Notice: Undefined index: custom_code in /home/nabajugc/public_html/wp-content/themes/NewsFlash-Pro/header.php on line 27
Dhaka 5:33 pm, Sunday, 1 October 2023

  • Notice: Trying to access array offset on value of type int in /home/nabajugc/public_html/wp-content/themes/NewsFlash-Pro/template-parts/page/header_design_two.php on line 68

আমাদের মা-বাবা এবং আমদানি করা দিবস সমূহ

হাসনাত মোহাম্মদ ইউসুফ: কিছুদিন আগেই সারা বিশ্বজুড়ে পালিত হয়ে গেলো “বিশ্ব মা দিবস” বা “International Mother’s Day”। এই দিনে আমরা অনেককেই দেখেছি, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (বিশেষ করে ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম) মায়ের সাথে ছবি দিতে কিংবা মা -কে নিয়ে নানা স্মৃতিচারণ করার মধ্য দিয়ে “মা দিবস” পালন করতে। আমার মা/বাবা দিবস নিয়ে কিছু অভিমত রয়েছে আর তা নিয়েই আজ লিখতে চলেছি!

প্রতি বছর মা দিবসেই একটা বিষয় আমায় খুব ভাবায়, তা হলো, প্রকৃত পক্ষে মা দিবস মানে কি শুধু একটা দিন মা-কে নিয়ে ছবি তুল্লাম! মা-কে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানালাম !!! নাকি এর চেয়ে বেশি কিছু ?? নিজেকে নিজেই প্রশ্ন করি, আমার কাছে ‘মা’ মানে কী? পরক্ষণেই নিজেকে নিজেই উত্তর দিই, মা মানে শুধু একটি শব্দ নয়! মা এক ভালবাসার নাম! হৃদয়ের সবচেয়ে বড় আবেগের জায়গা! আহ্লাদের জায়গা! মা মানে আমার শেষ আশ্রয় স্থল!

আমাদেরকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে মা দিবসের প্রচলন বিষয়ে! মা দিবসের প্রচলন মূলত পাশ্চাত্য দেশ গুলোতে। যেখানে বেশিরভাগ সময়ই আমরা দেখতে পাই, ১৮ বছর হলেই সন্তান বাবা-মাকে ছেড়ে স্যাপারেটলি থাকা শুরু করে!

পাশ্চাত্যের এসব দেশগুলোতে সন্তানরা ১৮ বছর হয়ে গেলে নিজেকে নিয়ে, নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে এতটাই ব্যাস্ত হয়ে পড়েন যে, মা-কে কিংবা বাবাকে দেখার বা খোঁজ-খবর নেয়ার সময়ই পাননা। তারা তখন তাদের পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন, তাদের সঙ্গী/সঙ্গীনি কে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন, নিজের চাকরিবাকরি সহ আরও কত কি!!

তাই তাঁরা সারা বছরের বিচ্ছেদ ঘুচাতে বছরের একটি দিন ঘটা করে বাবা কিংবা মা কে নিয়ে উদ্যাপন করেন অর্থাৎ বাবা কিংবা মা দিবস পালন করে থাকেন।

কিন্তু, আমাদের দেশীও কিংবা উপমহাদেশীয় সংস্কৃতির প্রেক্ষাপটে ব্যাপারটা সম্পূর্ণই ভিন্ন! আমরা বাঙ্গালি। আমাদের বাঙ্গালিয়ানা হচ্ছে বাবা-মা’র সাথেই সারা জীবন অতিবাহিত করা।  আমাদের জীবনের বড় একটা অংশ জুড়ে আছেন পিতা-মাতা। আমারা তো ৯৯% পরিবারেই মায়ের ডাক শুনে ঘুম থেকে উঠি, আবার মায়ের সাথে রাতের খাবার টা খেয়ে ঘুমোতে যাই!!! আমরা ১৮ বছর হলেও মাকে ছেড়ে যাই না। আমরা শুধু ১৮ বছর বয়সকাল নয়, বরং আমৃত্যু মা-বাবার সাথেই থাকতে চাই। এটাই আমাদের এখানে নিয়ম, রীতিনীতি। কাজেই তারা কখনোই ফেলনা নয়! তারা সবসময়ই মহামূল্যবান, মাথার উপর তাঁদের স্থান থাকবে। আজকের আমি এবং আজকে আমার অস্তিত্ব, সব তাঁদের জন্যই।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, “মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত এবং পিতার সন্তুষ্টিতে আল্লাহর সন্তুষ্টি!”

তাহলে আমাদের কি অহেতুক এই দিবস পালন করা দরকার আছে…?? আমাদের সাথে আদৌ এই ব্যাপারটা কি যায় ??? আমি ব্যক্তিগত ভাবে কোন প্রয়োজন বোধ করিনা। আমাদের কাছে জীবনের প্রতিটা দিনই মা দিবস, প্রতিটা দিনই বাবা দিবস! অথচ বর্তমানে একটা প্রচলিত ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে, মা দিবস এলেই মায়ের সাথে ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় তা আপলোড দেয়া!!! এটিকে আমি খারাপও বলছি না। কিন্তু, ঠিক আছে, বুঝলাম, আপনি আপনার মাকে অনেক ভালোবাসেন, সেবা যত্ন করেন!!! কিন্তু, সেটা যেন লোক দেখানো না হয়ে যায়। প্রকৃত পক্ষেই যেন, আপনার মা কিংবা বাবার প্রতি ভালবাসা মন থেকেই থাকে। আপনার সেবা যত্ন যেন ওনাদের সন্তুষ্টির জন্যই হয়। লোক দেখানোর উদ্দেশ্যতে না!

তবে হ্যা! কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাবা-মা’র সাথে সম্পর্ক সন্তানের যেনো আরও ভালো হয়, বন্ধুভাবাপন্ন হয়, তার জন্য কাউন্সিলিং করা যেতে পারে! আমি বলবো বাবা-মাকে ভালবাসি বলাটা যতটা সহজ, বাস্তবে তার প্রতিফলন ততটাই কঠিন। প্রত্যেক বাবা-মা’র উচিত সন্তানকে পর্যাপ্ত সময় দেয়া! সন্তানদেরও উচিত বাবা-মা’র সঙ্গে পর্যাপ্ত সময় কাটানো! তাহলে আলাদাভাবে এই দিবসের কোন প্রয়োজন নেই বল্লেই চলে। আর সব ঠিকঠাক থাকলে, তবে কেন বৃদ্ধাশ্রম!!!

আমরা চাই, আমাদের দেশে কোন বৃদ্ধাশ্রম না থাকুক! সন্তানরা বাবা-মা’র প্রতি যত্নশীল হোক, দায়িত্ববান হয়ে উঠুক।

মা বাবার প্রতি আজীবন, প্রতিটি দিন আমাদের ভালবাসা থাকুক! তাদের প্রতি ভালোবাসা কোনো নির্দিষ্ট দিনে সীমাবদ্ধ না থাকুক!  এই প্রত্যাশায় আজকের লিখাটি শেষ করছি।  ভালো থাকুক,, পৃথিবীর সকল বাবা-মা।

লেখকঃ হাসনাত মোহাম্মদ ইউসুফ, শিক্ষার্থী, পপুলেশন সায়েন্স বিভাগ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাধারণ সম্পাদক, সঞ্জীবন, ময়মনসিংহ জেলা শাখা।

Tag :

Notice: Trying to access array offset on value of type int in /home/nabajugc/public_html/wp-content/themes/NewsFlash-Pro/template-parts/common/single_two.php on line 177

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

Notice: Undefined index: footer_custom_code in /home/nabajugc/public_html/wp-content/themes/NewsFlash-Pro/footer.php on line 87

আমাদের মা-বাবা এবং আমদানি করা দিবস সমূহ

Update Time : 04:32:33 pm, Sunday, 17 May 2020

হাসনাত মোহাম্মদ ইউসুফ: কিছুদিন আগেই সারা বিশ্বজুড়ে পালিত হয়ে গেলো “বিশ্ব মা দিবস” বা “International Mother’s Day”। এই দিনে আমরা অনেককেই দেখেছি, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (বিশেষ করে ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম) মায়ের সাথে ছবি দিতে কিংবা মা -কে নিয়ে নানা স্মৃতিচারণ করার মধ্য দিয়ে “মা দিবস” পালন করতে। আমার মা/বাবা দিবস নিয়ে কিছু অভিমত রয়েছে আর তা নিয়েই আজ লিখতে চলেছি!

প্রতি বছর মা দিবসেই একটা বিষয় আমায় খুব ভাবায়, তা হলো, প্রকৃত পক্ষে মা দিবস মানে কি শুধু একটা দিন মা-কে নিয়ে ছবি তুল্লাম! মা-কে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানালাম !!! নাকি এর চেয়ে বেশি কিছু ?? নিজেকে নিজেই প্রশ্ন করি, আমার কাছে ‘মা’ মানে কী? পরক্ষণেই নিজেকে নিজেই উত্তর দিই, মা মানে শুধু একটি শব্দ নয়! মা এক ভালবাসার নাম! হৃদয়ের সবচেয়ে বড় আবেগের জায়গা! আহ্লাদের জায়গা! মা মানে আমার শেষ আশ্রয় স্থল!

আমাদেরকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে মা দিবসের প্রচলন বিষয়ে! মা দিবসের প্রচলন মূলত পাশ্চাত্য দেশ গুলোতে। যেখানে বেশিরভাগ সময়ই আমরা দেখতে পাই, ১৮ বছর হলেই সন্তান বাবা-মাকে ছেড়ে স্যাপারেটলি থাকা শুরু করে!

পাশ্চাত্যের এসব দেশগুলোতে সন্তানরা ১৮ বছর হয়ে গেলে নিজেকে নিয়ে, নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে এতটাই ব্যাস্ত হয়ে পড়েন যে, মা-কে কিংবা বাবাকে দেখার বা খোঁজ-খবর নেয়ার সময়ই পাননা। তারা তখন তাদের পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন, তাদের সঙ্গী/সঙ্গীনি কে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন, নিজের চাকরিবাকরি সহ আরও কত কি!!

তাই তাঁরা সারা বছরের বিচ্ছেদ ঘুচাতে বছরের একটি দিন ঘটা করে বাবা কিংবা মা কে নিয়ে উদ্যাপন করেন অর্থাৎ বাবা কিংবা মা দিবস পালন করে থাকেন।

কিন্তু, আমাদের দেশীও কিংবা উপমহাদেশীয় সংস্কৃতির প্রেক্ষাপটে ব্যাপারটা সম্পূর্ণই ভিন্ন! আমরা বাঙ্গালি। আমাদের বাঙ্গালিয়ানা হচ্ছে বাবা-মা’র সাথেই সারা জীবন অতিবাহিত করা।  আমাদের জীবনের বড় একটা অংশ জুড়ে আছেন পিতা-মাতা। আমারা তো ৯৯% পরিবারেই মায়ের ডাক শুনে ঘুম থেকে উঠি, আবার মায়ের সাথে রাতের খাবার টা খেয়ে ঘুমোতে যাই!!! আমরা ১৮ বছর হলেও মাকে ছেড়ে যাই না। আমরা শুধু ১৮ বছর বয়সকাল নয়, বরং আমৃত্যু মা-বাবার সাথেই থাকতে চাই। এটাই আমাদের এখানে নিয়ম, রীতিনীতি। কাজেই তারা কখনোই ফেলনা নয়! তারা সবসময়ই মহামূল্যবান, মাথার উপর তাঁদের স্থান থাকবে। আজকের আমি এবং আজকে আমার অস্তিত্ব, সব তাঁদের জন্যই।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, “মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত এবং পিতার সন্তুষ্টিতে আল্লাহর সন্তুষ্টি!”

তাহলে আমাদের কি অহেতুক এই দিবস পালন করা দরকার আছে…?? আমাদের সাথে আদৌ এই ব্যাপারটা কি যায় ??? আমি ব্যক্তিগত ভাবে কোন প্রয়োজন বোধ করিনা। আমাদের কাছে জীবনের প্রতিটা দিনই মা দিবস, প্রতিটা দিনই বাবা দিবস! অথচ বর্তমানে একটা প্রচলিত ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে, মা দিবস এলেই মায়ের সাথে ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় তা আপলোড দেয়া!!! এটিকে আমি খারাপও বলছি না। কিন্তু, ঠিক আছে, বুঝলাম, আপনি আপনার মাকে অনেক ভালোবাসেন, সেবা যত্ন করেন!!! কিন্তু, সেটা যেন লোক দেখানো না হয়ে যায়। প্রকৃত পক্ষেই যেন, আপনার মা কিংবা বাবার প্রতি ভালবাসা মন থেকেই থাকে। আপনার সেবা যত্ন যেন ওনাদের সন্তুষ্টির জন্যই হয়। লোক দেখানোর উদ্দেশ্যতে না!

তবে হ্যা! কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাবা-মা’র সাথে সম্পর্ক সন্তানের যেনো আরও ভালো হয়, বন্ধুভাবাপন্ন হয়, তার জন্য কাউন্সিলিং করা যেতে পারে! আমি বলবো বাবা-মাকে ভালবাসি বলাটা যতটা সহজ, বাস্তবে তার প্রতিফলন ততটাই কঠিন। প্রত্যেক বাবা-মা’র উচিত সন্তানকে পর্যাপ্ত সময় দেয়া! সন্তানদেরও উচিত বাবা-মা’র সঙ্গে পর্যাপ্ত সময় কাটানো! তাহলে আলাদাভাবে এই দিবসের কোন প্রয়োজন নেই বল্লেই চলে। আর সব ঠিকঠাক থাকলে, তবে কেন বৃদ্ধাশ্রম!!!

আমরা চাই, আমাদের দেশে কোন বৃদ্ধাশ্রম না থাকুক! সন্তানরা বাবা-মা’র প্রতি যত্নশীল হোক, দায়িত্ববান হয়ে উঠুক।

মা বাবার প্রতি আজীবন, প্রতিটি দিন আমাদের ভালবাসা থাকুক! তাদের প্রতি ভালোবাসা কোনো নির্দিষ্ট দিনে সীমাবদ্ধ না থাকুক!  এই প্রত্যাশায় আজকের লিখাটি শেষ করছি।  ভালো থাকুক,, পৃথিবীর সকল বাবা-মা।

লেখকঃ হাসনাত মোহাম্মদ ইউসুফ, শিক্ষার্থী, পপুলেশন সায়েন্স বিভাগ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাধারণ সম্পাদক, সঞ্জীবন, ময়মনসিংহ জেলা শাখা।