০৫:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারত-অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত

অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে নতুন বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হল ভারতের। ভারতের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল ও অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী ড্যান তেহানের মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। নতুন এই চুক্তিকে ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ বলে বর্ণনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। পাশাপাশি পীযূষের আশা, এই চুক্তির ফলে ১০ লক্ষ চাকরির সুযোগ তৈরি হবে। এবং রাতারাতি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিনিয়োগ একলাফে বেড়ে যাবে অনেকটাই।

শনিবার একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে দুই দেশের বাণিজ্যমন্ত্রীদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। সেখানেই এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটা একটা ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এত অল্প সময়ের মধ্যে এত গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিতে ঐকমত্য দুই দেশের পারস্পরিক আস্থার পরিচয় দেয়। এটি সত্যিই আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এই চুক্তির ফলে আমরা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের স্থিতাবস্থায় অবদান রাখতে পারবো। পাশাপাশি পারস্পরিক সহায়তার জায়গাটিকে আরও মজবুত করা সম্ভব হবে।”

মোদী আরও বলেন, “পড়ুয়া, পেশাদার ও পর্যটকদের ক্ষেত্রে পারস্পরিক বিনিময়ের পথটিও আরও সুগম হল এই নয়া চুক্তিতে।” আসন্ন মহিলা বিশ্বকাপ ফাইনালের জন্য অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট দলকেও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।

একই ভাবে উচ্ছ্বসিত পীযূষ গোয়েলও। তাঁর কথায়, “আমরা আশা করছি আগামী ৪-৫ বছরের মধ্যেই দেশে ১০ লক্ষ চাকরির সুযোগ বাড়বে। ভারতীয় শেফ ও যোগ প্রশিক্ষকদের জন্য নতুন নতুন সুযোগ তৈরি হবে।”

এই চুক্তির ফলে বিনিয়োগ দ্বিগুণ হয়ে যাবে বলেও আশা ভারতীয় বাণিজ্য মন্ত্রীর। ২৭ বিলিয়নের পরিবর্তে এবার ৪৫-৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের স্বপ্ন দেখছেন তিনি। পাশাপাশি শিক্ষা, প্রযুক্তি ও অন্যান্য ক্ষেত্রের লাভবান হওয়ার বিষয়েও আশা ব্যক্ত করেছেন পীযূষ।

এই চুক্তি প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রী আরও বলেন, “ভারত-অস্ট্রেলিয়া অংশীদারিত্ব আরও শক্তিশালী হবে এই চুক্তির ফলে। অস্ট্রেলিয়ায় আমাদের রফতানির পরিমাণ গত ১২ মাসে সর্বোচ্চ বেড়েছে। আমরা আলোচনার গতি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় আছি।”

নতুন এই চুক্তির ফলে ভারতে আমদানি হওয়া অস্ট্রেলিয়ান সামগ্রীর ৮৫ শতাংশের উপর থেকে কর প্রত্যাহার করা হয়েছে। এই সামগ্রীগুলোর রফতানি মূল্য প্রায় ১২.৬ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার। ভেড়ার মাংস, উল, তামা, কয়লা, অ্যালুমিনা, তাজা অস্ট্রেলিয়ান রক লবস্টারের মতো বহু বস্তু রফতানির ক্ষেত্রে এখন থেকে আর ভারতকে কর দিতে হবে না অস্ট্রেলিয়াকে।

নতুন চুক্তি নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীও। তিনি জানিয়েছেন, “এই চুক্তি বিশ্বের দ্রুততম বর্ধিষ্ণু অর্থনীতির দরজা খুলে দেবে অস্ট্রেলিয়ার কৃষক, উৎপাদক ও অন্যদের জন্য।”

এদিকে শনিবারই নেপালের প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবার সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। তাঁরা দু’জন দুই দেশের মধ্যে শুরু হওয়া ট্রেন চলাচলের সূচনা করেন। ৩৫ কিলোমিটারের এই রেলপথ নেপালের কুরতা ও বিহারের জয়নগরকে যুক্ত করবে। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক

ট্যাগ:

