Dhaka 6:07 am, Friday, 1 December 2023

  • Notice: Trying to access array offset on value of type int in /home/nabajugc/public_html/wp-content/themes/NewsFlash-Pro/template-parts/page/header_design_two.php on line 68

ভারতে ধর্ষণের ঘটনায় সাম্প্রদায়িক রঙ লাগানোর অভিযোগ

  • Reporter Name
  • Update Time : 06:04:42 am, Sunday, 1 December 2019
  • 22 Time View

অনলাইন ডেস্ক:

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় তেলেঙ্গানা রাজ্যে এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় সাম্প্রদায়িকতার রঙ লাগানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় অভিযুক্ত একজন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের- এটি জানার পর তার ধর্মীয় পরিচয়টিকে বারবার সামনে আনা হচ্ছে।

আনন্দবাজার পত্রিকার রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওই ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত চার জনের মধ্যে কেবল এক সংখ্যালঘু অভিযুক্তের পরিচয়কেই সামনে নিয়ে এসে প্রচার চালানো হচ্ছে ফেসবুক-টুইটারে। যদিও অভিযুক্তদের মধ্যে সব সম্প্রদায়ের লোকই রয়েছে।

আনন্দবাজার লিখেছে, ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরেই শুক্রবার থেকে এমন ‘সাম্প্রদায়িক’ প্রচারণা শুরু হয় টুইটারে। পুলিশ চার অভিযুক্তের নাম প্রকাশ করলেও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শুধুমাত্র এক জনের নাম সামনে এনে তার শাস্তির দাবি তোলা হয়। এমন সাম্প্রদায়িক রঙ লাগানো টুইটের সংখ্যা ছাড়িয়ে যায় পঞ্চাশ হাজার। ওই দাবিতে তৈরি হ্যাশট্যাগ দীর্ঘক্ষণ ট্রেন্ডিংও ছিল টুইটারে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি সমর্থক পরিচয়ের অজস্র প্রোফাইল, তেলঙ্গানার এক বিজেপি বিধায়ক, এমনকি বিজেপির তথ্যপ্রযুক্তি সেলের প্রধান অমিত মালব্য পর্যন্ত এক অভিযুক্তের নাম সামনে এনে সরব হয়েছেন।

নিউজ এইটিনের খবরে বলা হয়েছে, গত বুধবার রাতে হায়দ্রবাদ থেকে বাড়ি ফেরার সময় চার লরি শ্রমিকের হাতে অপহৃত হন ওই মহিলা প্রাণী চিকিৎসক(২২)। একটি সরকারি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন তিনি। শহরের বাইরে শাদনগর নামক একটি জায়গায় তাকে হত্যার পর তার লাশ পুড়িয়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। দুই দিন পর পুলিশ চার জনকে গ্রেফতার করে। অভিযুক্ত চার যুবক হলো হলো মোহাম্মাদ পাশা, চিন্তাকুন্তা চেন্নাকেশাভুলু, জল্লু শিভা ও জল্লু নাভিন।

গ্রেফতারকৃতদের পরিচয় প্রকাশ হওয়ার পরই পাল্টে যায় প্রতিবাদের ধরণ। কেউ কেউ ঘটনাটিতে সাম্প্রদায়িকতার রঙ লাগাতে চেষ্টা করেন।

পুরো তথ্য আড়াল করে, কেবল আংশিক তথ্য সামনে এনে ঘটনায় সাম্প্রদায়িক নির্মাণের চেষ্টাই নয়, তাকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে ভুয়া খবরও ছড়ানো হয়। প্রচার চলে, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত শামশাবাদেই এই ঘটনা ঘটেছে। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃত চার জনই নারায়ণপেট জেলার বাসিন্দা।

এমন প্রচারে শামিল হন অভিনেত্রী পায়েল রোহতগিও। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় ঘটেছে বলে বক্রোক্তি করে টুইট করা হয় অন্ধ্রপ্রদেশ মহিলা কংগ্রেসের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকেও। পরে সেই টুইট মুছে দিয়ে ওই অ্যাকাউন্ট থেকে দাবি করা হয়, এক স্বেচ্ছাসেবক অসৎ উদ্দেশ্যে ওই পোস্ট করেছে। এর সঙ্গে দলের মতামতের কোনও যোগ নেই।

তেলঙ্গানার গোশামহলের বিজেপি বিধায়ক রাজা সিংহ টুইটারে একটি ভিডিও বার্তা দেন। তাতেও কেবল এক সংখ্যালঘু অভিযুক্তের নাম জানান তিনি। অনেকে শেয়ারও করেন সেই ভিডিও। এ ভাবেই ঘটনায় সাম্প্রদায়িক রং লাগানোর চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ ওঠে।

এমন ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। এ বছরের শুরুর দিকে উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে এক শিশুকন্যার পচাগলা লাশ উদ্ধারের পর সাম্প্রদায়িক প্রচার চলেছিল সমাজমাধ্যমে। তেলঙ্গানার ঘটনাতেও শামশাবাদের ডিসিপি প্রকাশ রেড্ডি বলেছেন, ‘এই ঘটনা কোনও ভাবেই সাম্প্রদায়িক নয়। অভিযুক্তদের মধ্যে সব সম্প্রদায়ের লোক রয়েছে। ধর্মের সঙ্গে, এই ঘটনা জড়িত তা বলা একেবারেই ভুল হবে।’

অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের অনেকেও ধর্মীয় পরিচয় বাদ দিয়ে বিষয়টিকে অপরাধ হিসেবেই বিবেচনা করে বিচারের দাবি করছেন।

Tag :

Notice: Trying to access array offset on value of type int in /home/nabajugc/public_html/wp-content/themes/NewsFlash-Pro/template-parts/common/single_two.php on line 177

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Choton Mia

Popular Post

Notice: Undefined index: footer_custom_code in /home/nabajugc/public_html/wp-content/themes/NewsFlash-Pro/footer.php on line 87

ভারতে ধর্ষণের ঘটনায় সাম্প্রদায়িক রঙ লাগানোর অভিযোগ

Update Time : 06:04:42 am, Sunday, 1 December 2019

অনলাইন ডেস্ক:

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় তেলেঙ্গানা রাজ্যে এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় সাম্প্রদায়িকতার রঙ লাগানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় অভিযুক্ত একজন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের- এটি জানার পর তার ধর্মীয় পরিচয়টিকে বারবার সামনে আনা হচ্ছে।

আনন্দবাজার পত্রিকার রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওই ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত চার জনের মধ্যে কেবল এক সংখ্যালঘু অভিযুক্তের পরিচয়কেই সামনে নিয়ে এসে প্রচার চালানো হচ্ছে ফেসবুক-টুইটারে। যদিও অভিযুক্তদের মধ্যে সব সম্প্রদায়ের লোকই রয়েছে।

আনন্দবাজার লিখেছে, ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরেই শুক্রবার থেকে এমন ‘সাম্প্রদায়িক’ প্রচারণা শুরু হয় টুইটারে। পুলিশ চার অভিযুক্তের নাম প্রকাশ করলেও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শুধুমাত্র এক জনের নাম সামনে এনে তার শাস্তির দাবি তোলা হয়। এমন সাম্প্রদায়িক রঙ লাগানো টুইটের সংখ্যা ছাড়িয়ে যায় পঞ্চাশ হাজার। ওই দাবিতে তৈরি হ্যাশট্যাগ দীর্ঘক্ষণ ট্রেন্ডিংও ছিল টুইটারে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি সমর্থক পরিচয়ের অজস্র প্রোফাইল, তেলঙ্গানার এক বিজেপি বিধায়ক, এমনকি বিজেপির তথ্যপ্রযুক্তি সেলের প্রধান অমিত মালব্য পর্যন্ত এক অভিযুক্তের নাম সামনে এনে সরব হয়েছেন।

নিউজ এইটিনের খবরে বলা হয়েছে, গত বুধবার রাতে হায়দ্রবাদ থেকে বাড়ি ফেরার সময় চার লরি শ্রমিকের হাতে অপহৃত হন ওই মহিলা প্রাণী চিকিৎসক(২২)। একটি সরকারি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন তিনি। শহরের বাইরে শাদনগর নামক একটি জায়গায় তাকে হত্যার পর তার লাশ পুড়িয়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। দুই দিন পর পুলিশ চার জনকে গ্রেফতার করে। অভিযুক্ত চার যুবক হলো হলো মোহাম্মাদ পাশা, চিন্তাকুন্তা চেন্নাকেশাভুলু, জল্লু শিভা ও জল্লু নাভিন।

গ্রেফতারকৃতদের পরিচয় প্রকাশ হওয়ার পরই পাল্টে যায় প্রতিবাদের ধরণ। কেউ কেউ ঘটনাটিতে সাম্প্রদায়িকতার রঙ লাগাতে চেষ্টা করেন।

পুরো তথ্য আড়াল করে, কেবল আংশিক তথ্য সামনে এনে ঘটনায় সাম্প্রদায়িক নির্মাণের চেষ্টাই নয়, তাকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে ভুয়া খবরও ছড়ানো হয়। প্রচার চলে, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত শামশাবাদেই এই ঘটনা ঘটেছে। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃত চার জনই নারায়ণপেট জেলার বাসিন্দা।

এমন প্রচারে শামিল হন অভিনেত্রী পায়েল রোহতগিও। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় ঘটেছে বলে বক্রোক্তি করে টুইট করা হয় অন্ধ্রপ্রদেশ মহিলা কংগ্রেসের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকেও। পরে সেই টুইট মুছে দিয়ে ওই অ্যাকাউন্ট থেকে দাবি করা হয়, এক স্বেচ্ছাসেবক অসৎ উদ্দেশ্যে ওই পোস্ট করেছে। এর সঙ্গে দলের মতামতের কোনও যোগ নেই।

তেলঙ্গানার গোশামহলের বিজেপি বিধায়ক রাজা সিংহ টুইটারে একটি ভিডিও বার্তা দেন। তাতেও কেবল এক সংখ্যালঘু অভিযুক্তের নাম জানান তিনি। অনেকে শেয়ারও করেন সেই ভিডিও। এ ভাবেই ঘটনায় সাম্প্রদায়িক রং লাগানোর চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ ওঠে।

এমন ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। এ বছরের শুরুর দিকে উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে এক শিশুকন্যার পচাগলা লাশ উদ্ধারের পর সাম্প্রদায়িক প্রচার চলেছিল সমাজমাধ্যমে। তেলঙ্গানার ঘটনাতেও শামশাবাদের ডিসিপি প্রকাশ রেড্ডি বলেছেন, ‘এই ঘটনা কোনও ভাবেই সাম্প্রদায়িক নয়। অভিযুক্তদের মধ্যে সব সম্প্রদায়ের লোক রয়েছে। ধর্মের সঙ্গে, এই ঘটনা জড়িত তা বলা একেবারেই ভুল হবে।’

অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের অনেকেও ধর্মীয় পরিচয় বাদ দিয়ে বিষয়টিকে অপরাধ হিসেবেই বিবেচনা করে বিচারের দাবি করছেন।