Dhaka 11:11 am, Saturday, 2 December 2023

  • Notice: Trying to access array offset on value of type int in /home/nabajugc/public_html/wp-content/themes/NewsFlash-Pro/template-parts/page/header_design_two.php on line 68

পশ্চিমবঙ্গের পর জ্বলছে দিল্লি, দফায় দফায় বিক্ষোভ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও

  • Reporter Name
  • Update Time : 05:55:42 am, Monday, 16 December 2019
  • 16 Time View

নিউজ ডেস্ক:

ভারতে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে দাউদাউ করে জ্বলছে একের পর এক রাজ্য। পশ্চিমবঙ্গের পর এবার এবার বিক্ষোভ শুরু হয়েছে রাজধানী দিল্লিতে। গতকাল সকাল থেকে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্ত সহিংসতা হয়। কোথাও টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ, কোথাও আবার রেলস্টেশনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

আনন্দবাজার জানিয়েছে, রোববার বিকালে দক্ষিণ দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া সংলগ্ন নিউ ফ্রেন্ডস কলোনিতে নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়। এ ঘটনার পর দিল্লি পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢুকে ছাত্রছাত্রীদের উপর চড়াও হয়।

জামিয়ার ক্যাম্পাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। এতে বহু ছাত্রছাত্রী সেখানে পড়াশোনা করছিলেন। তাদের অনেকেই পুলিশের লাঠি ও কাঁদানে গ্যাসে আহত হন।

শুধু তাই নয়, শৌচাগারে ঢুকেও শিক্ষার্থীদের পিটিয়েছে পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীদেরও বেধড়ক লাঠিপেটা করা হয়। লাইব্রেরির বাইরের ছাত্রছাত্রীদের মাথার ওপরে হাত তুলে লাইন দিয়ে হাঁটিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বার করে দেয়া হয়।

জামিয়ার বেশ কয়েক জন ছাত্রছাত্রীকে পুলিশ আটক করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

রাজ্যটির রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী বা বিদ্বজ্জনেরা শান্তি-শৃঙ্খলার বার্তা দিলেও আন্দোলনকারীরা তাদের অবস্থানে অনড়।

এদিন সকালে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদীঘি থানার সেখদীঘির ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ দেখানো হয়। ওই জেলারই বহরমপুর থানার বৈরাগীপাড়া মোড়ে বিজেপি পার্টি অফিসে আগুন লাগানোর অভিযোগ উঠেছে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে।

আটক সহপাঠীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে রাতেই কয়েকশ শিক্ষার্থী দিল্লি পুলিশের সদর দফতর ঘেরাও করেন। মাঝরাতের কড়া ঠান্ডা উপেক্ষা করেও চলতে থাকে তাদের বিক্ষোভ। পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে যেতে পারে, সেই আশঙ্কায় জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস নিয়ে তৈরি ছিল পুলিশও।

এ ঘটনায় কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী টুইট করেন, ‘দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ঢুকে শিক্ষার্থীদের পেটানো হচ্ছে। যে সময় সরকারের উচিত এগিয়ে এসে মানুষের কথা শোনা, তখন বিজেপি সরকার উত্তর-পূর্ব, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লিতে সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীদের ওপরে দমনপীড়ন চালিয়ে নিজের নিয়ন্ত্রণ কায়েম করছে। এই সরকার কাপুরুষ। #লজ্জা। শুনে নিন মোদি, তারা ভারতীয় যুবা, আজ নয় কাল, এদের কথা শুনতেই হবে।’

রোববার রাত থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, হায়দরাবাদের মৌলানা আজাদ উর্দু বিশ্ববিদ্যালয়, বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়, আইআইটি বম্বেসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। আজ সোমবার দিল্লি জুড়ে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ছাত্র সংগঠনগুলোর একাংশ।

শুক্রবারও জামিয়া মিলিয়ার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-মিছিল করেছিলেন। তখনও পুলিশ লাঠি এবং কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। বহু ছাত্র-ছাত্রী আহত হন।

কিন্তু রোববার বিকালে নিউ ফ্রেন্ডস কলোনি এলাকায় বিক্ষোভে তারা অংশ নেননি বলে জানিয়েছেন জামিয়ার শিক্ষক-পড়ুয়ারা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিবৃতি, ‘ নিউ ফ্রেন্ডস কলোনির বিক্ষোভে জামিয়ার শিক্ষার্থীরা ছিলেন না। আশপাশের মানুষ বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।’

জামিয়ার চিফ প্রোক্টর ওয়াসিম আহমেদ খান বলেন, ‘পুলিশ গায়ের জোরে, বিনা অনুমতিতে ক্যাম্পাসে ঢুকেছে। আমাদের কর্মী, শিক্ষার্থীদের পেটানো হয়েছে। জোর করে ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।’

জামিয়ার উপাচার্য নাজমা আখতার পুলিশের কাজকে নিন্দনীয় বলেছেন।

রোববার দুপুর থেকেই দক্ষিণ দিল্লির জামিয়া সংলগ্ন এলাকায় বিক্ষোভ শুরু হয়। নিউ ফ্রেন্ডস কলোনি, মাতা মন্দির রোড, মথুরা রোডে পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাধে বিক্ষোভকারীদের। বেপরোয়া লাঠি চালায় পুলিশ। বেশ কিছু বাইক ও দিল্লি পরিবহণ নিগমের তিনটি বাস জ্বালিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা।

তবে অনেকের অভিযোগ, পুলিশ নিজেই বাসে আগুন ধরিয়েছে। আগুন নেভাতে গিয়ে আক্রান্ত হন দমকলকর্মীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই চত্বরে মেট্রো রেলের একাধিক স্টেশন বন্ধ করে দেয়া হয়।

শনিবারের মতো গতকালও গুয়াহাটি, ডিব্রুগড়সহ একাধিক জায়গায় কারফিউ শিথিল করা হয়েছে। অল্প সংখ্যায় হলেও রাস্তায় গাড়ি চলাচল শুরু হয়েছে। তবে অশান্তি ও গুজবের আশঙ্কায় ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গত সপ্তাহে দেশটির সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হলে তাতে রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করার পর থেকে সবচেয়ে বেশি উত্তাল হয়ে ওঠে উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম রাজ্য। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাধে পুলিশের। সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ২৭ জন আহত হয়েছেন।

Tag :

Notice: Trying to access array offset on value of type int in /home/nabajugc/public_html/wp-content/themes/NewsFlash-Pro/template-parts/common/single_two.php on line 177

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Choton Mia

Popular Post

Notice: Undefined index: footer_custom_code in /home/nabajugc/public_html/wp-content/themes/NewsFlash-Pro/footer.php on line 87

পশ্চিমবঙ্গের পর জ্বলছে দিল্লি, দফায় দফায় বিক্ষোভ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও

Update Time : 05:55:42 am, Monday, 16 December 2019

নিউজ ডেস্ক:

ভারতে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে দাউদাউ করে জ্বলছে একের পর এক রাজ্য। পশ্চিমবঙ্গের পর এবার এবার বিক্ষোভ শুরু হয়েছে রাজধানী দিল্লিতে। গতকাল সকাল থেকে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্ত সহিংসতা হয়। কোথাও টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ, কোথাও আবার রেলস্টেশনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

আনন্দবাজার জানিয়েছে, রোববার বিকালে দক্ষিণ দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া সংলগ্ন নিউ ফ্রেন্ডস কলোনিতে নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়। এ ঘটনার পর দিল্লি পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢুকে ছাত্রছাত্রীদের উপর চড়াও হয়।

জামিয়ার ক্যাম্পাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। এতে বহু ছাত্রছাত্রী সেখানে পড়াশোনা করছিলেন। তাদের অনেকেই পুলিশের লাঠি ও কাঁদানে গ্যাসে আহত হন।

শুধু তাই নয়, শৌচাগারে ঢুকেও শিক্ষার্থীদের পিটিয়েছে পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীদেরও বেধড়ক লাঠিপেটা করা হয়। লাইব্রেরির বাইরের ছাত্রছাত্রীদের মাথার ওপরে হাত তুলে লাইন দিয়ে হাঁটিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বার করে দেয়া হয়।

জামিয়ার বেশ কয়েক জন ছাত্রছাত্রীকে পুলিশ আটক করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

রাজ্যটির রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী বা বিদ্বজ্জনেরা শান্তি-শৃঙ্খলার বার্তা দিলেও আন্দোলনকারীরা তাদের অবস্থানে অনড়।

এদিন সকালে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদীঘি থানার সেখদীঘির ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ দেখানো হয়। ওই জেলারই বহরমপুর থানার বৈরাগীপাড়া মোড়ে বিজেপি পার্টি অফিসে আগুন লাগানোর অভিযোগ উঠেছে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে।

আটক সহপাঠীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে রাতেই কয়েকশ শিক্ষার্থী দিল্লি পুলিশের সদর দফতর ঘেরাও করেন। মাঝরাতের কড়া ঠান্ডা উপেক্ষা করেও চলতে থাকে তাদের বিক্ষোভ। পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে যেতে পারে, সেই আশঙ্কায় জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস নিয়ে তৈরি ছিল পুলিশও।

এ ঘটনায় কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী টুইট করেন, ‘দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ঢুকে শিক্ষার্থীদের পেটানো হচ্ছে। যে সময় সরকারের উচিত এগিয়ে এসে মানুষের কথা শোনা, তখন বিজেপি সরকার উত্তর-পূর্ব, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লিতে সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীদের ওপরে দমনপীড়ন চালিয়ে নিজের নিয়ন্ত্রণ কায়েম করছে। এই সরকার কাপুরুষ। #লজ্জা। শুনে নিন মোদি, তারা ভারতীয় যুবা, আজ নয় কাল, এদের কথা শুনতেই হবে।’

রোববার রাত থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, হায়দরাবাদের মৌলানা আজাদ উর্দু বিশ্ববিদ্যালয়, বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়, আইআইটি বম্বেসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। আজ সোমবার দিল্লি জুড়ে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ছাত্র সংগঠনগুলোর একাংশ।

শুক্রবারও জামিয়া মিলিয়ার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-মিছিল করেছিলেন। তখনও পুলিশ লাঠি এবং কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। বহু ছাত্র-ছাত্রী আহত হন।

কিন্তু রোববার বিকালে নিউ ফ্রেন্ডস কলোনি এলাকায় বিক্ষোভে তারা অংশ নেননি বলে জানিয়েছেন জামিয়ার শিক্ষক-পড়ুয়ারা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিবৃতি, ‘ নিউ ফ্রেন্ডস কলোনির বিক্ষোভে জামিয়ার শিক্ষার্থীরা ছিলেন না। আশপাশের মানুষ বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।’

জামিয়ার চিফ প্রোক্টর ওয়াসিম আহমেদ খান বলেন, ‘পুলিশ গায়ের জোরে, বিনা অনুমতিতে ক্যাম্পাসে ঢুকেছে। আমাদের কর্মী, শিক্ষার্থীদের পেটানো হয়েছে। জোর করে ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।’

জামিয়ার উপাচার্য নাজমা আখতার পুলিশের কাজকে নিন্দনীয় বলেছেন।

রোববার দুপুর থেকেই দক্ষিণ দিল্লির জামিয়া সংলগ্ন এলাকায় বিক্ষোভ শুরু হয়। নিউ ফ্রেন্ডস কলোনি, মাতা মন্দির রোড, মথুরা রোডে পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাধে বিক্ষোভকারীদের। বেপরোয়া লাঠি চালায় পুলিশ। বেশ কিছু বাইক ও দিল্লি পরিবহণ নিগমের তিনটি বাস জ্বালিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা।

তবে অনেকের অভিযোগ, পুলিশ নিজেই বাসে আগুন ধরিয়েছে। আগুন নেভাতে গিয়ে আক্রান্ত হন দমকলকর্মীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই চত্বরে মেট্রো রেলের একাধিক স্টেশন বন্ধ করে দেয়া হয়।

শনিবারের মতো গতকালও গুয়াহাটি, ডিব্রুগড়সহ একাধিক জায়গায় কারফিউ শিথিল করা হয়েছে। অল্প সংখ্যায় হলেও রাস্তায় গাড়ি চলাচল শুরু হয়েছে। তবে অশান্তি ও গুজবের আশঙ্কায় ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গত সপ্তাহে দেশটির সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হলে তাতে রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করার পর থেকে সবচেয়ে বেশি উত্তাল হয়ে ওঠে উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম রাজ্য। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাধে পুলিশের। সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ২৭ জন আহত হয়েছেন।