০৪:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নারী জীবনে দুর্দশা ও সমাজ ব্যবস্থার দায়

লায়লাতুন নাহার সিমি: আজ আমি লিখতে যাচ্ছি নারী নির্যাতন, নারী অধিকার, নারীর প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি বোধ, সর্বোপরি, আমাদের বর্তমান বাস্তবতায় নারীত্ব নিয়ে। আমার লিখার বিষয়বস্তুটি ভূ-মন্ডলে অনেক পুরাতন, কিন্তু অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অপ্রত্যাশিতভাবে চির যৌবনা এক তর্কের বিষয়। আমি আমার সংক্ষিপ্ত জীবনে দেখে, শুনে, জেনে এবং নিজের জ্ঞান থেকে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা থেকেই আজকের লিখাটি লিখতে যাচ্ছি।

বিগত কয়েকটি বছরে নারী নির্যাতনের যেসব ঘটনা আমরা দেখেছি, তা আমাদের নিরাপত্তা বোধকে নাড়িয়ে দিয়েছে। ফলস্বরুপ, আমরা নারীরা প্রতিনিয়ত মানসিক ও শারীরিক দুইভাবেই নির্যাতিত ও অপমানিত হচ্ছি। নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, গণধর্ষণ এবং ধর্ষণের পর হত্যা সহ নানা প্রকার ঘটনা প্রতিদিন পত্রিকায় ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। ধর্ষণের ফলে বহু স্কুল-কলেজের কিশোরী, তরুণী, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরাও আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছে।

ধর্মে পড়েছিলাম, মহান আল্লাহ অনেক খুশি হলে নাকি মানুষের ঘরে কন্যা সন্তান দান করেন! কোথায় যেনো শুনেছিলাম, নারী না কি নদীর মতো! সামনের দিকে অবিরাম ছুটে চলা, ছন্দ, সুর আর সুমধুর কলতান নিয়ে জীবন পথে বয়ে চলা তাঁর বৈশিষ্ট্য! জাতীয় কবি বলেছিলেন, মানবজাতির ভালো-মন্দ সবকিছুতেই নারীর সমভাগ! তাঁর ভাষায়,

এ পৃথিবীর যা কিছু মহান চির কল্যাণকর অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর!

নারীর অনেক রূপ রয়েছে। কখনো সে মা, কখনো সে মেয়ে, কখনো সে স্ত্রী, কখনো সংসারের কর্তা, কখনো আবার সমাজেরও কর্তা! তারাও পুরুষের মত সবক্ষেত্রেই সম সম্মান এবং অধিকার পাবে, এতে এতো ভ্রুকুটির কি আছে? আমাদের দেশের বিদ্যমান ব্যবস্থা নিয়ে বলতে গেলে শুধু হতাশাই বাড়ে!! এখানে কি সত্যিকার অর্থেই নারীরা প্রাপ্যের কিয়দংশও পায়??

নিরাপদ চলাফেরা, পছন্দসই ঘরে বাইরে আসা যাওয়া, খাওয়া দাওয়া, পোশাক পরিচ্ছেদ সবখানেই লজ্জাজনক সীমারেখা এঁকে দেওয়া!! কেনো এসব? কেনো ঘর থেকে বের হলেই সারা রাস্তা ভয়ে চলতে হবে? কেনো ভাবতে হবে ঠিকমতো ঘরে ফিরতে পারবো তো?! রাস্তায় কোনো সমস্যা হবে নাতো??!

রাস্তায়, যানবাহনে, কর্মক্ষেত্রে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোথাও আজ আমরা নারীরা নিরাপদ বোধ করতে পারছি না। কখনো কী ভেবে দেখেছি, আমরা নারীরাও কি পারছি পুরুষদের মত সব সুবিধা ভোগ করতে? একটু ভেবে দেখলেই উত্তর পেয়ে যাবেন! আর উত্তরটা হলো, নারীরা প্রাপ্যটা পাচ্ছেন না! কারণ কী এটাই যে, আমরা নারী? আর নারী মানেই আমাদেরকে লাঞ্ছিত হতে হবে? ভোগ বিলাসিতার বস্তু হতে হবে? প্রতিনিয়ত নারীকে অপদস্থ হতে হচ্ছে। যৌনহয়রানি, নিরাপত্তাহীনতা আমাদের চলাফেরাকে বাধাগ্রস্ত করছে। এসব কেনো ঘটছে? এর উত্তর সমাজের প্রতিটি নারীই চায়।

মাঝে মাঝে ভাবি, এই দেশের সার্বিক অগ্রগতির পেছনে কি শুধুই পুরুষের ভুমিকা রয়েছে? নারীদের কি কোনো ভুমিকা নেই?? আজ আমি বলবোনা যে একজন নারী তোমার মা, একজন নারী তোমার বোন, একজন নারী তোমার স্ত্রী! কেননা যুগের পর যুগ আমাদেরকে এই বিশেষণগুলো জুড়ে দিয়ে সম্মান দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, কিন্তু হাস্যকর ব্যাপার এটাই যে, আজও তা বাস্তবায়িত হয়নি!

