয়শঙ্কর বলেন, “যদি আপনারা প্রশ্ন করেন ভারত কোনদিকে, তাহলে আমরা বলব ভারত শান্তির পক্ষে। অবিলম্বে হিংসা থামানোর পক্ষে। এটাই আমাদের অবস্থান, যা নানাভাবে আন্তর্জাতিক মঞ্চের কাছে তুলে ধরা হয়েছে।”
জয়শঙ্করের দাবি, “আমরা বরাবরই দুই দেশের শান্তি আলোচনার পক্ষে জোর দিয়েছি। যদি এই ব্যাপারে ভারতের কোনও প্রয়োজন পড়ে, তাহলে আমরা অবদান রাখতে প্রস্তুত।”
এর আগে গত মঙ্গলবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে বুচা গণহত্যার নিন্দা করেছিলো ভারত। একইসঙ্গে বুচা গণহত্যার ঘটনায় স্বাধীন তদন্তের আহ্বানেও সমর্থন জানিয়েছে দেশটি। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে বুচা গণহত্যা প্রসঙ্গে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ভারতীয় প্রতিনিধি টিএস তিরুমূর্তি। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক