Dhaka 12:25 pm, Saturday, 2 December 2023

  • Notice: Trying to access array offset on value of type int in /home/nabajugc/public_html/wp-content/themes/NewsFlash-Pro/template-parts/page/header_design_two.php on line 68

ভারতের নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে ইউরোপের এমপিরা

  • Reporter Name
  • Update Time : 04:44:27 pm, Wednesday, 29 January 2020
  • 10 Time View

ভারতের বিতর্কিত নতুন নাগরিকত্ব আইন প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়ে একটি প্রস্তাবের ওপর ইউরোপীয় পার্লামেন্টে আলোচনা শুরু হয়েছে, পরে তা ভোটাভুটির জন্য পেশ করা হবে।

ওই পার্লামেন্টের ৭৫১ জন সদস্যের মধ্যে দুই তৃতীয়াংশেরও বেশি সদস্য এই প্রস্তাবটিকে সমর্থন করছেন-এবং তাদের আনা প্রস্তাবে ভারতের নতুন আইনটিকে ‘বৈষম্যমূলক’ ও ‘বিভাজন সৃষ্টিকারী’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে।

এই পদক্ষেপ ভারতের জন্য কূটনৈতিকভাবে অস্বস্তিকর হলেও সরকারি কর্মকর্তারা অবশ্য নাগরিকত্ব আইনকে পুরোপুরি ভারতের ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলেই দাবি করছেন।

বহু ইউরোপীয় দেশেও যে অনুরূপ অভিবাসন আইন আছে সেটাও তারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন।

প্রায় ছ’মাস আগে ভারত সরকার যখন কাশ্মীরের বিশেষ স্বীকৃতি বাতিল করেছিল, তখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভারতকে যতটা বিরূপ সমালোচনা সামলাতে হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল শেষ পর্যন্ত তার কিছুই হয়নি।

কিন্তু প্রতিবেশী দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার বিধান এনে ভারতের আনা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন শুধু দেশের ভেতরেই তীব্র প্রতিবাদের মুখে পড়ছে না, ইউরোপীয় পার্লামেন্টেও তা এখন দিল্লিকে চরম বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে।

ভারতের বিরুদ্ধে প্রস্তাবটি যারা এনেছেন, সেই এমইপি-দের অন্যতম স্পেন থেকে নির্বাচিত বামপন্থী রাজনীতিবিদ আইডোইয়া ভিলানুয়েভা।

তিনি বলছিলেন, ‘সারা পৃথিবীতেই আমরা দেখছি মানবাধিকার ও নাগরিক স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে, রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে আইন বানানো হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়া সেন্সরশিপের মুখে পড়ছে, অভিবাসী ও শরাণার্থীদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।’

‘দুর্ভাগ্যবশত বিশ্বের অন্যতম প্রধান গণতন্ত্র ভারতও এর ব্যতিক্রম নয়।’

‘এই পটভূমিতে আমরা মনে করছি অধিকার অর্জনের লড়াই আন্তর্জাতিক রাজনীতির এজেন্ডা থেকে যাতে সরে না যায়, সে জন্যই এখানে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের কিছু দায়িত্ব থেকে যায়।’

ভারতের বিরুদ্ধে যৌথভাবে এই প্রস্তাবটি এনেছে পাঁচটি রাজনৈতিক গোষ্ঠী, যাদের মধ্যে বামপন্থীরা, অতি-বাম এবং পরিবেশবাদী বিভিন্ন দল রয়েছে।

ইউরোপিয়ান্স কনজার্ভেটিভস ও রিফর্মিস্টস বা ইসিআর নামে ৬৬-জন এমইপি-র একটি দল শেষ মুহুর্তে নিজেদের এই প্রস্তাব থেকে সরিয়ে নিয়েছে, ফলে এটিকে এখন সমর্থন করছেন ইইরোপীয় পার্লামেন্টের মোট ৫৬০জন মেম্বার।

চূড়ান্ত প্রস্তাবে কাশ্মীরের উল্লেখ না থাকলেও আইডোইয়া ভিলানুয়েভা বলছিলেন, সার্বিকভাবে ভারতের মানবাধিকার পরিস্থিতিতে এমইপিরা অনেকেই চিন্তিত।

তার কথায়, ‘নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ভারতে যেভাবে উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদের পুনরুত্থান হয়েছে তা সত্যিই উদ্বেগজনক।’

‘কাশ্মীরে যেভাবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে এবং সে দেশের নাগরিকত্ব আইনে ভারতের বহুত্ববাদকে যেভাবে অস্বীকার করা হয়েছে, তাতেই এটা একেবারে স্পষ্ট।’ ‘”ইউরোপীয় ইউনিয়ন যখন ভারতের সঙ্গে স্ট্র্যাটেজিক চুক্তির লক্ষ্যে আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছে, তখনও কিন্তু মানবাধিকারের প্রশ্নে ভারতের এই পিছু হঠা আমরা মেনে নিতে পারি না।’

এই যৌথ প্রস্তাবটি নিয়ে দুদিন ধরে আলোচনার শেষে আগামিকাল তার ওপর ভোটাভুটি হওয়ার কথা রয়েছে।

তবে এর আগেই ভারতের পার্লামেন্টের স্পিকার ওমপ্রকাশ বিড়লার কার্যালয় থেকে একটি প্রতিবাদ ব্রাসেলসে পাঠানো হয়েছে।

সাবেক ভারতীয় কূটনীতিবিদ ও রাষ্ট্রদূত রাজীব ডোগরাও মনে করছেন, এই প্রস্তাবে ইউরোপীয় এমিপিদের দ্বিচারিতাই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

ডোগরা বলছিলেন, ‘আমার মনে হয় ভুল ধারণার বশবর্তী হয়ে ও অসাধু উদ্দেশ্যেই এই প্রস্তাবটি আনা।’

‘এমন তো নয় যে ফ্রান্স বা ইটালি থেকে অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো হয় না, বা ইংল্যান্ড তাদের ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হয় না।’

‘সুতরাং পাকিস্তানের ইশারায় যেভাবে শুধু ভারতকে এখানে কাঠগড়ায় তোলার চেষ্টা হচ্ছে এবং ইউরোপের পার্লামেন্টারিয়ানরাও সেই মিথ্যার জালে জড়াচ্ছেন, তা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’

তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক মুখপাত্র বলেছেন, গরিষ্ঠ-সংখ্যক এমইপি যে প্রস্তাবই আনুন না কেন, সেটা কিন্তু ২৮টি দেশের জোটের সরকারি অবস্থান নয়।

সূত্র : বিবিসি

Tag :

Notice: Trying to access array offset on value of type int in /home/nabajugc/public_html/wp-content/themes/NewsFlash-Pro/template-parts/common/single_two.php on line 177

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Choton Mia

Popular Post

Notice: Undefined index: footer_custom_code in /home/nabajugc/public_html/wp-content/themes/NewsFlash-Pro/footer.php on line 87

ভারতের নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে ইউরোপের এমপিরা

Update Time : 04:44:27 pm, Wednesday, 29 January 2020

ভারতের বিতর্কিত নতুন নাগরিকত্ব আইন প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়ে একটি প্রস্তাবের ওপর ইউরোপীয় পার্লামেন্টে আলোচনা শুরু হয়েছে, পরে তা ভোটাভুটির জন্য পেশ করা হবে।

ওই পার্লামেন্টের ৭৫১ জন সদস্যের মধ্যে দুই তৃতীয়াংশেরও বেশি সদস্য এই প্রস্তাবটিকে সমর্থন করছেন-এবং তাদের আনা প্রস্তাবে ভারতের নতুন আইনটিকে ‘বৈষম্যমূলক’ ও ‘বিভাজন সৃষ্টিকারী’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে।

এই পদক্ষেপ ভারতের জন্য কূটনৈতিকভাবে অস্বস্তিকর হলেও সরকারি কর্মকর্তারা অবশ্য নাগরিকত্ব আইনকে পুরোপুরি ভারতের ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলেই দাবি করছেন।

বহু ইউরোপীয় দেশেও যে অনুরূপ অভিবাসন আইন আছে সেটাও তারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন।

প্রায় ছ’মাস আগে ভারত সরকার যখন কাশ্মীরের বিশেষ স্বীকৃতি বাতিল করেছিল, তখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভারতকে যতটা বিরূপ সমালোচনা সামলাতে হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল শেষ পর্যন্ত তার কিছুই হয়নি।

কিন্তু প্রতিবেশী দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার বিধান এনে ভারতের আনা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন শুধু দেশের ভেতরেই তীব্র প্রতিবাদের মুখে পড়ছে না, ইউরোপীয় পার্লামেন্টেও তা এখন দিল্লিকে চরম বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে।