যেখানে আমরা নারীরা অধিকতর নিরাপত্তার দাবি রাখি, সেখানে আমাদের কোনো নিরাপত্তার ব্যবস্থাই সমাজে বিদ্যমান নেই। আমাদের দেশের সমাজ ব্যবস্থা আজ পর্যন্ত নারীদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে পারেনি!

কোনোদিন মোটেও উত্যক্ত হননি, এমন নারী/মেয়ে পাওয়া বিরল। নারীদের উত্যক্ত করার আরেকটি মূল কারণ হলো একটি ধারণা এই যে, পুরুষেরা যাই করুন না কেনো, পাড় পেয়ে যান! কেননা, নারীরা দুর্বল। একটি মেয়ে যখন টিজিংয়ের শিকার হয় এবং এই কথা বাড়িতে জানায়, তখন বাড়ি থেকে তাকে প্রথম প্রশ্ন করা হয়, “তুই কিছু করিসনি তো?? অন্য কাউকে করলো না, তোকেই কেনো করলো?” আর এইভাবে মেয়েটা তাঁর আশ্রয়স্থলেও একাকী হয়ে পড়ে! একঘরে হয়ে পড়ে!

আমার নিজ দেখা অভিজ্ঞতা ও দর্শন থেকে বলতে পারি, যদি কোনো মেয়ে প্রতিবাদ করতে চায়, তখনই আমাদের সমাজের একাংশ উলটো তার উপর দোষ চাপায়, তাকে লজ্জা দেয়, তার পোশাক চাল-চলন নিয়ে বাজে মন্তব্য করে! এইসব কারণেই মেয়েটি নিজেকে গুটিয়ে নেয়। পরিবারের কথা চিন্তা করে ক্যারিরার, পড়াশোনা, এমনকি বাইরে বের হওয়াও বন্ধ করে দেয়। শেষ পর্যন্ত হয়তো মেয়েটিকে বিয়ের পিড়িতে বসতে হয়, নয়তো তাকে মৃত্যুর পথই বেছে নিতে হয়!

নৈতিকতাবোধ না থাকায় কর্মক্ষেত্রে আমরা নারীরা কলিগদের কুদৃষ্টি ও লালসার শিকার হচ্ছি অনবরত। তবুও আমরা সব জেনেশুনেই সহ্য করে যাচ্ছি! তো এসবের শেষ কোথায়?? সমাধান যতদিন নারীরা পাচ্ছিনা, ততদিন কি কিছুই করার নেই?? আছে…! সমাধানের পথ খুঁজলেই অনেক আছে! কিন্তু এক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে আমাদের নারী সমাজের সর্বস্তরের সবাইকেই! কিন্তু দুর্ভাগ্য, যখন কোনো নারী হেয় প্রতিপন্ন হয়, তখন আরেকজন নারী তার পাশে এসে দাঁড়ায় না। নিজে নিরাপদ আছেন ভেবেই আরেকজন নারীর সহায়তায় কেউ এগিয়ে আসেন না।

যখন কোনো মেয়ে বা বয়স্কা কাউকে হেয়প্রতিপন্ন করা হয়, তখন পাশের নারী যদি আওয়াজ তুলে, তাকে দেখে অন্যরাও সাহস পাবে তুলবে। একজনকে দাবিয়ে রাখা যত সহজ, দশ জনকে দাবিয়ে রাখা ততটা সহজ নয়। দশ জন নারী যখন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াবে, তখন এইসব সামাজিক ভন্ড, ভন্ডামী অনেকাংশেই কমে যাবে। কমে যাবে নারীর সাথে ঘটে যাওয়া সব অপরাধও। তাই আসুন পুরুষত্বের মিথ্যে অহংকারকে পাশ কাঁটিয়ে, নারীত্বের দূর্বলতাকে পাশ কাঁটিয়ে, আমরা সবাই শপথ করি নিজেদের মায়ের জন্য, নিজেদের বোনের জন্য, জীবন সঙ্গীনীর জন্য, সর্বোপরি নিজেদের জন্য যে এটুকু প্রতিরোধ আমরা করতেই পারি!

লেখক: লায়লাতুন নাহার সিমি, শিক্ষার্থী, ইংরেজী বিভাগ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

ট্যাগ:

নারী জীবনে দুর্দশা ও সমাজ ব্যবস্থার দায়

প্রকাশ: ০২:৫৫:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ মে ২০২০

লায়লাতুন নাহার সিমি: আজ আমি লিখতে যাচ্ছি নারী নির্যাতন, নারী অধিকার, নারীর প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি বোধ, সর্বোপরি, আমাদের বর্তমান বাস্তবতায় নারীত্ব নিয়ে। আমার লিখার বিষয়বস্তুটি ভূ-মন্ডলে অনেক পুরাতন, কিন্তু অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অপ্রত্যাশিতভাবে চির যৌবনা এক তর্কের বিষয়। আমি আমার সংক্ষিপ্ত জীবনে দেখে, শুনে, জেনে এবং নিজের জ্ঞান থেকে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা থেকেই আজকের লিখাটি লিখতে যাচ্ছি।

বিগত কয়েকটি বছরে নারী নির্যাতনের যেসব ঘটনা আমরা দেখেছি, তা আমাদের নিরাপত্তা বোধকে নাড়িয়ে দিয়েছে। ফলস্বরুপ, আমরা নারীরা প্রতিনিয়ত মানসিক ও শারীরিক দুইভাবেই নির্যাতিত ও অপমানিত হচ্ছি। নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, গণধর্ষণ এবং ধর্ষণের পর হত্যা সহ নানা প্রকার ঘটনা প্রতিদিন পত্রিকায় ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। ধর্ষণের ফলে বহু স্কুল-কলেজের কিশোরী, তরুণী, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরাও আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছে।

ধর্মে পড়েছিলাম, মহান আল্লাহ অনেক খুশি হলে নাকি মানুষের ঘরে কন্যা সন্তান দান করেন! কোথায় যেনো শুনেছিলাম, নারী না কি নদীর মতো! সামনের দিকে অবিরাম ছুটে চলা, ছন্দ, সুর আর সুমধুর কলতান নিয়ে জীবন পথে বয়ে চলা তাঁর বৈশিষ্ট্য! জাতীয় কবি বলেছিলেন, মানবজাতির ভালো-মন্দ সবকিছুতেই নারীর সমভাগ! তাঁর ভাষায়,

এ পৃথিবীর যা কিছু মহান চির কল্যাণকর অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর!

নারীর অনেক রূপ রয়েছে। কখনো সে মা, কখনো সে মেয়ে, কখনো সে স্ত্রী, কখনো সংসারের কর্তা, কখনো আবার সমাজেরও কর্তা! তারাও পুরুষের মত সবক্ষেত্রেই সম সম্মান এবং অধিকার পাবে, এতে এতো ভ্রুকুটির কি আছে? আমাদের দেশের বিদ্যমান ব্যবস্থা নিয়ে বলতে গেলে শুধু হতাশাই বাড়ে!! এখানে কি সত্যিকার অর্থেই নারীরা প্রাপ্যের কিয়দংশও পায়??

নিরাপদ চলাফেরা, পছন্দসই ঘরে বাইরে আসা যাওয়া, খাওয়া দাওয়া, পোশাক পরিচ্ছেদ সবখানেই লজ্জাজনক সীমারেখা এঁকে দেওয়া!! কেনো এসব? কেনো ঘর থেকে বের হলেই সারা রাস্তা ভয়ে চলতে হবে? কেনো ভাবতে হবে ঠিকমতো ঘরে ফিরতে পারবো তো?! রাস্তায় কোনো সমস্যা হবে নাতো??!

রাস্তায়, যানবাহনে, কর্মক্ষেত্রে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোথাও আজ আমরা নারীরা নিরাপদ বোধ করতে পারছি না। কখনো কী ভেবে দেখেছি, আমরা নারীরাও কি পারছি পুরুষদের মত সব সুবিধা ভোগ করতে? একটু ভেবে দেখলেই উত্তর পেয়ে যাবেন! আর উত্তরটা হলো, নারীরা প্রাপ্যটা পাচ্ছেন না! কারণ কী এটাই যে, আমরা নারী? আর নারী মানেই আমাদেরকে লাঞ্ছিত হতে হবে? ভোগ বিলাসিতার বস্তু হতে হবে? প্রতিনিয়ত নারীকে অপদস্থ হতে হচ্ছে। যৌনহয়রানি, নিরাপত্তাহীনতা আমাদের চলাফেরাকে বাধাগ্রস্ত করছে। এসব কেনো ঘটছে? এর উত্তর সমাজের প্রতিটি নারীই চায়।

মাঝে মাঝে ভাবি, এই দেশের সার্বিক অগ্রগতির পেছনে কি শুধুই পুরুষের ভুমিকা রয়েছে? নারীদের কি কোনো ভুমিকা নেই?? আজ আমি বলবোনা যে একজন নারী তোমার মা, একজন নারী তোমার বোন, একজন নারী তোমার স্ত্রী! কেননা যুগের পর যুগ আমাদেরকে এই বিশেষণগুলো জুড়ে দিয়ে সম্মান দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, কিন্তু হাস্যকর ব্যাপার এটাই যে, আজও তা বাস্তবায়িত হয়নি!

যেখানে আমরা নারীরা অধিকতর নিরাপত্তার দাবি রাখি, সেখানে আমাদের কোনো নিরাপত্তার ব্যবস্থাই সমাজে বিদ্যমান নেই। আমাদের দেশের সমাজ ব্যবস্থা আজ পর্যন্ত নারীদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে পারেনি!

কোনোদিন মোটেও উত্যক্ত হননি, এমন নারী/মেয়ে পাওয়া বিরল। নারীদের উত্যক্ত করার আরেকটি মূল কারণ হলো একটি ধারণা এই যে, পুরুষেরা যাই করুন না কেনো, পাড় পেয়ে যান! কেননা, নারীরা দুর্বল। একটি মেয়ে যখন টিজিংয়ের শিকার হয় এবং এই কথা বাড়িতে জানায়, তখন বাড়ি থেকে তাকে প্রথম প্রশ্ন করা হয়, “তুই কিছু করিসনি তো?? অন্য কাউকে করলো না, তোকেই কেনো করলো?” আর এইভাবে মেয়েটা তাঁর আশ্রয়স্থলেও একাকী হয়ে পড়ে! একঘরে হয়ে পড়ে!

আমার নিজ দেখা অভিজ্ঞতা ও দর্শন থেকে বলতে পারি, যদি কোনো মেয়ে প্রতিবাদ করতে চায়, তখনই আমাদের সমাজের একাংশ উলটো তার উপর দোষ চাপায়, তাকে লজ্জা দেয়, তার পোশাক চাল-চলন নিয়ে বাজে মন্তব্য করে! এইসব কারণেই মেয়েটি নিজেকে গুটিয়ে নেয়। পরিবারের কথা চিন্তা করে ক্যারিরার, পড়াশোনা, এমনকি বাইরে বের হওয়াও বন্ধ করে দেয়। শেষ পর্যন্ত হয়তো মেয়েটিকে বিয়ের পিড়িতে বসতে হয়, নয়তো তাকে মৃত্যুর পথই বেছে নিতে হয়!

নৈতিকতাবোধ না থাকায় কর্মক্ষেত্রে আমরা নারীরা কলিগদের কুদৃষ্টি ও লালসার শিকার হচ্ছি অনবরত। তবুও আমরা সব জেনেশুনেই সহ্য করে যাচ্ছি! তো এসবের শেষ কোথায়?? সমাধান যতদিন নারীরা পাচ্ছিনা, ততদিন কি কিছুই করার নেই?? আছে…! সমাধানের পথ খুঁজলেই অনেক আছে! কিন্তু এক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে আমাদের নারী সমাজের সর্বস্তরের সবাইকেই! কিন্তু দুর্ভাগ্য, যখন কোনো নারী হেয় প্রতিপন্ন হয়, তখন আরেকজন নারী তার পাশে এসে দাঁড়ায় না। নিজে নিরাপদ আছেন ভেবেই আরেকজন নারীর সহায়তায় কেউ এগিয়ে আসেন না।

যখন কোনো মেয়ে বা বয়স্কা কাউকে হেয়প্রতিপন্ন করা হয়, তখন পাশের নারী যদি আওয়াজ তুলে, তাকে দেখে অন্যরাও সাহস পাবে তুলবে। একজনকে দাবিয়ে রাখা যত সহজ, দশ জনকে দাবিয়ে রাখা ততটা সহজ নয়। দশ জন নারী যখন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াবে, তখন এইসব সামাজিক ভন্ড, ভন্ডামী অনেকাংশেই কমে যাবে। কমে যাবে নারীর সাথে ঘটে যাওয়া সব অপরাধও। তাই আসুন পুরুষত্বের মিথ্যে অহংকারকে পাশ কাঁটিয়ে, নারীত্বের দূর্বলতাকে পাশ কাঁটিয়ে, আমরা সবাই শপথ করি নিজেদের মায়ের জন্য, নিজেদের বোনের জন্য, জীবন সঙ্গীনীর জন্য, সর্বোপরি নিজেদের জন্য যে এটুকু প্রতিরোধ আমরা করতেই পারি!

লেখক: লায়লাতুন নাহার সিমি, শিক্ষার্থী, ইংরেজী বিভাগ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়