
গগনযানে মহাকাশে মানুষ নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে। অন্যদিকে সমুদ্র-জয় করতেও যাচ্ছে ভারত। অতল সাগরের গভীরে নামবে ভারতের সমুদ্রযান মৎস্য-৬০০০। এটি সাবমার্সিবল সাবমেরিন। গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধান ও গবেষণার নিরিখেই এই অভিযান। আমেরিকা, চিন-সহ ৬টি দেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলবে অভিযান। সমুদ্রের গভীরে নেমে গবেষণা করবেন বিজ্ঞানীরা।
২০২৬ সালে ভারতের ‘সমুদ্রায়ন মিশন’-এর ঘোষণা করেছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি। যেই সমুদ্রযানে চেপে প্রথমবার এ দেশের মানুষ নামবে অতল মহাসাগরের গভীরে। ইতিমধ্যেই ভারতীয় সেই সাবমেরিনের ট্রায়াল রানের প্রস্তুতি শুরু করে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছে, এই প্রথম বিজ্ঞানীদের নিয়ে সমুদ্র যান যাবে। সমুদ্রায়নের সূচনা হয়েছে চেন্নাইতে। আমেরিকা, রাশিয়া, জাপান, ফ্রান্স চিনের সঙ্গেই এলিট ক্লাবে যোগ দিয়েছে ভারতও।
মহাসাগরের ৬ হাজার মিটার নীচে পাড়ি দেবে ভারতের সাবমেরিন। প্রথম পর্যায়ে তিনজন বিজ্ঞানী যাবেন। ২০২৪ সাল থেকে শুরু হবে ট্রায়াল রান। সাগরের জলরাশির বিপুল চাপ যাতে সইতে পারে সেই ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে সাবমেরিনে। টাইটানের করুণ পরিণতি দেখে তাই আরও উন্নতি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওশান টেকনোলজির ডিরেক্টর ড. জিএ রামদাস বলেছেন, “প্রাথমিকভাবে ট্রায়ালের প্রথম পর্বে ৫০০ মিটার নীচ পর্যন্ত নামানো হবে সমুদ্রযানটিকে। জলের চাপ কতটা, সাবমেরিন তা নিতে পারছে কিনা, আপৎকালীন ব্যবস্থা কতটা দ্রুত কাজ করবে, সবকিছু পরখ করে ফের ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস নাগাদ এই ট্রায়াল শুরু হবে। ২০২৫ সালের শেষদিকে ৬ হাজার মিটার পর্যন্ত ট্রায়াল হবে। সব ঠিক থাকলে তবে বিজ্ঞানীদের নিয়ে সমুদ্রের গভীরে যাবে মৎস্য-৬০০০।”
এক হাজার থেকে সাড়ে ৫ হাজার মিটার গভীরতায় গিয়েও এই সমুদ্রযান কাজ করতে পারবে। বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার জন্য যে কোনও রকম ডিভাইস, সেন্সর নিয়ে এই জলযান গভীর সমুদ্রে চলে যেতে পারবে। মৎস্য-৬০০০ সমুদ্রযানের খোলস এতটাই শক্তপোক্ত যে সাগরের বিপুল জলরাশির চাপ সহ্য করতে পারবে। ভেতরে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের ব্যবস্থাও থাকবে। আগামী ৫ বছরের সমুদ্র গবেষণার জন্য ইতিমধ্যেই ৪,০৭৭ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ করেছে সরকার।
সমুদ্রের অতলে নিকেল, ম্যাঙ্গানিজ, কোবাল্ট সহ একাধিক খনিজ পদার্থের খোঁজ চালাতেই এই সমুদ্র অভিযান বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাছাড়া সমুদ্রের অতলে অনেক অজানা প্রজাতির প্রাণীর খোঁজও চলবে এই অভিযানে। সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্র নিয়ে গবেষণা চালাবেন বিজ্ঞানীরা। মৎস্য-৬০০০ সাবমেরিনটিকে নরওয়ের সার্টিফিকেশন এজেন্সি ইতিমধ্যেই ছাড়পত্র দিয়েছে। ১০ হাজার মিটার সমুদ্র তলদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে ছাড়পত্র দিয়েছে নরওয়ের এই সংস্থা। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক