Notice: Undefined index: custom_code in /home/nabajugc/public_html/wp-content/themes/NewsFlash-Pro/header.php on line 27
Dhaka 5:32 pm, Sunday, 1 October 2023

  • Notice: Trying to access array offset on value of type int in /home/nabajugc/public_html/wp-content/themes/NewsFlash-Pro/template-parts/page/header_design_two.php on line 68

মহামারী পরবর্তী নগর, গ্রামীণ ও অঞ্চল পরিকল্পনা

  • Reporter Name
  • Update Time : 06:13:35 am, Wednesday, 17 June 2020
  • 6 Time View

ফারিয়া মাহজাবিন আনিকা: মহামারীকে বলা যায় এমন একটি অবস্থা, যখন কোনো একটি এলাকা, জেলা, দেশ কিংবা পুরো বিশ্বে কোন রোগ এমনভাবে বিস্তার লাভ করে, যার প্রাদুর্ভাবে আওতাভূক্ত পুরো জনগোষ্ঠীই হুমকির সম্মুখীন হয়। মহামারী ও নগর পরিকল্পনা একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। একটি নগর বা গ্রাম এর বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, শিক্ষা বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এর গঠন বা উন্নয়ন নিয়ন্ত্রনের উপর মহামারীর প্রাদুর্ভাব বেশি না কম হবে, সেটা নির্ভর করে।

বাংলাদেশের মতো একটি ঘনবসতিপূর্ন দেশে যেখানে বেশিরভাগ মানুষই আর্থিকভাবে অস্থিতিশীল অবস্থায় থাকেন, সেখানে করোনার মতো একটি মহামারী নিয়ন্ত্রণ করাটা একটি বড় চ্যালেঞ্জের ব্যাপার। কেননা এ অঞ্চলের মানুষ স্বীয় জীবিকার তাগিদে ঘর থেকে বের হবেনই। মহামারী পরবর্তী গ্রামীন ও নগর পরিকল্পনা তাই অনেক গুরুত্ব বহন করে। প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধি এবং পরিকল্পনাবিদদের এটা নিশ্চিত করতে হবে যেনো মহামারী পরবর্তী যেকোনো সময়ে সমাজের কোনো অংশের মানুষই আবারও ভয়াবহভাবে এর কবলে না পড়েন!

ইতিহাস ঘাটলে আমরা দেখতে পারি, ৫৪১-৫৪২ খৃষ্টাব্দে ‘প্লেগ অব জাস্টিনিয়ান’ এর প্রভাবে ইউরোপে প্রায় ২৫ মিলিয়ন প্রাণহানী ঘটে। ১৩৪৬-১৩৫৩ খৃষ্টাব্দে মহামারী “দ্যা ব্ল্যাক ডেথ” এর প্রভাবে ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকার প্রায় ৭৫-২০০ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু ঘটে। ১৮৫২-৬০ অবধি সময়কালে কলেরার প্রাদুর্ভাবে প্রায় ১ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু ঘটে। এছাড়া পরবর্তী সময়ে “স্প্যানিশ ফ্লু”, “এশিয়ান ফ্লু” এবং হালের “ইবোলা ভাইরাস” এর কারণেও অসংখ্য মানুষের প্রাণহানী ঘটে।

বর্তমান বিশ্বেও আমরা “কোভিড-১৯” কিংবা করোনা ভাইরাসের প্রকোপে চরম শঙ্কায় জীবন কাটাচ্ছি। মানব সভ্যতার সকল প্রযুক্তি ও জ্ঞান কাজে লাগিয়ে এই মহামারী থেকে উত্তরণের উপায় খোজা হচ্ছে। আমরা আশা করি শীঘ্রই উপরওয়ালার কৃপায় আমরা এই মহামারী কাঁটিয়ে উঠতে পারবো। তাই মহামারীর সময়কাল শেষ হবার পর মহামারী কবলিত সংবেদনশীল অঞ্চল গুলোর পরিকল্পনা নিয়ে এখন থেকেই ভাবনাটা অত্যন্ত জরুরী।

একটি নগরের বা গ্রামের বা অঞ্চলের পরিকল্পনা অনেকাংশেই এই মহামারী রোধকল্পে ভূমিকা রাখবে। যেমন, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের বাড়িঘরগুলো, বাস স্টপেজ, ফুটপাত বা খোলা জায়গা কিংবা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করলে পরবর্তীতে এই মহামারী করোনা আর ছড়াবে না কিংবা ছড়ালেও তা সামাজিকভাবে আগে থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, সেটির জন্য এখন থেকেই পূর্ব পরিকল্পনা প্রয়োজন।

একই সঙ্গে সকল মানবিক ও প্রশাসনিক সুবিধার সুষম বন্টন নিশ্চায়নের ব্যাপারটিও গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে। যেমন, একটি এলাকার জনসংখ্যার অনুপাতে যেনো পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সুবিধা পূর্ব হতেই বিদ্যমান থাকে এবং জরুরী সেবার বিষয়টিও ভাবনায় রাখা হয়। মহামারীর সময় এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় যেয়ে সেবা নেবার ব্যাপারটির ভয়াবহতা আমরা ইতোমধ্যে দেখতে পেয়েছি। এমনটি রোধ করা গেলে মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি অনেকাংশেই কমে যাবে।

এছাড়াও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠান, যেমন বাজারঘাট, ঔষধপত্রের দোকান, শিক্ষাকেন্দ্র ইত্যাদি ব্যবস্থা সম্পর্কে পূর্ব হতেই একটি নিশ্চিত ও টেকসই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। রাস্তাঘাটে চলাচল ও ফুটপাতের প্রশস্ততার ব্যাপারটিও গভীর মনযোগের সাথে ভাবতে হবে।

তাই আমরা বলতেই পারি, সঠিকভাবে নগর, গ্রামীণ ও অঞ্চল পরিকল্পনার দিকে নজর দিলে এবং পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়ন করলে ভবিষ্যতে যেকোনো মহামারীকেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।

লেখক: ফারিয়া মাহজাবিন আনিকা, শিক্ষার্থী, নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনা ডিসিপ্লিন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।

Tag :

Notice: Trying to access array offset on value of type int in /home/nabajugc/public_html/wp-content/themes/NewsFlash-Pro/template-parts/common/single_two.php on line 177

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

Notice: Undefined index: footer_custom_code in /home/nabajugc/public_html/wp-content/themes/NewsFlash-Pro/footer.php on line 87

মহামারী পরবর্তী নগর, গ্রামীণ ও অঞ্চল পরিকল্পনা

Update Time : 06:13:35 am, Wednesday, 17 June 2020

ফারিয়া মাহজাবিন আনিকা: মহামারীকে বলা যায় এমন একটি অবস্থা, যখন কোনো একটি এলাকা, জেলা, দেশ কিংবা পুরো বিশ্বে কোন রোগ এমনভাবে বিস্তার লাভ করে, যার প্রাদুর্ভাবে আওতাভূক্ত পুরো জনগোষ্ঠীই হুমকির সম্মুখীন হয়। মহামারী ও নগর পরিকল্পনা একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। একটি নগর বা গ্রাম এর বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, শিক্ষা বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এর গঠন বা উন্নয়ন নিয়ন্ত্রনের উপর মহামারীর প্রাদুর্ভাব বেশি না কম হবে, সেটা নির্ভর করে।

বাংলাদেশের মতো একটি ঘনবসতিপূর্ন দেশে যেখানে বেশিরভাগ মানুষই আর্থিকভাবে অস্থিতিশীল অবস্থায় থাকেন, সেখানে করোনার মতো একটি মহামারী নিয়ন্ত্রণ করাটা একটি বড় চ্যালেঞ্জের ব্যাপার। কেননা এ অঞ্চলের মানুষ স্বীয় জীবিকার তাগিদে ঘর থেকে বের হবেনই। মহামারী পরবর্তী গ্রামীন ও নগর পরিকল্পনা তাই অনেক গুরুত্ব বহন করে। প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধি এবং পরিকল্পনাবিদদের এটা নিশ্চিত করতে হবে যেনো মহামারী পরবর্তী যেকোনো সময়ে সমাজের কোনো অংশের মানুষই আবারও ভয়াবহভাবে এর কবলে না পড়েন!

ইতিহাস ঘাটলে আমরা দেখতে পারি, ৫৪১-৫৪২ খৃষ্টাব্দে ‘প্লেগ অব জাস্টিনিয়ান’ এর প্রভাবে ইউরোপে প্রায় ২৫ মিলিয়ন প্রাণহানী ঘটে। ১৩৪৬-১৩৫৩ খৃষ্টাব্দে মহামারী “দ্যা ব্ল্যাক ডেথ” এর প্রভাবে ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকার প্রায় ৭৫-২০০ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু ঘটে। ১৮৫২-৬০ অবধি সময়কালে কলেরার প্রাদুর্ভাবে প্রায় ১ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু ঘটে। এছাড়া পরবর্তী সময়ে “স্প্যানিশ ফ্লু”, “এশিয়ান ফ্লু” এবং হালের “ইবোলা ভাইরাস” এর কারণেও অসংখ্য মানুষের প্রাণহানী ঘটে।

বর্তমান বিশ্বেও আমরা “কোভিড-১৯” কিংবা করোনা ভাইরাসের প্রকোপে চরম শঙ্কায় জীবন কাটাচ্ছি। মানব সভ্যতার সকল প্রযুক্তি ও জ্ঞান কাজে লাগিয়ে এই মহামারী থেকে উত্তরণের উপায় খোজা হচ্ছে। আমরা আশা করি শীঘ্রই উপরওয়ালার কৃপায় আমরা এই মহামারী কাঁটিয়ে উঠতে পারবো। তাই মহামারীর সময়কাল শেষ হবার পর মহামারী কবলিত সংবেদনশীল অঞ্চল গুলোর পরিকল্পনা নিয়ে এখন থেকেই ভাবনাটা অত্যন্ত জরুরী।

একটি নগরের বা গ্রামের বা অঞ্চলের পরিকল্পনা অনেকাংশেই এই মহামারী রোধকল্পে ভূমিকা রাখবে। যেমন, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের বাড়িঘরগুলো, বাস স্টপেজ, ফুটপাত বা খোলা জায়গা কিংবা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করলে পরবর্তীতে এই মহামারী করোনা আর ছড়াবে না কিংবা ছড়ালেও তা সামাজিকভাবে আগে থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, সেটির জন্য এখন থেকেই পূর্ব পরিকল্পনা প্রয়োজন।

একই সঙ্গে সকল মানবিক ও প্রশাসনিক সুবিধার সুষম বন্টন নিশ্চায়নের ব্যাপারটিও গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে। যেমন, একটি এলাকার জনসংখ্যার অনুপাতে যেনো পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সুবিধা পূর্ব হতেই বিদ্যমান থাকে এবং জরুরী সেবার বিষয়টিও ভাবনায় রাখা হয়। মহামারীর সময় এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় যেয়ে সেবা নেবার ব্যাপারটির ভয়াবহতা আমরা ইতোমধ্যে দেখতে পেয়েছি। এমনটি রোধ করা গেলে মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি অনেকাংশেই কমে যাবে।

এছাড়াও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠান, যেমন বাজারঘাট, ঔষধপত্রের দোকান, শিক্ষাকেন্দ্র ইত্যাদি ব্যবস্থা সম্পর্কে পূর্ব হতেই একটি নিশ্চিত ও টেকসই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। রাস্তাঘাটে চলাচল ও ফুটপাতের প্রশস্ততার ব্যাপারটিও গভীর মনযোগের সাথে ভাবতে হবে।

তাই আমরা বলতেই পারি, সঠিকভাবে নগর, গ্রামীণ ও অঞ্চল পরিকল্পনার দিকে নজর দিলে এবং পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়ন করলে ভবিষ্যতে যেকোনো মহামারীকেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।

লেখক: ফারিয়া মাহজাবিন আনিকা, শিক্ষার্থী, নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনা ডিসিপ্লিন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।