নিউজ ডেস্ক:
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে বিক্ষোভের আশঙ্কায় উত্তরপ্রদেশ নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মুড়ে ফেলা হয়েছে। নজরদারি চালাতে ব্যবহার করা হচ্ছে ড্রোন। পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে মোতায়েন করা হয়েছে আধাসামরিক বাহিনীও। এছাড়া রাজ্যের ৭৫টি জেলার মধ্যে ২১টি জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি ওপি সিংহ।
দেশটির আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ চলাকালীন বিজনৌর, বুলন্দশহর, মুজফফরনগর, মারাঠা, আগরা, সম্ভল, ফিরোজাবাদ, আলিগড়, গাজিয়াবাদ, রামপুর, সীতাপুর এবং কানপুরে আগেই ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। শুক্রবার জুমার পর সিএএর প্রতিবাদে ফের বিক্ষোভের আশঙ্কায় আরও বেশ কয়েকটি জেলায় এই পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।
রাজ্য পুলিশের ডিজি ওপি সিংহ এদিন বলেন, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে। সংবেদনশীল জায়গাগুলোতে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই ইন্টারনেট পরিষেবা ফের চালু করা হবে।
সোশ্যাল মিডিয়ার উপরও নজরদারি চালাচ্ছে পুলিশ। সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে রাজ্যে সহিংসতা ছড়ানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে দাবি পুলিশের। ইতোমধ্যেই সাড়ে ১৯ হাজার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। গত সপ্তাহেই ১২৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
অন্যদিকে, সরকারি সম্পত্তি ধ্বংসের অভিযোগে ইতোমধ্যেই ৪৯৮ জনকে চিহ্নিত করেছে রাজ্য প্রশাসন। সহিংসতায় মদদ ও জড়িত থাকার অভিযোগে শুধুমাত্র মারাঠাই ৭৯টি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে ৩১৭ জনকে।
রাজ্য পুলিশের ডিজি ওপি সিংহ বলেন, পুলিশ কোনও নিরীহ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেনি। কিন্তু যারা সহিংসতায় মদদ দিচ্ছেন, তাদের কোনও ভাবেই ছাড়া হবে না। সে কারণেই বেশ কয়েকটি সংগঠনের সক্রিয় সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
সিএএ আইনের প্রতিবাদে গত কয়েক দিন ধরে উত্তাল উত্তরপ্রদেশ। ইতোমধ্যেই এই ঘটনায় রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। দফায় দফায় পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। বাস, গাড়িতে ভাঙচুর, আগুন ধরিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে কোথাও লাঠিচার্জ, কোথাও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করতে হয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলিচালনার অভিযোগও উঠেছে। যা নিয়ে রাজনীতি বেশ সরগরম। যদিও গুলি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। তাদের গুলিতে মৃত্যুর ঘটনাও অস্বীকার করেছে পুলিশ। তাদের দাবি, বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট ও প্লাস্টিক পেলেট ব্যবহার করা হয়েছে। তবে বিজনৌরে গুলিতে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনার কথা স্বীকার করেছে পুলিশ।