ভারতের বিরুদ্ধে প্রস্তাবটি যারা এনেছেন, সেই এমইপি-দের অন্যতম স্পেন থেকে নির্বাচিত বামপন্থী রাজনীতিবিদ আইডোইয়া ভিলানুয়েভা।

তিনি বলছিলেন, ‘সারা পৃথিবীতেই আমরা দেখছি মানবাধিকার ও নাগরিক স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে, রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে আইন বানানো হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়া সেন্সরশিপের মুখে পড়ছে, অভিবাসী ও শরাণার্থীদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।’

‘দুর্ভাগ্যবশত বিশ্বের অন্যতম প্রধান গণতন্ত্র ভারতও এর ব্যতিক্রম নয়।’

‘এই পটভূমিতে আমরা মনে করছি অধিকার অর্জনের লড়াই আন্তর্জাতিক রাজনীতির এজেন্ডা থেকে যাতে সরে না যায়, সে জন্যই এখানে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের কিছু দায়িত্ব থেকে যায়।’

ভারতের বিরুদ্ধে যৌথভাবে এই প্রস্তাবটি এনেছে পাঁচটি রাজনৈতিক গোষ্ঠী, যাদের মধ্যে বামপন্থীরা, অতি-বাম এবং পরিবেশবাদী বিভিন্ন দল রয়েছে।

ইউরোপিয়ান্স কনজার্ভেটিভস ও রিফর্মিস্টস বা ইসিআর নামে ৬৬-জন এমইপি-র একটি দল শেষ মুহুর্তে নিজেদের এই প্রস্তাব থেকে সরিয়ে নিয়েছে, ফলে এটিকে এখন সমর্থন করছেন ইইরোপীয় পার্লামেন্টের মোট ৫৬০জন মেম্বার।

চূড়ান্ত প্রস্তাবে কাশ্মীরের উল্লেখ না থাকলেও আইডোইয়া ভিলানুয়েভা বলছিলেন, সার্বিকভাবে ভারতের মানবাধিকার পরিস্থিতিতে এমইপিরা অনেকেই চিন্তিত।

তার কথায়, ‘নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ভারতে যেভাবে উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদের পুনরুত্থান হয়েছে তা সত্যিই উদ্বেগজনক।’

‘কাশ্মীরে যেভাবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে এবং সে দেশের নাগরিকত্ব আইনে ভারতের বহুত্ববাদকে যেভাবে অস্বীকার করা হয়েছে, তাতেই এটা একেবারে স্পষ্ট।’ ‘”ইউরোপীয় ইউনিয়ন যখন ভারতের সঙ্গে স্ট্র্যাটেজিক চুক্তির লক্ষ্যে আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছে, তখনও কিন্তু মানবাধিকারের প্রশ্নে ভারতের এই পিছু হঠা আমরা মেনে নিতে পারি না।’

এই যৌথ প্রস্তাবটি নিয়ে দুদিন ধরে আলোচনার শেষে আগামিকাল তার ওপর ভোটাভুটি হওয়ার কথা রয়েছে।

তবে এর আগেই ভারতের পার্লামেন্টের স্পিকার ওমপ্রকাশ বিড়লার কার্যালয় থেকে একটি প্রতিবাদ ব্রাসেলসে পাঠানো হয়েছে।

সাবেক ভারতীয় কূটনীতিবিদ ও রাষ্ট্রদূত রাজীব ডোগরাও মনে করছেন, এই প্রস্তাবে ইউরোপীয় এমিপিদের দ্বিচারিতাই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

ডোগরা বলছিলেন, ‘আমার মনে হয় ভুল ধারণার বশবর্তী হয়ে ও অসাধু উদ্দেশ্যেই এই প্রস্তাবটি আনা।’

‘এমন তো নয় যে ফ্রান্স বা ইটালি থেকে অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো হয় না, বা ইংল্যান্ড তাদের ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হয় না।’

‘সুতরাং পাকিস্তানের ইশারায় যেভাবে শুধু ভারতকে এখানে কাঠগড়ায় তোলার চেষ্টা হচ্ছে এবং ইউরোপের পার্লামেন্টারিয়ানরাও সেই মিথ্যার জালে জড়াচ্ছেন, তা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’

তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক মুখপাত্র বলেছেন, গরিষ্ঠ-সংখ্যক এমইপি যে প্রস্তাবই আনুন না কেন, সেটা কিন্তু ২৮টি দেশের জোটের সরকারি অবস্থান নয়।

সূত্র : বিবিসি