ভারত-অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত

প্রকাশ: ০৪:৩২:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ এপ্রিল ২০২২

অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে নতুন বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হল ভারতের। ভারতের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল ও অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী ড্যান তেহানের মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। নতুন এই চুক্তিকে ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ বলে বর্ণনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। পাশাপাশি পীযূষের আশা, এই চুক্তির ফলে ১০ লক্ষ চাকরির সুযোগ তৈরি হবে। এবং রাতারাতি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিনিয়োগ একলাফে বেড়ে যাবে অনেকটাই।

শনিবার একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে দুই দেশের বাণিজ্যমন্ত্রীদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। সেখানেই এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটা একটা ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এত অল্প সময়ের মধ্যে এত গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিতে ঐকমত্য দুই দেশের পারস্পরিক আস্থার পরিচয় দেয়। এটি সত্যিই আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এই চুক্তির ফলে আমরা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের স্থিতাবস্থায় অবদান রাখতে পারবো। পাশাপাশি পারস্পরিক সহায়তার জায়গাটিকে আরও মজবুত করা সম্ভব হবে।”

মোদী আরও বলেন, “পড়ুয়া, পেশাদার ও পর্যটকদের ক্ষেত্রে পারস্পরিক বিনিময়ের পথটিও আরও সুগম হল এই নয়া চুক্তিতে।” আসন্ন মহিলা বিশ্বকাপ ফাইনালের জন্য অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট দলকেও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।

একই ভাবে উচ্ছ্বসিত পীযূষ গোয়েলও। তাঁর কথায়, “আমরা আশা করছি আগামী ৪-৫ বছরের মধ্যেই দেশে ১০ লক্ষ চাকরির সুযোগ বাড়বে। ভারতীয় শেফ ও যোগ প্রশিক্ষকদের জন্য নতুন নতুন সুযোগ তৈরি হবে।”

এই চুক্তির ফলে বিনিয়োগ দ্বিগুণ হয়ে যাবে বলেও আশা ভারতীয় বাণিজ্য মন্ত্রীর। ২৭ বিলিয়নের পরিবর্তে এবার ৪৫-৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের স্বপ্ন দেখছেন তিনি। পাশাপাশি শিক্ষা, প্রযুক্তি ও অন্যান্য ক্ষেত্রের লাভবান হওয়ার বিষয়েও আশা ব্যক্ত করেছেন পীযূষ।

এই চুক্তি প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রী আরও বলেন, “ভারত-অস্ট্রেলিয়া অংশীদারিত্ব আরও শক্তিশালী হবে এই চুক্তির ফলে। অস্ট্রেলিয়ায় আমাদের রফতানির পরিমাণ গত ১২ মাসে সর্বোচ্চ বেড়েছে। আমরা আলোচনার গতি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় আছি।”

নতুন এই চুক্তির ফলে ভারতে আমদানি হওয়া অস্ট্রেলিয়ান সামগ্রীর ৮৫ শতাংশের উপর থেকে কর প্রত্যাহার করা হয়েছে। এই সামগ্রীগুলোর রফতানি মূল্য প্রায় ১২.৬ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার। ভেড়ার মাংস, উল, তামা, কয়লা, অ্যালুমিনা, তাজা অস্ট্রেলিয়ান রক লবস্টারের মতো বহু বস্তু রফতানির ক্ষেত্রে এখন থেকে আর ভারতকে কর দিতে হবে না অস্ট্রেলিয়াকে।

নতুন চুক্তি নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীও। তিনি জানিয়েছেন, “এই চুক্তি বিশ্বের দ্রুততম বর্ধিষ্ণু অর্থনীতির দরজা খুলে দেবে অস্ট্রেলিয়ার কৃষক, উৎপাদক ও অন্যদের জন্য।”

এদিকে শনিবারই নেপালের প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবার সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। তাঁরা দু’জন দুই দেশের মধ্যে শুরু হওয়া ট্রেন চলাচলের সূচনা করেন। ৩৫ কিলোমিটারের এই রেলপথ নেপালের কুরতা ও বিহারের জয়নগরকে যুক্ত করবে। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক