০৪:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সভ্যতার প্রতি নতুন হুমকি করোনা ভাইরাস, চাই সতর্কতা

আশির মুনসুর তালুকদার: অতি সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে দেশগুলোর মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে প্রাণঘাতি ভাইরাস করোনা! চীনে প্রথম ভাইরাসটি শনাক্ত করা হলেও ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়ার আশংকায় রয়েছে পৃথিবীর অন্যান্য দেশ ও জাতিগোষ্ঠীর মধ্যেও। চীনে অবস্থানরত একজন প্রত্যক্ষদর্শী এবং চিকিৎসাশাস্ত্রের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে “করোনা” ভাইরাস নিয়ে নিজ অভিজ্ঞআতঙ্তাক  ও পর্যবেক্ষণের উপর আজকের লিখাটি লিখতে বসেছি।
প্রথমেই জেনে নেয়া যাক, করোনা ভাইরাস কি?
প্রথমত; করোনা ভাইরাস একটি ডেডলি (মরণঘাতী) ভাইরাস, যে জন্য স্বাভাবিক ভাবেই সবাই বিচলিত এবং ভীত। এর কোন প্রতিষেধক এখনো আবিস্কার হয়নি। করোনা ভাইরাস সাপ, বাদুড়, ইঁদুর এবং বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণী থেকে ছড়াতে পারে অথবা এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির হাচি, কাশি থেকেও ছড়াতে পারে (এটিই সবথেকে দুশ্চিন্তার বিষয়)!
এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা প্রতিদিন প্রায় দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, মেডিকেল স্টাফ চীনে পর্যাপ্ত হলেও দিনে দিনে হিমশিম খেতে হচ্ছে, আর এর প্রতিকারের জন্য শুধুমাত্র সিম্পটমেটিক ট্রিটমেন্ট দেয়া হচ্ছে। এই ভাইরাস  আক্রান্ত হওয়ার ১৪  দিনের মধ্যে উপসর্গ দেখা দেয়। জ্বর, ঠান্ডা, হাচি-কাশি, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়ার মতো সমস্যা,সংক্রমণ (ইনফেকশন)  বেশি হলে ফুসফুস কার্যক্রম বন্ধ হয়ে/ শক হতে পারে যা হঠাত মৃত্যু ঘটাতে পারে।
এর প্রতিকার হিসেবে, 
১/ সবসময়ই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতো  হবে,নিজে এবং নিজের ঘর,কাপড়-চোপড়,রান্নার জিনিসপত্র সবকিছু।
২/ আক্রান্ত ব্যক্তি হতো  যথাসম্ভব দূরত্ব রাখতে হবে,যেহেতু হাচি-কাশির মাধ্যমে ছড়ায়।
৩/ যে-কোনো অবস্থাতেই মানুষের ভীড় এড়িয়ে চলতে হবে(বাস,ট্রেন,স্টেশন,শপিংমল এবং জনসমাগম যেখানে বেশি)
৪/ বাহিরে এবং ভিতরে জনসমাগমে মাস্ক ব্যবহারের কোন বিকল্প নেই।
৫/ যথাসম্ভব মাছ -মাংস ভালো করে সিদ্ধ করে রান্না করে খাওয়া।
৬/ সামুদ্রিক মাছ এবং খাবার থেকে আপাতত বিরত থাকা।
৭/ মাছ-মাংস কম খেয়ে সবজি এবং ফল বেশি খাওয়া
৮/ বেশি থেকে বেশি পানি পান করা।
৯/****জ্বর,হাচি-কাশি অবহেলা না করে দ্রুততার সাথে চিকিৎসক এর পরামর্শ নেয়া***
১০/ অপরিচ্ছন্ন হাত দিয়ে নাক-মুখ না ছোয়া এবং বারবার হাত ধোয়া(সাবান বা এলকোহল দিয়ে)
১১/ ধূমপান এবং মদ্যপান পরিহার করা।
***চীনে অবস্থানরতদের কি অবস্থা***
চীনা বসবাসরত প্রত্যেকের মাঝেই বর্তমানে আতংক এবং ভয় ঢুকে গিয়েছে অনেক বেশি। নিকট অতীতে মানুষজন এরকম ভয়াবহ পরিস্থিতিতে খুব কমই পড়েছে। ইতোমধ্যে ‘ওহান’ শহরের সব ধরণের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, কেও সেখানে প্রবেশ করতে পারবেনা এবং বের হতে পারবেনা। সবাই একরকম গৃহবন্দী অবস্থায় দিনাতিপাত করছে। আমি মূলত ওহান থেকে দূরবর্তী শহর গুলো নিয়ে বলছি এখন, আপনারা ইতোমধ্যেই জানেন ওহান এর পরিস্থিতি!
১/ দূরবর্তী শহরগুলোতেও চীন সরকার সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে।
২/ খাবার দোকান গুলো নির্দিষ্ট সময়ের জন্য খোলা রয়েছে(১-৩ ঘন্টা)
৩/ হাসপাতালে অযথা ভিড় না করার পরামর্শ দিয়েছেন ডাক্তারগণ,কারণ হাসপাতাল সবথেকে ঝুঁকিপূর্ণ ইনফেকশনের জন্য।
৪/ চীন সরকার নতুন বছরের ফেস্টীভাল উদযাপনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এবং সবধরণের শপিংমল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে।
৫/ যারা যেখানে আছে সেখানেই গৃহবন্দী অবস্থায়।
৬/ সীমিত সংখ্যক পরিবহণ চলাচল করছে।
*চীনে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশী এবং বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের কি অবস্থা?
যারা শীতের ছুটিতে দেশে যায়নি তারা এক প্রকার অবরুদ্ধ অবস্থায় আছে। ইউনিভার্সিটিগুলো কোন প্রকার ঝুকি নিতে চাচ্ছেনা, বিধায় হোস্টেল থেকে শিক্ষার্থীদের বের হতে দিচ্ছে না কোথাও। কিন্তু জৈবিক চাহিদা থেকেই অল্প সময়ের জন্য বের হতেই হয়, সেটিও খাবারের মজুদ করার জন্য। কিন্তু সেটাও অনেক কষ্টকর! দোকান-পাটের সংখ্যাও খুব কম যেখান থেকে খাবারটা আসলে সংগ্রহ করবে! বাহিরে যাওয়া মানেই যেনো নিজেকে নিজে ঝুকিতে ফেলা এবং অন্যকে বিপদে ফেলা! কারণ আপনার জন্য আপনার হোস্টেলের বাকীরাও আক্রান্ত হতে পারে। এমতাবস্থায় আপনাকে সহযোগিতা করার মতো কেউ নেই এবং আপনিও কাউকে সহযোগীতা করতে পারছেন না। সাথে দুশ্চিন্তা এই না কখন ইনফেকশন হয়!
হোস্টেলে সবসময় সংক্রমনের সম্ভাবনা বেশি, কারণ অনেক মানুষজন এবং বাহিরে যেতেই হয় খাবার সংগ্রহের জন্য। উপর থেকে পরিবার-পরিজনকে দুশ্চিন্তায় ফেলার ব্যাপারটাও মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে নিঃসন্দেহে! সেজন্য যাদের শহরের এয়ারপোর্ট এখনো খোলা রয়েছে, সবাই যথাসম্ভব দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছে (সব বিদেশীরাই নিজের দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছে)!
**বাংলাদেশে কি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ সম্ভবনা আছে?**
হ্যা অবশ্যই সম্ভবনা আছে। এর কারণ প্রতিদিনই চীন থেকে বাংলাদেশে ৫-৬ টি বিমান যাচ্ছে। যেখানে বাংলাদেশী এবং চীনা অনেক নাগরিক যায়। তাছাড়া পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতেও ইতোমধ্যে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। যেহেতু উপসর্গ প্রকাশ পেতে ১৪ দিন সময় লাগে সেজন্য সুস্থ ব্যক্তি চীন থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করার পর অসুস্থ হতে পারে, যা দুশ্চিন্তার বিষয়।
এর জন্য যারা দেশে যাচ্ছেন ১৪ দিনের মাঝে উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসক এর পরামর্শ নেন এবং প্রয়োজনে  IEEDCR এ যোগাযোগ করুন।
হটলাইনঃ 01937110011, 01937000011, 01927711784, 01927711785
অবশ্যই কারো এমন উপসর্গ দেখা দিলে নিজের পরিবার পরিজনকে মাস্ক ব্যবহার করতে বলবেন, নিজে মাস্ক পরবেন এবং ঘরে আবদ্ধ থাকবেন যতক্ষণ না পর্যন্ত চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এই ক্রান্তিলগ্নে সরকারী -বেসরকারী উদ্যোগ নেয়া জরুরি। প্রত্যেকটি হাসপাতালে প্রস্তুতি নিয়ে রাখা, ডাক্তার এবং মেডিকেল স্টাফদের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ তথা বিশেষ ড্রেস জোগাড় করা (যা তাদেরকে ইনফেকশন থেকে রক্ষা করবে)! পর্যাপ্ত রি-এজেন্ট সংগ্রহ করা (করোনা ভাইরাস শনাক্ত করার লক্ষ্যে!)!
যথাসম্ভব মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করা লোকজন ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যেকেই বাহিরে যাওয়ার সময় এবং ভীড় যেখানে বেশি যেমন, বাস, ট্রেন, লঞ্চ, স্টেশন, বাজার, মার্কেট, হাসপাতাল, এয়ারপোর্ট এসব জায়গায় মাস্ক ব্যবহার করবেন।
সর্বোপরী জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং মিডিয়ার সঠিক ব্যবহার করা। গুজব না ছড়ানো এবং গুজব থেকে বিরত থাকা। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।
লেখকঃ
আশির মুনসুর তালুকদার 
হারবিন মেডিকেল ইউনিভার্সিটি, হারবিন,চীন
জয়েন্ট কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর, সঞ্জীবন, চীন শাখা
ট্যাগ:

সভ্যতার প্রতি নতুন হুমকি করোনা ভাইরাস, চাই সতর্কতা

প্রকাশ: ০৯:৩৩:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২০
আশির মুনসুর তালুকদার: অতি সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে দেশগুলোর মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে প্রাণঘাতি ভাইরাস করোনা! চীনে প্রথম ভাইরাসটি শনাক্ত করা হলেও ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়ার আশংকায় রয়েছে পৃথিবীর অন্যান্য দেশ ও জাতিগোষ্ঠীর মধ্যেও। চীনে অবস্থানরত একজন প্রত্যক্ষদর্শী এবং চিকিৎসাশাস্ত্রের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে “করোনা” ভাইরাস নিয়ে নিজ অভিজ্ঞআতঙ্তাক  ও পর্যবেক্ষণের উপর আজকের লিখাটি লিখতে বসেছি।
প্রথমেই জেনে নেয়া যাক, করোনা ভাইরাস কি?
প্রথমত; করোনা ভাইরাস একটি ডেডলি (মরণঘাতী) ভাইরাস, যে জন্য স্বাভাবিক ভাবেই সবাই বিচলিত এবং ভীত। এর কোন প্রতিষেধক এখনো আবিস্কার হয়নি। করোনা ভাইরাস সাপ, বাদুড়, ইঁদুর এবং বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণী থেকে ছড়াতে পারে অথবা এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির হাচি, কাশি থেকেও ছড়াতে পারে (এটিই সবথেকে দুশ্চিন্তার বিষয়)!
এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা প্রতিদিন প্রায় দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, মেডিকেল স্টাফ চীনে পর্যাপ্ত হলেও দিনে দিনে হিমশিম খেতে হচ্ছে, আর এর প্রতিকারের জন্য শুধুমাত্র সিম্পটমেটিক ট্রিটমেন্ট দেয়া হচ্ছে। এই ভাইরাস  আক্রান্ত হওয়ার ১৪  দিনের মধ্যে উপসর্গ দেখা দেয়। জ্বর, ঠান্ডা, হাচি-কাশি, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়ার মতো সমস্যা,সংক্রমণ (ইনফেকশন)  বেশি হলে ফুসফুস কার্যক্রম বন্ধ হয়ে/ শক হতে পারে যা হঠাত মৃত্যু ঘটাতে পারে।
এর প্রতিকার হিসেবে, 
১/ সবসময়ই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতো  হবে,নিজে এবং নিজের ঘর,কাপড়-চোপড়,রান্নার জিনিসপত্র সবকিছু।
২/ আক্রান্ত ব্যক্তি হতো  যথাসম্ভব দূরত্ব রাখতে হবে,যেহেতু হাচি-কাশির মাধ্যমে ছড়ায়।
৩/ যে-কোনো অবস্থাতেই মানুষের ভীড় এড়িয়ে চলতে হবে(বাস,ট্রেন,স্টেশন,শপিংমল এবং জনসমাগম যেখানে বেশি)
৪/ বাহিরে এবং ভিতরে জনসমাগমে মাস্ক ব্যবহারের কোন বিকল্প নেই।
৫/ যথাসম্ভব মাছ -মাংস ভালো করে সিদ্ধ করে রান্না করে খাওয়া।
৬/ সামুদ্রিক মাছ এবং খাবার থেকে আপাতত বিরত থাকা।
৭/ মাছ-মাংস কম খেয়ে সবজি এবং ফল বেশি খাওয়া
৮/ বেশি থেকে বেশি পানি পান করা।
৯/****জ্বর,হাচি-কাশি অবহেলা না করে দ্রুততার সাথে চিকিৎসক এর পরামর্শ নেয়া***
১০/ অপরিচ্ছন্ন হাত দিয়ে নাক-মুখ না ছোয়া এবং বারবার হাত ধোয়া(সাবান বা এলকোহল দিয়ে)
১১/ ধূমপান এবং মদ্যপান পরিহার করা।
***চীনে অবস্থানরতদের কি অবস্থা***
চীনা বসবাসরত প্রত্যেকের মাঝেই বর্তমানে আতংক এবং ভয় ঢুকে গিয়েছে অনেক বেশি। নিকট অতীতে মানুষজন এরকম ভয়াবহ পরিস্থিতিতে খুব কমই পড়েছে। ইতোমধ্যে ‘ওহান’ শহরের সব ধরণের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, কেও সেখানে প্রবেশ করতে পারবেনা এবং বের হতে পারবেনা। সবাই একরকম গৃহবন্দী অবস্থায় দিনাতিপাত করছে। আমি মূলত ওহান থেকে দূরবর্তী শহর গুলো নিয়ে বলছি এখন, আপনারা ইতোমধ্যেই জানেন ওহান এর পরিস্থিতি!
১/ দূরবর্তী শহরগুলোতেও চীন সরকার সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে।
২/ খাবার দোকান গুলো নির্দিষ্ট সময়ের জন্য খোলা রয়েছে(১-৩ ঘন্টা)
৩/ হাসপাতালে অযথা ভিড় না করার পরামর্শ দিয়েছেন ডাক্তারগণ,কারণ হাসপাতাল সবথেকে ঝুঁকিপূর্ণ ইনফেকশনের জন্য।
৪/ চীন সরকার নতুন বছরের ফেস্টীভাল উদযাপনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এবং সবধরণের শপিংমল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে।
৫/ যারা যেখানে আছে সেখানেই গৃহবন্দী অবস্থায়।
৬/ সীমিত সংখ্যক পরিবহণ চলাচল করছে।
*চীনে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশী এবং বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের কি অবস্থা?
যারা শীতের ছুটিতে দেশে যায়নি তারা এক প্রকার অবরুদ্ধ অবস্থায় আছে। ইউনিভার্সিটিগুলো কোন প্রকার ঝুকি নিতে চাচ্ছেনা, বিধায় হোস্টেল থেকে শিক্ষার্থীদের বের হতে দিচ্ছে না কোথাও। কিন্তু জৈবিক চাহিদা থেকেই অল্প সময়ের জন্য বের হতেই হয়, সেটিও খাবারের মজুদ করার জন্য। কিন্তু সেটাও অনেক কষ্টকর! দোকান-পাটের সংখ্যাও খুব কম যেখান থেকে খাবারটা আসলে সংগ্রহ করবে! বাহিরে যাওয়া মানেই যেনো নিজেকে নিজে ঝুকিতে ফেলা এবং অন্যকে বিপদে ফেলা! কারণ আপনার জন্য আপনার হোস্টেলের বাকীরাও আক্রান্ত হতে পারে। এমতাবস্থায় আপনাকে সহযোগিতা করার মতো কেউ নেই এবং আপনিও কাউকে সহযোগীতা করতে পারছেন না। সাথে দুশ্চিন্তা এই না কখন ইনফেকশন হয়!
হোস্টেলে সবসময় সংক্রমনের সম্ভাবনা বেশি, কারণ অনেক মানুষজন এবং বাহিরে যেতেই হয় খাবার সংগ্রহের জন্য। উপর থেকে পরিবার-পরিজনকে দুশ্চিন্তায় ফেলার ব্যাপারটাও মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে নিঃসন্দেহে! সেজন্য যাদের শহরের এয়ারপোর্ট এখনো খোলা রয়েছে, সবাই যথাসম্ভব দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছে (সব বিদেশীরাই নিজের দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছে)!
**বাংলাদেশে কি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ সম্ভবনা আছে?**
হ্যা অবশ্যই সম্ভবনা আছে। এর কারণ প্রতিদিনই চীন থেকে বাংলাদেশে ৫-৬ টি বিমান যাচ্ছে। যেখানে বাংলাদেশী এবং চীনা অনেক নাগরিক যায়। তাছাড়া পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতেও ইতোমধ্যে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। যেহেতু উপসর্গ প্রকাশ পেতে ১৪ দিন সময় লাগে সেজন্য সুস্থ ব্যক্তি চীন থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করার পর অসুস্থ হতে পারে, যা দুশ্চিন্তার বিষয়।
এর জন্য যারা দেশে যাচ্ছেন ১৪ দিনের মাঝে উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসক এর পরামর্শ নেন এবং প্রয়োজনে  IEEDCR এ যোগাযোগ করুন।
হটলাইনঃ 01937110011, 01937000011, 01927711784, 01927711785
অবশ্যই কারো এমন উপসর্গ দেখা দিলে নিজের পরিবার পরিজনকে মাস্ক ব্যবহার করতে বলবেন, নিজে মাস্ক পরবেন এবং ঘরে আবদ্ধ থাকবেন যতক্ষণ না পর্যন্ত চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এই ক্রান্তিলগ্নে সরকারী -বেসরকারী উদ্যোগ নেয়া জরুরি। প্রত্যেকটি হাসপাতালে প্রস্তুতি নিয়ে রাখা, ডাক্তার এবং মেডিকেল স্টাফদের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ তথা বিশেষ ড্রেস জোগাড় করা (যা তাদেরকে ইনফেকশন থেকে রক্ষা করবে)! পর্যাপ্ত রি-এজেন্ট সংগ্রহ করা (করোনা ভাইরাস শনাক্ত করার লক্ষ্যে!)!
যথাসম্ভব মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করা লোকজন ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যেকেই বাহিরে যাওয়ার সময় এবং ভীড় যেখানে বেশি যেমন, বাস, ট্রেন, লঞ্চ, স্টেশন, বাজার, মার্কেট, হাসপাতাল, এয়ারপোর্ট এসব জায়গায় মাস্ক ব্যবহার করবেন।
সর্বোপরী জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং মিডিয়ার সঠিক ব্যবহার করা। গুজব না ছড়ানো এবং গুজব থেকে বিরত থাকা। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।
লেখকঃ
আশির মুনসুর তালুকদার 
হারবিন মেডিকেল ইউনিভার্সিটি, হারবিন,চীন
জয়েন্ট কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর, সঞ্জীবন, চীন শাখা