চাঁদের খুব কাছে পৌঁছে গেছে ভারতের চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার বিক্রম। এখন এটি চাঁদের রহস্যময় দক্ষিণ মেরুতে নিরাপদে অবতরণের জায়গা খুঁজছে বলে জানিয়েছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা-ইসরো। এরইমধ্যে ইসরো থেকে চাঁদের দূরবর্তী অংশের বেশ কিছু ছবি প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানায় বিবিসি। ছবিগুলো তুলেছে ল্যান্ডার বিক্রম। যেটি গত বৃহস্পতিবার চন্দ্রাভিযানের শেষ ধাপের যাত্রা শুরু করে। রোববার সকালে দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত ডি-বুস্টিং অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন হয় বলেও খবর দিয়েছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা।
ল্যান্ডার বিক্রমের আগামী ২৩ অগাস্ট বুধবার নাগাদ চাঁদের মাটিতে অবতরণ করার কথা। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই পর্বের দিকেই এখন গভীর মনোযোগ ইসরোর বিজ্ঞানীদের। বিক্রমের পাঠানো চাঁদের সর্বশেষ ছবি প্রকাশের একদিন আগে রাশিয়ার চন্দ্রযান লুনা-২৫ চাঁদের বুকে আছড়ে পড়ে ধ্বংস হয়ে যায়।
গত জুলাই মাসে কাছাকাছি সময়ে দুই দেশ চন্দ্রাভিযান শুরু করায় এবং দুই দেশই এবার চাঁদের অজানা দক্ষিণ মেরুকে তাদের অভিযানের লক্ষ্যবস্তু করায় কে কার আগে পৌঁছাতে পারে এটা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরণের উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল। যদিও দুই দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থাই বলেছে, তাদের মধ্যে কোনো ধরণের প্রতিযোগিতা নেই।
রোববার রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমস থেকে তাদের লুনা-২৫ ধ্বংস হয়ে যাওয়ার খবর দেওয়া হয়। বলা হয়, আগেরদিন শনিবার থেকে লুনা-২৫ এর সঙ্গে তাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ধ্বংস হওয়ার আগে সেটি চাঁদের কক্ষপথে অনিয়ন্ত্রিতভাবে ঘুরপাক খাচ্ছিল।
সাবেক সভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে রাশিয়া হওয়ার পর এটিই ছিল দেশটির প্রথম চন্দ্রাভিযান। স্বাভাবিকভাবেই প্রায় অর্ধ শতাব্দী পর তাদের এই চন্দ্রাভিযান দেশটির জন্য দারুণ মর্যাদার ছিল। লনার-২৫ ধ্বংস হওয়ার মধ্য দিয়ে যে অভিযান ব্যর্থ হলো। ১৯ থেকে ২১ অগাস্টের মধ্যে রুশ নভোযানটির চাঁদের বুকে অবতরণের কথা ছিল। এদিকে, সোমবার সকালে ইসরোর পক্ষ থেকে বলা হয়, চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার আগামী বুধবার ভারতীয় সময় বিকাল ০৬টা ৪ মিনিটে (জিএমটি ১২:৩৪) চাঁদের ভূমি স্পর্শ করবে।
বিক্রম যদি ঠিকঠাক অবতরণ করতে পারে তবে ভারতই হবে চাঁদের রহস্যঘেরা দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছানো প্রথম এবং চাঁদের বুকে সফলভাবে নামতে পারা চতুর্থ দেশ। এর আগে কেবল যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীনের মহাকাশযান নিরাপদে চাঁদের মাটিতে নামতে পেরেছে।
চাঁদের দক্ষিণ মেরু নিয়ে মানুষের গবেষণা খুব বেশি এগোয়নি। ছায়ায় ঢাকা ওই অঞ্চল চাঁদের উত্তর মেরুর চেয়ে অনেকটা বড়। ধারণা করা হয়, সবসময় অন্ধকারে থাকা ওই অঞ্চলে বরফ বা পানির অস্তিত্ব থাকলেও থাকতে পারে। এই বরফ বা পানি খোঁজাই ভারতের এবারের চন্দ্রাভিযানের মূললক্ষ্য। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক