ভারত এখন অনেক পালটে গিয়েছে। যদি অন্য দেশ থেকে ভারতের মাটিতে সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়, তাহলে পালটা জবাব দিতে তৈরি রয়েছে দেশ। উগান্ডার একটি সমাবেশে এমনই বার্তা দিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। পাকিস্তান ও চিনকে কড়া বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, দেশের জাতীয় সুরক্ষায় ব্যাঘাত ঘটালে কড়া জবাব দেবে ভারত। বিদেশমন্ত্রীর বক্তৃতায় উঠে আসে উরি ও বালাকোটের হামলার প্রসঙ্গও।
উগান্ডার প্রবাসী ভারতীয়দের একটি সম্মেলনে বক্তৃতা দিতে গিয়ে জয়শংকর বলেন, “এখন ভারতকে সম্পূর্ণ অন্যভাবে দেখে সারা বিশ্ব। উরি বা বালাকোটের মতো ঘটনায় যদি দেশের সুরক্ষা বিঘ্নিত হয় তাহলে ভারত তার পালটা কড়া জবাব দেবে। দীর্ঘদিন ধরে ভারতের মাটিতে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালিয়েছে বিদেশি শক্তিগুলি। এতদিন সেগুলো সহ্য করলেও এবার তার জবাব দেবে ভারত।” পাকিস্তানের নাম না করলেও উরি ও বালাকোট প্রসঙ্গ তুলে ইসলামাবাদকেই বার্তা দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী।
তবে এই বক্তৃতায় চিনকে সরাসরি একহাত নিয়েছেন জয়শংকর। ভারত সীমান্তে সেনা সক্রিয়তা বাড়িয়েছে চিন। সেই পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করে বিদেশমন্ত্রী বলেন, “গত তিন বছর ধরে সমস্ত শান্তিচুক্তি লঙ্ঘন করেছে চিন। ক্রমাগত সেনা সমাবেশ চালিয়ে গিয়েছে তারা। তবে লাল ফৌজের এই কাজে মোটেও ভীত নয় ভারতীয় সেনা। এখন সেনার হাতে দরকারি অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে, যেকোনও আক্রমণের পালটা দিতে তৈরি তারা।”
বিদেশনীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে এখন স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে ভারত, বক্তৃতায় সেই কথাই তুলে ধরেন জয়শংকর। তিনি বলেন, “আমরা কাদের থেকে তেল কিনব, সেটা অন্য কোনও দেশ ঠিক করে দিতে পারে না। নাগরিকদের জন্য যেটা সবচেয়ে ভাল, ভারত এখন সেটাই করে। অন্য দেশের চাপের কাছে নতি স্বীকার করে না ভারত।” প্রসঙ্গত, কম দামে রুশ তেল কেনার তীব্র বিরোধিতা করেছিল আমেরিকা। তবে সেই চাপ অস্বীকার করে তেল কেনা চালিয়ে গিয়েছে ভারত।
এছাড়া, যুদ্ধের জেরে ইউক্রেন থেকে গম ও ভোজ্য তেল আমদানি বন্ধ হওয়ায় তৈরি হয়েছে সঙ্কট। হন্যে হয়ে বিকল্প খুঁজছে ভারত। আজ উগান্ডায় এ কথাও বলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তাঁর বক্তব্য, ভারতের উন্নয়নে উপকৃত হবে উগান্ডাও। সে দেশের অনাবাসী ভারতীয় বাণিজ্যকর্তাদের সঙ্গে আজ বৈঠক করেন বিদেশমন্ত্রী। ভারতের সঙ্গে আফ্রিকার সম্পর্কের উন্নতির জন্য সেখানে বসবাসকারী ভারতীয়দের সক্রিয় হতে আহ্বান জানান তিনি।
বিদেশমন্ত্রীর কথায়, “ভারতের উন্নয়ন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় উগান্ডার সামনে নতুন সুযোগ তৈরি করবে। ভারতের অভিজ্ঞতাও উগান্ডার উন্নয়নের যাত্রাকে সহায়তা করবে।” তিনি বলেন, ‘‘ইউক্রেনের থেকে আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরেই গমের মূল্যবৃদ্ধি বড় সঙ্কট তৈরি করল। গমের সঙ্কট দেখা দিল।”
অশোধিত তেলের পাশাপাশি ভোজ্য তেলের সঙ্কটের দিকটিকেও তুলে ধরেছেন জয়শঙ্কর। কথায়, “ইউক্রেন থেকে বিপুল পরিমাণ সূর্যমুখী তেল আমদানি করি আমরা। এখন বিকল্পের সন্ধান করতে গিয়ে ভারতের ব্যবসায়ীদের উপর বিপুল চাপ তৈরি হয়েছে।’’ খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক