মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইতে সমাপ্তি ঘটলো ২২ দিনের বেশি সময় ধরে পরিচালনা করা বিশ্বের সবচেয়ে বড় নৌ মহড়া রিমপ্যাক-২০২২ এর। এতে অংশ নিয়েছিলো ভারত সহ বিভিন্ন প্রান্তের ২৮ টি দেশ। এই ২৮ দেশের মধ্যে কোয়াডের ০৪ সদস্য ছাড়াও অংশ নিয়েছিলো দক্ষিণ চীন সাগরের পার্শ্ববর্তী ০৫ দেশ।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার, মহড়া শেষ হওয়ার পর পার্ল হারবারে যাত্রা করে ভারতের হয়ে অংশ নেয়া জাহাজ আইএনএস সাতপুরা। এর আগে প্রশান্ত মহাসাগরে বহু-জাতীয় নৌবহরের সাথে জাহাজটি অ্যান্টি-সাবমেরিন, অ্যান্টি-শিপ এবং অ্যান্টি-এয়ার ওয়ারফেয়ার অনুশীলনে অংশ নিয়ে তার পেশাদার দক্ষতা প্রদর্শন করে।
এর আগে মার্কিন প্রশাসনের তরফে জানা গিয়েছিলো, যুক্তরাষ্ট্রের হনলুলু এবং সান ডিয়াগোতে হওয়া এই বিশাল নৌ মহড়ায় দেখা যাবে কোয়াডের চার দেশ- যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারতকে। এছাড়া দক্ষিণ চীন সাগরের সীমান্তবর্তী পাঁচ দেশ- ফিলিপিন্স, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ব্রুনাই ও সিঙ্গাপুরকে। বাকি দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে কানাডা, চিলি, কলম্বিয়া, ডেনমার্ক, ইকুয়েডর, ফ্রান্স, জার্মানি, ইসরাইল, মেক্সিকো, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, পেরু, দক্ষিণ কোরিয়া, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, টোঙ্গা এবং যুক্তরাজ্য। বাস্তবেও তাই হতে দেখা গিয়েছে।
অংশগ্রহণকারী দেশগুলো থেকে ২৫ হাজার সেনা অংশ নেয় এই মহড়ায়। পাশাপাশি মহড়ায় দেখা মিলেছে ৩৮টি যুদ্ধ জাহাজ ও ১৭০টিরও বেশি বিমান, থাকবে চারটি সাবমেরিনের। এছাড়া, নয় দেশের স্থলবাহিনীও অংশ নেয় বিশ্বের সর্ববৃহৎ মহড়ায়। আগামী ২৯ জুন থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত চলবে এই মহড়া। দুই বছর পরপর অনুষ্ঠিত এই মহড়া আয়োজন করা নিয়ে সম্প্রতি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নেভির থার্ড ফ্লিট।
এই মহড়ায় সর্বাত্মক যুদ্ধ প্রস্তুতির অনুশীলন করবে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো। ভারী বন্দুক চালানো থেকে শুরু করে ক্ষেপনাস্ত্রের ব্যবহার। এছাড়া এন্টি-সাবমেরিন, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, কাউন্টার পাইরেসি অপারেশন, মাইন নিষ্ক্রিয় অপারেশন, বিষ্ফোরক নিষ্ক্রিয়করণ, ডাইবিং এবং উদ্ধার অভিযান প্রক্রিয়াও অন্তভূর্ক্ত হয়েছে এই মহড়ায়।
অংশ নেয়া দেশগুলো এই মহড়ার মধ্য দিয়ে তাদের সমন্বিত শক্তির বার্তা দেবে বিশ্বকে। যার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে অবাধ এবং উন্মুক্ত ইন্দো-প্রশান্ত অঞ্চল রক্ষা করা। এই মহড়া অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি বিপদে বা আক্রান্ত হলে পাল্টা আঘাত হানার ক্ষেত্রে দারুণ ভূমিকা রাখবে।
এছাড়া সমুদ্রপথ নিরাপদ রাখার পাশাপাশি আক্রমণকারীকে এই অঞ্চলে আগ্রাসন চালানো থেকে বিরত রাখবে এবং কেউ যদি এই অঞ্চলসমূহে আগ্রসন চালায়ও তাকে পরাজিত করবে এই সমন্বিত শক্তি। এই মহড়া আয়োজনের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাপী তুলে ধরতে চাইছে তাদের নৌ শক্তির সামর্থ্যও। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক