
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে অর্থ সহায়তা প্রদানে একমত হয়েছেন প্রায় ২০০ দেশের প্রতিনিধিরা। মিসরের শারম আল শাইখে জাতিসংঘের ২৭তম জলবায়ু সম্মেলনে দেশগুলো ক্ষতিপূরণ তহবিলের বিষয়ে সম্মত হয়।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে জানা যায়, সম্মেলনে উপস্থিত সংশ্লিষ্টরা ঝড় ও বন্যার মতো জলবায়ুবিষয়ক বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে খরচ বহন করতে সহায়তার জন্য একটি ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ তহবিল গঠনে সম্মতি দেন। স্থানীয় সময় রোববার (২০ নভেম্বর) কপ ২৭ সম্মেলনের প্রেসিডেন্ট ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ চুক্তির একটি খসড়া রূপরেখা প্রকাশ করেন।
‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ তহবিলের অর্থ জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে দরিদ্র দেশগুলোর ভৌত ও সামাজিক অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলা এবং উদ্ধারকাজ পরিচালনা ও পুনর্গঠনে ব্যয় করা হবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার ক্ষতিপূরণের জন্য অর্থ সহায়তা দিতে ধনী দেশগুলোকে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে অনুরোধ করে আসছে উন্নয়নশীল দেশগুলো। কিন্তু ধনী দেশগুলো সীমিত কিছু নগদ অর্থ দিয়েই দায় এড়াতে চাইছে। যদিও গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানো ও বৈরী আবহাওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা গড়ে তুলতে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি ছিল তাঁদের।
এর আগে ধনী দেশগুলো ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ তহবিলের বিপক্ষে যুক্তি দিয়ে আসছিল। তাদের যুক্তি ছিল, এটি অনেক সময়সাপেক্ষ। আদৌ এর প্রয়োজন আছে কি না এবং এটি কীভাবে বাস্তবায়িত হবে তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।
এদিকে বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, চুক্তিটির খসড়ায় কার্বন নিঃসরণ কমানোর বিষয়ে দিকনির্দেশনার অভাব রয়েছে। স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে কপ-২৬ সম্মেলনে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল যে, কার্বন নিঃসরণ হ্রাসের পরিকল্পনা প্রতিবছর নবায়ন করতে হবে। কিন্তু কপ-২৭ সম্মেলনে সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষার মতো কোনো বিষয় নেই। এমনকি জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতেও কোনো ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করা হয়নি। এ ছাড়া নতুন খসড়া চুক্তিতে কোন দেশ কীভাবে অর্থায়ন করবে, সে সম্পর্কে কোনো সুনির্দিষ্ট কিছু বলা হয়নি।
৬ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এবারের জলবায়ু সম্মেলন ১৮ নভেম্বর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও অতিরিক্ত একদিনে গড়ায়। ১৯ নভেম্বর বাড়তি দিনেই তহবিল প্রদানে ঐকমত্যে পৌঁছাতে সক্ষম হন সম্মেলনে অংশ নেওয়া বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক