
স্টাফ রিপোর্টারঃ
ময়মনসিংহের আলোচিত জোড়া খুনের ঘটনায় সদর উপজেলার সিরতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবু সাইদকে ষড়যন্ত্র করে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, ঘটনার সত্যটা বলতে গেলে মামলার আসামী হতে হবে এমন ভয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলছেনা কেউ এমন দাবী এলাকার সচেতন মহলের। মুখ খুললে আসামী হতে হবে এমন ভয় রয়েছে স্থানীয়দের মাঝে। এর নাটের গুরু হিসাবে ইউনিয়নের সাবেক এক চেয়ারম্যানের নাম উঠে এসেছে। এই নাটের গুরুই বা কে বা কারা?? গত ইউপি নির্বাচনে হেরে গিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যানের উপর প্রতিশোধ নিতে জোড়া খুনের মামলাকে পুজি করে মামলার বাদীকে দাবার গুটি হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে এমনটাই গুঞ্জন চলছে বিভিন্ন মহলে। অভিযোগে জানা গেছে- গত ১০ ডিসেম্বর বেলা ১০টার দিকে নয়াপাড়া মোড়ে অবস্থিত একটি মসজিদের জমি নিয়ে নয়াপাড়া গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল।জমি নিয়ে এই বিরোধের জের ধরে উপজেলার চর সিরতা ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামে দুই ভাই রফিকুল ও শফিকুলকে হত্যা করেছে একটি পক্ষ ।
তখন চেয়ারম্যান আবু সাইদ ময়মনসিংহে মুক্ত মঞ্চের প্রোগ্রামে ছিলেন। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের বাবা আলী আকবর বাদী হয়ে চেয়ারম্যান সাঈদকে আসামী করে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন। যার মামলা নং- ৩৪(১২)২০২১। তবে ষড়যন্ত্রকারী ও কুচক্রী মহলের ইন্ধনে বাদী চেয়ারম্যান সাঈদকে আসামী করতে বাধ্য হয়েছেন এমনটাও গুঞ্জন রয়েছে এলাকায়। এলাকাবাসী জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকে পরাজিত চেয়ারম্যন প্রাথী বকুল, মজিদ, মোশারফ, হালু, হারুন, মোখলেছ, শাহজাহান, শাহজাদা, শহীদ, গদু, হোসেন, মোফাজ্জল, ছালাম, ছারোয়ার, মজিবর, দুলু, রিজনসহ ২০/২৫ জনের একটি দল গত দু’মাস ধরে দফায় দফায় হামলা করে লুটপাটসহ বাড়িঘর গুড়িয়ে দিয়েছে। অভিযোগে আরো জানা গেছে-হত্যা মামলার আসামী ও তাদের আত্নীয় স্বজনদের কমপক্ষে ৫০টি পরিবারের বাড়ি ঘর, হাস-মুরগী গরু-ছাগল লুট করে নিয়ে বাড়ি ঘর গুড়িয়ে দিয়েছে বাদী ও তাদের স্বজনরা। তবে অভিযুক্তরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তাদের এমন ন্যাক্কারজনক কাজের প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেনা। এদের মধ্যে একজন পুলিশের দালাল বিধায় প্রতিবাদ করলে খুনের মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখেয়ে মানুষকে ভিতিতে রাখে। এই ঘটনায় উপজেলার সিরতা ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান জনপ্রিয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদসহ ৩৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
অজ্ঞাতনামা আসামি আরও কয়েকজন। স্থানীয়দের দাবী ঘটনার প্রকৃত নায়করা সাবেক চেয়ারম্যান আশীর্বাদপৃষ্ঠ হওয়ায় প্রকৃত খুনীদের ধরাছোঁয়ার বাইরে রেখে কৌশলে ষড়যন্ত্র করে বর্তমান চেয়ারম্যান সাঈদকে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।ষড়যন্ত্রের শিকার মামলার আসামীরা গ্রেফতার আতঙ্কে এলাকা ছাড়া থাকায় ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের বাড়ী-ঘর লুট করে নিচ্ছে। স্থানীয় গণ্যমান্যদের দাবী- খুনের বিচার নীতিগত ভাবে না চেয়ে তারা গত আড়াইমাস ধরে মামলায় অভিযুক্তদের বাড়িতে দফায় দফায় লুটতরাজ করা এটা কোন আইনে রয়েছে। তাদের দাবী এপর্যন্ত প্রায় ৫০ পরিবারের বাড়িতে হামলা করে প্রায় ৫ কোটি টাকার মালামাল নিয়ে গেছে। দু’সন্তান হারানো শোকে কাতর পরিবারটিকে পুজি করে সুবিধা ভোগীরা ফায়দা লুটছে। তবে ষড়যন্ত্রকারী এই চক্রের মুল নাটের গুরুর বংশধরেরাও মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালেও দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলো বলেও সমালোচনা চলছে। গুঞ্জন চলছে এরা কখনোই মানুষের ভালোটা দেখতে পারেনা,যে কারণে এদের সামনে যদি কেউ ভালকিছু করতে চায়, তখন তাকে কৌশলে থামিয়ে দিতে চেষ্টা করে।যা সাঈদ চেয়ারম্যানের বেলায় ঘটেছে।
সরজমিনে দেখাগেছে, জোড়া খুনের আসামীদের ও অপরাপর শরিকদের বাড়িঘরে লুটপাট করে কাচাঁ-পাকা বাড়ি গুলো গুড়িয়ে দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থরা আইনি প্রতিকার চেয়ে বিভিন্ন মহলে অভিযোগ দায়ের করেছেন। আইন হাতে তুলে নেওয়ায় অবস্থার বেগতিক বুঝে গোলাপানিতে মাছ শিকারীরা মানব বন্ধন করে দ্বায় এড়াতে অভিযোগ থেকে বাচাঁর জন্য স্থানীয়ভাবে বার-বার মানবন্ধন ও বিক্ষোভ করা হলেও আসলেও স্থানীয়রা জানান, হত্যা মামলার মূল আসামিরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে এমন মন্তব্য চলছে উপজেলাজুড়ে। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে- ঘটনার আগের দিন রাতে নাটের গুরু মজিদ এর বাড়ীতে জমি নিয়ে দুপক্ষের বিরোধ নিষ্পত্তি করার জন্য বসলেও মসজিদে তালা দেওয়াসহ ওয়াজ ভঙ্গ করা হয়। ভিডিও ফুটেজ ও মোবাইল ট্যাগিং এ যদিও বুঝা যায় চেয়ারম্যান সাইদ সেদিন সকাল ৮ থেকে ময়মনসিংহে ছিলেন।
তাহলে চেয়ারম্যান সাঈদ কিভাবে এ মামলায় আসামি হলেন? এনিয়েও চলছে বিভিন্ন সমালোচনা ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া। সমালোচনা চলছে- চেয়ারম্যান আবু সাইদ এর জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে তাকে জনবিচ্ছিন্ন করতে কৌশলে তাকে এ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। এলাকাবাসীর ধারণা ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত সাবেক চেয়ারম্যান বকুল। কারন গত নির্বাচনে বকুল চেয়ারম্যান প্রায় সাড়ে ৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে সাঈদ চেয়ারম্যানের কাছে পরাজিত হয়েছিলো। চেয়ারম্যান সাঈদের এই জনপ্রিয়তা অব্যাহত থাকলে আগামীতে তার বিপক্ষে প্রার্থী হয়ে চেয়ারম্যান হওয়াটা অত্যন্ত কঠিন। যে কারণে তাকে কৌশলে ফাঁসানো হয়েছে এমন গুঞ্জন এবং ক্ষোভ রয়েছে বিভিন্ন মহলে। তবে মামলার বাদী দাবি প্রকৃত খুনীদের আইনের আওতায় এনে আদালতে বিচারের দারস্থ করা হউক। কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ ও পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রেখেছেন।