প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তিন দিনের সরকারি সফরে মঙ্গলবার দক্ষিণ আফ্রিকায় পৌঁছেছেন৷ সেখানে তিনি পঞ্চদশ ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন৷ এছাড়াও বেশ কয়েকজন রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও করবেন। সেখান থেকে চলে যাবেন গ্রিসে৷
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার আমন্ত্রণে ২২ থেকে ২৪ অগস্ট আফ্রিকার এই দেশ সফর করছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। এই সফরের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানান, ব্রিকস বিভিন্ন ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী সহযোগিতামূলক অ্যাজেন্ডা অনুসরণ করছে৷ প্রধানমন্ত্রী এক্স-এ (আগে যা টুইটার নামে পরিচিত ছিল) পোস্ট করেছেন যে তিনি ব্রিকস-আফ্রিকা আউটরিচ এবং ব্রিকস প্লাস ডায়ালগ ইভেন্টেও অংশগ্রহণ করবেন।প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “আমরা মূল্যায়ন করি যে ব্রিকস উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা এবং বহুপাক্ষিক ব্যবস্থার সংস্কার-সহ পুরো গ্লোবাল সাউথের উদ্বেগের বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করার প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে৷ এই শীর্ষ সম্মেলন ব্রিকসের জন্য ভবিষ্যতে সহযোগিতার ক্ষেত্র চিহ্নিত করতে এবং প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন পর্যালোচনা করার জন্য একটি প্রয়োজনীয় সুযোগ তৈরি করবে।’’
ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চিন ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে গঠিত ব্রিকস৷ এই রাষ্ট্রগোষ্ঠী নেতারা ২০১৯ সালের পর প্রথমবার শীর্ষ সম্মেলনে একে অপরের মুখোমুখি হচ্ছেন৷ এবার সম্মেলন আয়োজনের দায়িত্বে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা৷ তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবার ব্রিকস সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে৷ কারণ, দক্ষিণ আফ্রিকায় অবতরণ করলে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বা আইসিসি-র পরোয়ানার প্রেক্ষিতে তিনি গ্রেফতার হতে পারেন৷ উল্লেখ্য, এই গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির জনসংখ্যা বিশ্ব জনসংখ্যার ৪১ শতাংশ৷ এদের জিডিপি সারা বিশ্বের জিডিপি-র ২৪ শতাংশ এবং বিশ্বের বাণিজ্যের ১৬ শতাংশের অংশীদারিত্ব রয়েছে এই দেশগুলির৷
আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে ২০ টিরও বেশি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এই সম্মেলনে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ব্রিকসের সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন, যা শীর্ষ সম্মেলনের আলোচ্যসূচির অন্যতম বিষয়। মোদী তাঁর বিবৃতিতে জানিয়েছেন, তিনি এই সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রিত অতিথি দেশের সঙ্গে আলাপচারিতার জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন।
এই সম্মেলন শেষে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোটাকিসের আমন্ত্রণে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ২৫ অগস্ট ইউরোপের ওই দেশে যাবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী৷ গ্রিসে এটাই তাঁর প্রথম সফর৷ শুধু তাই নয়, ৪০ বছর পর ভারতের কোনও প্রধানমন্ত্রী গ্রিস সফর করতে চলেছেন৷ তাই এই সফরকে গৌরবের বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী৷
তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের দুই সভ্যতার মধ্যে যোগাযোগ দুই সহস্রাব্দেরও বেশি সময় ধরে বিস্তৃত৷ আধুনিক সময়ে গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং বহুত্ববাদের মূল্যবোধ ভাগাভাগি করে নেওয়ার মাধ্যমে আমাদের সম্পর্ক শক্তিশালী হয়েছে। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা ও সংস্কৃতি, জনগণের মধ্যে যোগাযোগের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা আমাদের আরও কাছাকাছি নিয়ে আসছে।’’ তাই এই সফর দুই দেশের সম্পর্কে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে বলেও তিনি মনে করেন৷ খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক